Kolkata Police: রোদ, ভ্যাপসা গরমে ট্রাফিক সামলেও সামাজিক দায়িত্ব ভোলেননি এই সার্জেন্ট, নিয়মিত পড়াতে বসেন রাস্তার ধারেই

Kolkata Police: ছোট ওই ছেলেটা এখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। মা অনেক কষ্টে ছেলেকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। সরকারি একটা স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন ছেলেকে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছিল, ততই ছেলের পড়াশোনায় অনীহা তৈরি হচ্ছিল। তাই দায়িত্ব নেন প্রকাশ বাবু। ডিউটির ফাঁকেই নিয়মিত পড়তে বসান তৃতীয় শ্রেণির ওই ছেলেকে।

Kolkata Police: রোদ, ভ্যাপসা গরমে ট্রাফিক সামলেও সামাজিক দায়িত্ব ভোলেননি এই সার্জেন্ট, নিয়মিত পড়াতে বসেন রাস্তার ধারেই
ট্রাফিক সার্জেন্ট প্রকাশ ঘোষ (ছবি সৌজন্যে- অর্ণবাংশু নিয়োগী)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 13, 2022 | 11:51 PM

কলকাতা : গায়ে সাদা উর্দি, পায়ে কালো বুট পরে চৈত্রের এই চাঁদিফাটা গরমেও কর্তব্যে অবিচল প্রকাশ ঘোষ। সাউথ-ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট। কোনও গাড়ি নিয়ম ভাঙছে কি না, কোনও গাড়ি বেশি গতিতে হুশ করে বেরিয়ে যাচ্ছে কি না, সব দিকেই তাঁর সজাগ নজর। কিন্তু নিজের এই কর্তব্যের মাঝেও সামাজিক দায়িত্ববোধের কথাও ভোলেননি প্রকাশ বাবু। বালিগঞ্জ আইটিআইয়ের পাশে মাঝে মধ্যেই ডিউটি থাকে তাঁর। আর যখনই ডিউটিতে যান, সেই কাজের ফাঁকেই গাছতলায় পড়াতে বসেন বছর আটের এক খুদেকে। ছোট ওই ছেলেটা এখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। মা অনেক কষ্টে ছেলেকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। সরকারি একটা স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন ছেলেকে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছিল, ততই ছেলের পড়াশোনায় অনীহা তৈরি হচ্ছিল। তাই দায়িত্ব নেন প্রকাশ বাবু। ডিউটির ফাঁকেই নিয়মিত পড়তে বসান তৃতীয় শ্রেণির ওই ছেলেকে।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল ট্রাফিক সার্জেন্ট প্রকাশ ঘোষের সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, “প্রতিদিনই আমি ডিউটি করি ওখানে। ওখানে একটা খাবারের দোকান আছে। ছেলেটার মা ওই দোকানে কাজ করে। ছেলেটাও মায়ের সঙ্গেই থাকত। আমি একদিন জিজ্ঞেস করলাম, ও পড়াশোনা করে কি না। বলল, কাকু আমি থ্রি-তে পড়ি। তারপর আমি জানতে চাই, দেখি তো কী জানিস। কিন্তু সত্যি বলতে, দুই বছরে যা জানত সব ভুলে গিয়েছে। তখন আমি ওকে বললাম, আমি এখানে থাকব, আমার সঙ্গে বসবি।”সার্জেন্ট আরও জানিয়েছেন, “শুরুতে হাতের লেখা ঠিক করাতাম। আমার গাড়ির সিটে বসিয়েই লেখা প্র্যাক্টিস করাতাম। এভাবেই যখন যখন ডিউটির মাঝে সময় পাই, বা ওর স্কুল যখন বন্ধ থাকে, তখন ওকে ডেকে নিই পড়ানোর জন্য।”

বছর আটেকের ওই ছোট্ট ছেলেটাকে পড়াশোনায় মন বসাতে বেশ বেগ পেতে হয় প্রকাশ বাবুকে। পড়াশোনার ভয়ে মাঝে মাঝে তাঁর থেকে দূরে দূরেও থাকে। কিন্তু দায়িত্ব যখন নিয়েছেন, তখন হাল ছাড়তে নারাজ তিনি। আবার মায়ের কাছে গিয়ে ছেলেকে ডেকে নিয়ে আসেন। পড়তে বসান। এভাবেই নিজের কাজের ফাঁকে শিক্ষকের গুরু দায়িত্বও পালন করে চলেছেন তিনি। প্রায় দুই – আড়াই মাস ধরে প্রায় নিয়মিতভাবে ওই ছোট ছেলেটিকে পড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি।

প্রকাশ ঘোষ এমএড পাশ। পার্ট টাইম শিক্ষকতাও করেছেন অতীতে। শিক্ষক সত্ত্বাটা তাঁর মধ্যে অনেকদিন আগে থেকেই ছিল। ছোট ছেলেটাকে এভাবে পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে দেখে নিজের সুপ্ত শিক্ষক সত্ত্বাকে আর আটকে রাখতে পারলেন না তিনি। এর পাশাপাশি সে যাতে নিয়মিত স্কুলে যায়, সেই দিকেও নজর রাখেন তিনি।

আরও পড়ুন : Lovely Maitra: অধীরকে বেনজির ব্যক্তিগত আক্রমণ লাভলির! কী বললেন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক?

আরও পড়ুন : West Bengal Assembly : বিধানচন্দ্রের পরই মমতা! ব্রাত্য জ্যোতি-বুদ্ধ-সিদ্ধার্থ, বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রীদের বক্তৃতা সংকলন