কলকাতা: স্মৃতি আগলে এ বছর জন্মদিন পালন। সত্যি বলতে, শুধু এ বছর নয়। এবার থেকে প্রতিটা বছরই কাটবে নিঃসঙ্গ। জন্মদিনে ঘরে ফিরবে না একমাত্র মেয়ে। ৯ অগস্ট, সেই পৈশাচিক দিন। নাইট ডিউটিতে গিয়ে রাজ্যের অন্যতম মেডিক্যাল কলেজে নারকীয় ঘটনার শিকার হতে হল তিলোত্তমাকে। সেই থেকে কেটে গিয়েছে ছ’টা মাস। গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে কত জল। কিন্তু বিচার পেয়েছেন কি নির্যাতিতা?
সঞ্জয় জেলে, আজীবন কারাদণ্ড হয়েছে তার। কিন্তু এতে যে সন্তুষ্ট নয় নির্যাতিতার মা-বাবা থেকে শুরু করে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। লড়াই এখনও থামেনি তাদের। এ লড়াই চলছে। হয়তো চলবেও। কারণ লড়াইটা আসলে কখনওই থামেনা। এ এক অনন্ত কাল যাবৎ করে চলা কর্ম। আর সেই লড়াইয়ের মাঝেই আজ জন্মদিন তিলোত্তমার।
নির্যাতিতা বাবা-মা জানিয়েছেন, আজ, ৩২ বছরে পা দিতেন তাঁদের মেয়ে। কিন্তু, সেটা আর হল না। তাই স্মৃতি আগলেই হবে তিলোত্তমার জন্মদিন পালন। হবে ‘বাংলার মেয়ের জন্মদিন’ পালন।
মেয়ের জন্মদিনে ফের বিচারের দাবিতে পথে নামতে চলেছেন তিলোত্তমার মা-বাবা। সোদপুরে জুনিয়র চিকিৎসকদের দ্বারা আয়োজিত ক্লিনিকেও যাবেন তাঁরা। এছাড়াও, নির্যাতিতার মা-বাবার পাশাপাশি ফের একবার পথে নামতে চলেছে জুনিয়র চিকিৎসকরা। প্রথমে কালীঘাটে পুজো দেবেন তারা। এরপর দুপুর ৩টেয় কলেজ স্কোয়ার থেকে আরজি কর পর্যন্ত রয়েছে তাঁদের মৌন মিছিল। তারপর আরজি কর হাসপাতালে হবে বৈঠক।
উল্লেখ্য, শুধুই জুনিয়র ডাক্তাররা নয়। তিলোত্তমার জন্মদিনে পা মেলাবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন নির্যাতিতার বাবা-মা’র সঙ্গে গিয়ে দেখা করবেন তিনি। পাশাপাশি, তাঁদের বাড়ির সামনেই পালন করবেন নির্যাতিতার জন্মদিনও।
প্রসঙ্গত, জন্মদিনের ঠিক একদিন আগে অর্থাৎ গতকাল মেয়ের ন্যায়-বিচারের দাবিতে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে দেখা করেছেন তিলোত্তমার মা-বাবা। ভাগবতের কাছ থেকে আশ্বাসও পেয়েছে তাঁরা। রাজ্যে ১১ দিনে ভরা কর্মসূচি নিয়ে সফরে এসেছেন আরএসএস প্রধান। সেই ফাঁকেই তাঁর সমীপে পৌঁছলেন নির্যাতিতার বাবা-মা।
তবে ভাগবতের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টিকে মোটেই সোজা চোখে দেখছে না তৃণমূল শিবির। এদিন দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘তাঁর কাছে কেন গিয়েছেন ওরা? তিনি তো বিজেপির পৃষ্ঠপোষক। নির্যাতিতার বাবা-মা যাচ্ছেন মোহন ভাগবতের কাছে। সমস্ত মুখোশ খুলে যাচ্ছে।’