
কলকাতা: ভুয়ো ডিগ্রি ব্যবহার করে চিকিৎসা! শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ। বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন শান্তনু। ২ বছরের জন্য তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। এই দুই বছর তিনি চিকিৎসক হিসাবে প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়ার পর কী বললেন শান্তনু?
শান্তনু সেনের দাবি, তাঁর ডিগ্রি বৈধই, রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদনও করেছিলেন, আরটিআই-ও করেছিলেন। কিন্তু তিনি কোনই উত্তর পাননি। তাঁর কথায়, “আমার রেডিওলজির যোগ্যতা রয়েছে। যদি অন্যায় করতাম, আমি আমার অজ্ঞতাটা মেনে নিয়ে কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে চলে যেতাম।”
সাংবাদিক বৈঠকে শান্তনু সেন বলেন, “এই মেডিক্যাল কাউন্সিলে আমি নিজে কিছুদিন আগে পর্যন্ত সরকারি নমিনি হিসাবে কাজ করেছি। আমার রেজিস্ট্রেশনে MBBS, DMRD কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। DMRD হচ্ছে রেডিওলজি কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। এটার ভিত্তিতেই আমি রেডিওলজিস্ট হিসাবে প্র্যাকটিস করি।” নিজের ডিগ্রিগুলোও তিনি ক্যামেরার সামনে তুলে ধরেন।
তাঁর দাবি, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে DMRD তে প্রথম হয়েছিলেন, গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন। তার সার্টিফিকেটও দেখান। পরবর্তীকালে FRCP করেন ২০১৯ সালে।
শান্তনু বলেন, “বেঙ্গল মেডিক্যাল অ্যাক্ট ১৯১৪, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিল অ্যাক্ট ১৯৫৬ ধারা অনুযায়ী ডাকা হয়। আমি নাকি FRCP ডিগ্রিটা রেজিস্টার করিনি, তাতে নিয়ম ভেঙেছি। প্রথম ওনারা যে ধারাগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন, তাতে বলা হয়েছে অ্যাডিশনাল ডিগ্রিগুলোকে রেজিস্ট্রার করতে হবে। কোথাও কোনও টাইম ফ্রেম দেওয়া নেই।” তাঁর দাবি, তিনি তারিখ উল্লেখ করে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, ঠিক কবে কিনি রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেছিলেন। তার জন্য ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি শান্তনুর। তাঁর কথায়, বারবার আরটিআই করেছি। চিঠি করেছি। একটা চিঠিরও উত্তর দেওয়া হয়নি। তাহলে ধরে নিতে পারি, রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমি এসে প্রমাণ করে দিয়ে যাই, কোনও নিয়ম ভাঙা হয়নি। তারপরও আজকে ডেকে পাঠানো হল। আমার রেডিওলজির যোগ্যতা রয়েছে। যদি অন্যায় করতাম, আমি আমার অজ্ঞতাটা মেনে নিয়ে কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে চলে যেতাম।”
মেডিক্যাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট সুদীপ্ত সেনের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ”
আজকে আমাকে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। আমার খুব খারাপ লাগছে ভেবে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের যিনি প্রেসিডেন্ট হিসাবে বসে রয়েছেন, এক সময়ে ২০০১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর পোলিং এজেন্ট হয়ে সিপিএমের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছিলাম।” তাঁর অভিযোগ, ” আজকে এখানে বসে একাধিক অনৈতিক কাজ নয়, বেছে বেছে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করা, এমন কিছু কাজ হচ্ছে, যাতে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক বাধ্য করে বিমুখে চালিত করছে। তার জলন্ত নিদর্শন আমি নিজে।”
উল্লেখ্য, দিনের পর দিন ভুয়ো ডিগ্রি ব্যবহার করে মানুষের চিকিৎসা করছিলেন, এমনই অভিযোগ ওঠে শান্তনুর বিরুদ্ধে। এদিন ভুয়ো বিদেশি ডিগ্রি ব্যবহারের সেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলেই জানিয়েছেন রোগী কল্যাণ সমিতিক চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়।