
কলকাতা: গুরুত্ব কমছে কলকাতার? যে ব্যাঙ্কের যাত্রা শুরু হয়েছিল এই শহরে। সেই ব্যাঙ্কই আজ গুরুত্বের বিচারে কলকাতাকে ঠেলে বেছে নিচ্ছে বাণিজ্য শহর মুম্বইকে। ১৮০৬ সাল জুন মাস। কলকাতার বুকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত ধরে শুরু হল ব্যাঙ্ক অব ক্যালকাটা। যার পরবর্তীতে নাম বদলে হল ব্যাঙ্ক অব বেঙ্গল ও অবশেষে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।
এককালে যে কলকাতা ছিল SBI-এর কাছে প্রাণকেন্দ্র। সেই কলকাতা থেকেই এবার সরে যাওয়ার কথা ভাবছে এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে আর কয়েক মুহূর্তের পালা। তারপর সংস্থার বেশ কয়েকটি দফতরকে ‘সিটি অব জয়’ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ‘সিটি অব মানি’-তে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্থার আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের বেশ কয়েকটি দফতরকে কলকাতা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাণিজ্য শহর মুম্বইয়ে। দীর্ঘদিন ধরেই এই স্থানান্তর প্রসঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক চলছিল SBI-এর অন্দরে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া বাকি। তবে এবার হয়তো পাকাপাকি ভাবে কলকাতা ছাড়ার পদক্ষেপ নেবে তারা।
স্টেট ব্যাঙ্কের যুক্তি, যাবতীয় কাজকে কেন্দ্রীভূত করার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়ার পথে হাঁটছে সংস্থা। সূত্রের খবর, চলতি বছরের মার্চ মাসেই এই নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ছিল তাদের। মার্চ পেরিয়ে জুন., ঘোষণা না হলেও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথেই দেশের অন্যতম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক।
উল্লেখ্য, স্টেট ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বহুবার সুর চড়িয়েছে ‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’ নাগরিক মঞ্চ। এমনকি, SBI কর্তৃপক্ষকে তাদের তরফে চিঠি পাঠিয়ে স্থানান্তর রুখে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল তারা। পাল্টা SBI কর্তৃপক্ষ তাদের বলে, ‘আমরা মনে করি, দফতর স্থানান্তর কোনও সংস্থার জন্য খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার। যে সিদ্ধান্ত তার বাণিজ্যিক স্বার্থকে মাথায় রেখেই নিয়ে থাকে সংস্থার কর্তৃপক্ষরা।’
কিন্তু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে, কতগুলি দফতর হারাবে কলকাতা? জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের আওতাধীন মোট ১০টি দফতর কলকাতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে স্টেট ব্যাঙ্ক। সংস্থা তরফে জানা গিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে সরিয়ে দেওয়া হবে রেমিট্যান্স, গ্লোবাল ব্যাক অফিস ও ফরেক্স ট্রেজারির মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলোও। আপাতত সবটাই সময়ের অপেক্ষা।