
কলকাতা: এসএসসি মামলায় সোমবার রায় ঘোষণা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন ২০১৬ সালের পরীক্ষার প্যানেলের গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের গোটা প্যানেলই বাতিল করে দেয়। একমাত্র সোমা দাস নামে এক শিক্ষিকার চাকরি থাকছে। তিনি ক্যান্সারের রোগী। আদালতের নির্দেশেই চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে বেআইনিভাবে যারা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ফেরাতে হবে বেতন, তাও ১২ শতাংশ সুদ সমেত। নিঃসন্দেহে বড় নির্দেশ আদালতের। তবে এই নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে উঠে আসছে।
এখনও আদালতের রায়ের অর্ডার কপি আপলোড হয়নি। তবে ২৪ হাজার ৬৪০ শূন্যপদ ছিল গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ মিলিয়ে। তবে বোর্ড যে তথ্য দেয় তাতে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের নিয়োগপত্র ইস্যু করে। তবে নিয়োগপত্র ইস্যু হলেও সকলেই যে চাকরি পেয়েছেন তেমনটা নয়। ফলে সংখ্যাটা ২২ হাজারের মতো হতে পারে। রায়ের কপি সামনে এলে সংখ্যাটা স্পষ্ট হবে।
আদালত নির্দেশ দিয়েছে, যাঁরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন তাঁদের সমস্ত বেতন ফেরাতে হবে। দিতে হবে ১২ শতাংশ সুদ। প্যানেল বহির্ভূত ও ফাঁকা ওএমআর যারা জমা দিয়েছিল, তারা বেতন ফেরাবে।
১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অর্থাৎ আবারও ওএমআর শিটের পুনর্মূল্যায়ন হবে। আর তার ভিত্তিতে তৈরি হবে নতুন প্যানেল। তাতে যোগ্যরাই থাকবেন বলে আশাবাদী সকলে। সুতরাং যোগ্যদের চাকরি ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে খুব একটা প্রতিবন্ধকতা থাকবে বলে মনে করছেন না আইনজীবী মহল।
২০১৬ সালে যতজন পরীক্ষা দিয়েছিল তাদের ওএমআর শিট আবারও মূল্যায়ন করা হবে। প্রসঙ্গত, আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ওএমআর শিটগুলি বৈধ। নতুন করে টেন্ডার ডেকে নতুন সংস্থার হাতে দায়িত্ব দেওয়া হবে ওএমআর শিট নতুন করে মূল্যায়ন করা হবে।
সুপার নিউমেরারি পদে নিয়োগ ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত। তাই তা নিয়ে সিবিআই তদন্ত হবে। যাঁদের সম্মতিতে এই অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছে, প্রয়োজনে তাঁদেরও ডাকতে পারবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যেহেতু মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত, ডাক পড়তে পারে সেই বৈঠকে থাকা সদস্যদের। মনে করা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে মন্ত্রী-আমলাদেরও ডাকার সম্ভাবনা থাকছে। তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতকে।
যোগ্য অথচ চাকরি হারালেন যাঁরা, তাঁরা চাইলেই সুপ্রিম-আদালতে যেতে পারেন। অন্যদিকে অযোগ্য চাকরিহারাদের জন্য থাকছে আদালতের দরজা খোলা। তাঁরা আর্জি জানাতেই পারেন, এতদিন তাঁরা যে শ্রম দিয়েছেন, তাঁর বদলে তাঁরা বেতন পেয়েছেন। তাহলে বেতন কেন ফেরাবেন? অন্যদিকে ইতিমধ্যেই মামলাকারীদের তরফে ক্যাভিয়েট দাখিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।