কলকাতা: বাংলার মাটিতে ইন্ডিয়া জোটের ভবিতব্য শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা নিয়ে জোর চর্চা চলছিল রাজনৈতিক মহলে। প্রাদেশিক রাজনীতির সমীকরণ বার বার উঠে আসছিল। কংগ্রেসকে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল ক’টি আসন ছাড়বে, তা নিয়েও চলেছে বিস্তর চুলচেরা বিশ্লেষণ। আর এসবের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, বাংলার ৪২টি আসনেই প্রার্থী দেওয়ার চিন্তাভাবনা চালাচ্ছে তৃণমূল শিবির। শুক্রবার তৃণমূলের এক অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছে ঘাসফুল নেতৃত্ব, সূত্র মারফত এমনই জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ, শেষ পর্যন্ত যদি এটাই বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বাংলায় কংগ্রেসের যে দু’টি আসন রয়েছে, বহরমপুর ও দক্ষিণ মালদা… সেখানেও প্রার্থী দিতে পারে তৃণমূল।
উল্লেখ্য, এর আগে দিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলাপচারিতার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বাংলায় কংগ্রেস ন্যায্য দাবি রাখলে সমঝোতায় আপত্তি নেই তাঁর। বাংলায় কংগ্রেসের বর্তমানে দু’টি লোকসভা আসন রয়েছে সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে জল গড়িয়েছে অনেকটা।
মাঝে দক্ষিণ মালদার বর্ষীয়ান কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী দাবি করেছিলেন, তৃণমূল নাকি কংগ্রেসকে দু’টি আসন ছাড়তে রাজি এবং আরও কিছু আসন নিয়ে কথাবার্তা চলছে। অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী আবার দু’টি আসনের ইস্যুতে বলেছিলেন, ‘কে দু’টোর দয়া নেবে?’ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দয়ার দান তিনি চান না। বলেছিলেন, ‘আমরা কেউ দয়া চেয়েছি? আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।’ এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহরমপুরে এসে ভোটের লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন অধীর।
যখন এই বিস্তর জলঘোলা চলছিল, রাজ্য রাজনীতিতে তখন আসরে নেমে পড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী-সুকান্ত মজুমদাররাও। কথায় কথায় ইন্ডিয়া জোটকে বিঁধে বলেছিলেন, ‘ইন্ডি জোটের পিন্ডি চটকে’ যাওয়ার কথা। এমনকী তাঁদের সুরে সুর মিলিয়ে নীচু তলার বিজেপি কর্মীরাও একই ভাষায় বিঁধেছিলেন কংগ্রেস ও তৃণমূলকে।
এসবের মধ্যেই আজ তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে সব আসনে ঘাসফুলের প্রার্থী দাঁড় করানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এই নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় পাল্টা বলেছেন, ‘৪২টি আসনে কেন, উনি সারা ভারতে প্রার্থী দিন। তাতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক দলের মতো প্রার্থী দেবে। অধীর চৌধুরীকে হারানোর জন্য তো অনেককিছুই করেছেন। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, যদি ক্ষমতা থাকে, আপনি নিজে গিয়ে বহরমপুরে দাঁড়ান।’