
কলকাতা: অসিত রায়চৌধুরী, পেশায় খবরের কাগজ বিক্রেতা। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বিধাননগর অঞ্চলে সাইকেলে ঘুরে পেপার বিক্রি করেন। যাতায়াতের পথেই রাস্তার ধারে ওইভাবে চাকরিহারা শিক্ষকদের বসে থাকতে দেখেন তিনি। রোজ… এ কয়েকদিনে রোজ তাঁদের ঝড়-রোদ-বৃষ্টিতে ওইভাবেই রাস্তার ধারে নাওয়া খাওয়া ভুলে পড়ে থাকতে দেখেছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে এলেন সেই পেপার বিক্রেতা। নিজের এক দিনের রোজগার যোগ্য শিক্ষকদের হাতে তুলে দিতে এলেন তিনি।
অসিত রায় চৌধুরী বলেন, ” সমাজ গড়ার কারিগররাই আজ ফুটপাতে বসে রয়েছেন তাঁদের চাকরি খুইয়ে। আমি চাই, আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে অন্ধকারে ডুবে না যায়। আমার যা সামর্থ, আমার একদিনের আয় আমি ওনাদের হাতে তুলে দিতে চাই। কিন্তু ওনারা নিতে চাইছেন না। ওনারা এইভাবে রাস্তায় রোদ বৃষ্টির মধ্যে বসে রয়েছেন, তা কোনওভাবেই দেখতে পারছি না। ওনাদের তো ক্লাসরুমে থাকার কথা, আমাদের সন্তানদের মানুষ করার কথা। কিন্তু ওনারা আজ রাস্তায়।” মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর আবেদন, “মুখ্যমন্ত্রী তো সবার জন্য অনেক করেন, কিন্তু এই যোগ্য শিক্ষকদের জন্য কেন এগিয়ে আসছেন না। যোগ্য শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে, নাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নষ্ট হয়ে যাবে।”
বিকাশভবনের সামনে ফুটপাতে চাকরিহারা শিক্ষকদের সঙ্গে তিনি বসে থাকলেন বেশ কয়েক ঘণ্টা। তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন। চাকিরহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল বললেন, “আজ এটা আমাদের কাছে সত্যিই আনন্দের দিন। নিজে কতটুকুই বা রোজগার করেন, দিন আনা দিন খাওয়া একটা মানুষ আজ আমাদের কষ্টের দিনে, আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এইভাবে সকলেই আমাদের পাশে দাঁড়াক। আমাদের সঙ্গে ন্যায় হোক, এটাই চাইব।”