‘নেতাদের কোনও দাম নেই, কর্মীরাই শেষ কথা’, হুঙ্কার ‘কর্মী’ অনুব্রতর

শতাব্দীর স্বামী মৃদঙ্গ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, "বেশ কিছুদিন ধরেই ও একটু গুমরে রয়েছে। শনিবার দিল্লি যাচ্ছে। তবে কী কর্মসূচি তা আমার জানা নেই।"

'নেতাদের কোনও দাম নেই, কর্মীরাই শেষ কথা', হুঙ্কার 'কর্মী' অনুব্রতর
অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ।
Follow Us:
| Updated on: Jan 15, 2021 | 6:10 PM

বীরভূম: শতাব্দী রায়কে নিয়ে ক্রমেই অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে। পরবর্তী ‘সিদ্ধান্ত’ জানানোর জন্য চূড়ান্ত সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ। হঠাৎ কেন তিনি অন্য সুর ধরলেন তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের একাংশ কাঠগড়ায় তুলেছে অনুব্রত মণ্ডলকে। অনুব্রত-শতাব্দীর ‘কোন্দল’ বীরভূম কেন গোটা বাংলাই জানে। এবার সেই ‘কেষ্ট কাঁটা’তেই শতাব্দী ‘রক্তাক্ত’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে অনুব্রত সেসব মানতে নারাজ। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে শুনিয়ে দিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের র‌্যালিতে শতাব্দীর উপস্থিতি তাঁর কারণেই। তাঁর ডাকেই বোলপুরে গিয়েছিলেন বীরভূমের সাংসদ।” একই  সঙ্গে অনুব্রত বলেন, “আমি নেতা নই আমি একজন কর্মী। আমার এ নিয়ে বেশি বলা ঠিক নয়। এখানে তো নেতার কাজ নেই, কর্মীর কাজ। উনি পার্লামেন্টটা ভাল বোঝেন।”

আরও পড়ুন: ‘মাঝে আর একদিন, শনিবারই যা সিদ্ধান্ত জানাব’, চূড়ান্ত সময় বেঁধে দিলেন শতাব্দী

এদিন TV9 কে শতাব্দী রায় জানান, “সম্মান দিলে আমি আছি। আমি অন্য কিছু চাই না। সাংসদ হিসাবে আমার ১০০ শতাংশ কাজও করেছি। কিন্তু আমাকে জেলার মিটিং সম্পর্কে পর্যন্ত জানানো হয় না।” এদিন তারই প্রতিক্রিয়ায় অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের র‌্যালিতে তো ঘুরলেন শতাব্দী। সে তো আমি ডাকলাম বলেই। আমি না ডাকলে তো আসতে পারতেন না।” যদিও TV9কে জানান, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে ডেকেছিলেন। বলেছিলেন চলে এসো, গিয়েছিলাম।”

একইসঙ্গে অনুব্রত এদিন শতাব্দী প্রসঙ্গে বলেন, “যেখানে সংগঠন আছে কর্মীরাই শেষ কথা। আমি বরাবর বলে আসছি। নেতাদের কোনও দাম নেই, কর্মীরাই শেষ কথা। কর্মীরা যা বলবেন তাই হবে।” এরইসঙ্গে অনুব্রতর সংযোজন, “আমি অনুব্রত মণ্ডল নেতা নই, কর্মী। আমি নেতা বলে নিজেকে ভাবিও না, ভাববও না। আমি জাস্ট একজন কর্মী।”

এর আগে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূল ছেড়েছিলেন বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা। অনুব্রতর বিরুদ্ধে আগেও অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিলেন শতাব্দী। কিন্তু বিজেপি-হাওয়ায় এবার একটু বেশিই সুর চড়ালেন তিনি। যদিও এদিন বাড়িতে বসেই অনুব্রত জানান, “কে বলেছে কাজ করতে পারেনি? নিজের এমপি ফান্ডের খরচ নিজেই করেছেন। আমরা এ বিষয়ে জানি না।। আর কাজ করতে পারেনি বলে কোনওদিন তো আমাকে জানাননি।”

এদিকে এদিন দুপুর থেকেই তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ রয়েছেন শতাব্দী রায়ের বাড়িতে। শতাব্দীর সঙ্গে কুণাল ঘোষের সম্পর্ক অনেকটাই সহজ। তাই সেদিকটা মাথায় রেখেই দল শতাব্দীর অভিমান ভাঙানোর দায়িত্ব কুণালের হাতে সঁপেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এ প্রসঙ্গে শতাব্দীর স্বামী মৃদঙ্গ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “বেশ কিছুদিন ধরেই ও একটু গুমরে রয়েছে। শনিবার দিল্লি যাচ্ছে। তবে কী কর্মসূচি তা আমার জানা নেই। কুণাল ঘোষ এই মুহূর্তে আমাদের ফ্ল্যাটেই রয়েছেন। শতাব্দীর সঙ্গে কথা বলছেন।”  তবে সকালেই শতাব্দী জানিয়েছেন, “শনিবারের মধ্যেই আমার সিদ্ধান্ত জানাব। আর তো একটা দিন। একটু অপেক্ষা করুন।”