কলকাতা: তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা দীর্ঘদিনের। মাঝে বিজেপিতে গিয়েছিলেন বটে। কিন্তু বেশিদিন মন টেকেনি সেখানে। তারপর থেকেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে বেশ কিছুটা দূরে কলকাতার মহানাগরিক শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে এবার কি রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে শোভনের সেই পুরনো দিন আবার ফিরে আসতে চলেছে? বৃহস্পতিতে এক শীতের সন্ধেয় টানা তিন ঘণ্টা ধরে কুণালের সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর কথাবার্তায় কি সেই নিয়েই আলোচনা হল? নাহ, এদিনে সাক্ষাৎ আর পাঁচটা সাধারণ সৌজন্য সাক্ষাতের মতো নয়। পুরনো দিনের কথা হয়েছে। রাজনীতির কথা হয়েছে। শোভনের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও কথা হয়েছে।
গোলপার্কে শোভন-বৈশাখীর ফ্ল্যাটে কুণাল ঢুকেছিলেন পৌনে সাতটা নাগাদ। আর যখন বেরলেন, তখন সাড়ে ৯টা পেরিয়ে গিয়েছে। চা খাওয়ার নিমন্ত্রণ রক্ষায় এসে নৈশভোজের সময় হয়ে গেল প্রায়। এতক্ষণ ধরে কী কথা হল তাঁদের? উভয়ের মধ্যে তো মাঝে সম্পর্ক বেশ তিক্ততার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। সে কথা মেনে নিয়েও কুণাল বললেন, তাঁদের সম্পর্ক বহু বছরের। মাঝে কিছু বাধ্যবাধকতার কারণে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল বটে, কিন্তু আসল সম্পর্কের গভীরতায় তা ছাপ ফেলতে পারেনি।
আজকের কুণাল-সাক্ষাতে বেশ খুশি শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। সক্রিয়ভাবে আবার তৃণমূলে ফেরার জোরাল ইঙ্গিত দিয়ে বললেন, “সত্যি বলতে এভাবে আমাদের কেউ জিজ্ঞেস করেননি, আমাদের অবস্থান কী। মনের দিক থেকে অনেকটা হালকা বোধ করছি। এটুকু বলতে পারি। এবার আগামী দিনে পরিবেশ পরিস্থিতিই কথা বলবে।” শোভন যে রাজ্য রাজনীতিতে আজকাল সেভাবে সক্রিয় নন, এই বিষয়টি ভেঙে এবার বেরিয়ে আসতে চান মমতার প্রিয় ‘কানন’। শোভনের কথায়, “এই যে বলা হচ্ছে সক্রিয়তা নেই। এই সক্রিয়তা নেই জায়গাটি ভেঙে দেওয়ার জন্য কী প্রক্রিয়া তৈরি হতে পারে, সেটা আমাদের আলোচনার মধ্যে এসেছে।”
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আরও সংযোজন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন, যেদিন যেভাবে ডাকবেন… কানন আগে যেভাবে ছিল, আগামী দিনে কানন সেভাবেই থাকবে। মাঠে ময়দানে তৃণমূলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আমার সহকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য যদি আমার বিন্দুমাত্র কিছু করার থাকে, সেটা আমি করতে চাই।”
তাহলে কি খুব শীঘ্রই শোভনকে আবার সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যাবে? দিনক্ষণ স্পষ্ট না করলে কুণাল ঘোষও বলছেন, ‘শোভনদা অ্যাক্টিভ হলে নিশ্চিতভাবে জুনিয়র হিসেবে আমাদেরও ভাল লাগবে। অতীতে শোভনদা দলকে বিভিন্নভাবে পরিষেবা দিয়েছেন। শোভন চট্টোপাধ্যায় ঠিক কবে থেকে শুরু করবেন, বা আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে ফেরা… এগুলো নিয়ে কথা বলার এক্তিয়ার আমার নেই। পুরো সিদ্ধান্তটাই আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।’