কলকাতা: হকের চাকরির দাবিতে আজও রাস্তায় বসে রয়েছেন ওঁরা (Job Seekers Protest)। আজ ৮০০ দিন অতিক্রান্ত। ঘর-সংসার, পরিবার সব ফেলে রেখে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এসএলএসটি (SLST) নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। বেকারত্বের জ্বালা, যন্ত্রণা, কান্না আর একরাশ দুঃখ বুকে নিয়ে ঠাঁয় রাস্তার ধারে বসে তাঁরা। সেই ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তি। পরেশ-কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর নাম যে প্যানেলে ঢোকানো হয়েছিল, সেই প্যানেলেরও চাকরিপ্রার্থী ওঁরা। বঞ্চনার অভিযোগ বার বার উঠেছে, কিন্তু চাকরি মেলেনি আজও। এমন অবস্থায় আন্দোলনের ৮০০ দিনের মাথায় তাঁরা পুজো দিলেন কালীঘাটের মা কালীর কাছে। আশা, ঠাকুর হয়ত এবার একটু মুখ তুলে চাইবে।
কালীঘাটের মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে তাঁরা বললেন, ‘আমরা যোগ্য চাকরিপ্রার্থী। পরীক্ষা দিয়েছি। পাশ করেছি। তালিকাভুক্ত হয়েছি। বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে আজ আমরা বঞ্চিত। ৮০০ দিন হতে চলল। বর্তমানে এমন অবস্থায় যে আইনের যাঁতাকলের মধ্যে পড়ে আমাদের পিষতে হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত সমাধান হোক এবং যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা হোক। নিয়োগের আশায় আমরা আজ কালীঘাটে পুজো দিতে এসেছি।’
দফায় দফায় আন্দোলন হয়েছে। আন্দোলনের জায়গা বদলেছে। কখনও প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন, কখনও সেন্ট্রাল পার্কে অবস্থান আর এখন ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির নীচে অবস্থান। আন্দোলনের জায়গা বদল হলেও, ঝাঁঝ কমেনি এতটুকুও। বরং উত্তরোত্তর বেড়েছে। রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে বটে সমস্যা সমাধানের, কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। একাধিকবার এসএসসি চেয়ারম্যান, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে কোনও সুরাহা হয়নি। রাজ্যের শাসক দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকও কার্যত নিস্ফলা। সরকার সুপারনিউমেরারি পদের মাধ্যমে এদের নিয়োগ দিতে গিয়ে হাইকোর্টে মুখ থুবড়ে পড়েছে রাজ্য। এখন এদের ভবিষ্যত সরকারের ও সুপ্রিম কোর্টের হাতে।
এমন অবস্থায় কালীঘাটের মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও কাতর আর্তি আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের। বলছেন, ‘মাতৃসম মুখ্যমন্ত্রী যেন তাঁর সন্তানসম যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের হাহাকার দূর করেন। মুখ্যমন্ত্রী যেন সুপার নিউমেরারি পোস্টের মাধ্যমে দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করেন।’