সাত ইঞ্চির পেরেক গিলে ফেলল ২ বছরের শিশু, ২১ ঘণ্টা আটকে শ্বাসনালীতে! এসএসকেএম যা করল…
SSKM Hospital: শনিবার সকালে বাড়ির সামনে খেলা করছিল বছর দুয়েকের মুস্তাকিন আলি। এরপর ঘরে ফেরার পর বমি করতে থাকে।
কলকাতা: কথায় বলে একজন চিকিৎসকের মধ্যে ঈশ্বর বাস করেন। তাঁর হাত ধরেই এমন অনেক মিরাক্যাল হয়, যা হয়তো যুক্তি দিয়ে বিচার করা যায় না। তবু বিজ্ঞানের যশে ঘটে যায় সেই আশ্চর্য। এমনটাই ঘটালেন এসএসকেএমের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা। দু’বছরের শিশু খেলার সময় গিলে ফেলেছিল সাত ইঞ্চির পেরেক। প্রায় ২১ ঘণ্টা শ্বাসনালীতে আটকে ছিল তা। উত্তর দিনাজপুর থেকে মালদহ হয়ে রবিবার ভোরে শিশুটিকে যখন এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৪-৯৫। ধুক ধুক করছে ছোট্ট বুকের খাঁচাটা। অঝোরে কেঁদে চলেছেন পরিবারের লোকজন। তাকে বাঁচানোর দায়িত্ব নিল এসএসকেএমের ইএনটি বিভাগ। বিরল অস্ত্রোপচারে নবজন্ম হল উত্তর দিনাজপুরের শিশুটির।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবার সকালে বাড়ির সামনে খেলা করছিল বছর দুয়েকের মুস্তাকিন আলি। এরপর ঘরে ফেরার পর বমি করতে থাকে। শ্বাসও ফেলছিল টেনে টেনে। তাতেই সন্দেহ হয় মায়ের। ধরেই নিয়েছিলেন বাচ্চা কিছু একটা গিলে ফেলেছে। তখনও কল্পনা করতে পারেননি এমন বিপদ আটকে রয়েছে ছোট্ট মুস্তাকিনের জীবনদ্বারে। বাচ্চা কোলে নিয়ে রায়গঞ্জ হাসপাতালে ছোটে পরিবার। সেখানে আশার আলো না দেখে নিয়ে যাওয়া হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরাও সেই পেরেক বের করতে পারেননি। এদিকে সময় যত এগোচ্ছে বমির বেগ বেড়েই চলেছে শিশুটির। বাড়ছে শ্বাসের টানও। ধীরে ধীরে মায়ের কোলে নেতিয়ে পড়ে ওই বাচ্চা। তবু হাল না ছেড়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে রবিবার ভোরে এসএসকেএমে পৌঁছয় বাড়়ির লোকেরা।
আরও পড়ুন: পরকীয়ার ‘শাস্তি’, গলায় জুতোর মালা পরে হাঁটছেন মহিলা, পিছনে লাঠি হাতে মাতব্বরেরা!
এসএসকেএমের ইএনটি বিশেষজ্ঞ সুদীপ্তা মিত্র বলেন, “ওকে যখন আমাদের কাছে রবিবার ভোরে ভোরে আনা হয় খুবই শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। অক্সিজেন দিয়েও স্যাচুরেশন ৯৪-৯৫’র বেশি উঠছিল না। সঙ্গে সঙ্গে ওটির ব্যবস্থা করে এমার্জেন্সি রিজিড ব্রঙ্কোস্কোপি করে পেরেকটা বের করি। এখন বাচ্চাটি স্টেবল। তবে পর্যবেক্ষণে আছে।”
শিশুটি কার্যত দ্বিতীয় জীবন পেল। এরকম মরচে লাগা বিশাল পেরেক টানা এতটা সময় শ্বাসনালীতে আটকে। আরও বড় বিপদ হতে পারত। কিন্তু আবারও এসএসকেএম প্রমাণ করে দিল তাদের দক্ষতার জোর কতটা। সম্প্রতি বর্ধমানের এক কিশোরীর গলায় ঢুকে গিয়েছিল সূচ। ফুসফুসের লোয়ার ল্যাবে তা আটকে গিয়েছিল। ব্রঙ্কোস্কপি করেই তা বের করেন এসএসকেএমের চিকিৎসকরাই। তার আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালির এক তরুণীর পিঠে লোহার রড ঢুকে গিয়েছিল। রডটি রীতিমতো এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল। মৃত্যুর মুখ থেকে সেই তরুণীকেও ফিরিয়ে এনেছিল এসএসকেএম।