কলকাতা: বর্তমানে ১৪ দিনের ইডি হেফাজতে রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’। নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁকে গ্রেফতার করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। কালীঘাটের কাকুর বিরুদ্ধে আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল বেহালার রায় পরিবারের জমি জবরদখল করার অভিযোগ। সেই মামলা এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের গ্রেফতারির পর কী বলছে বেহালার রায় পরিবার? TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়েছিলেন ওই পরিবারের কর্ত্রী নীলাঞ্জনা রায়। সুজয়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। নীলাঞ্জনা বলেন, “অনৈতিকভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়েই এত গা জোয়ারি। ওঁরা সব স্তরকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করেছেন। কোনও প্রভাবশালী লোকের মদত নিশ্চয় রয়েছে।”
বেহালার রায়বাহাদুর পরিবার বনেদি পরিবার। তাঁদের বাড়ির পাশেই একটা বড় মাঠ রয়েছে। সেটি তাঁদের পূর্বপুরুষদের আমল থেকেই। যেহেতু এলাকায় কোনও মাঠ নেই, তাই সেটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ব্যক্তিগতভাবে দখলে রাখত না রায় পরিবার। সেখানে এলাকার বহু পুরনো কৃষ্ণ পুজো, জগদ্ধাত্রী- দুর্গাপুজো হত। পাড়ার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলোও হত। অভিযোগ, ২০২২ সালে একদিন রাতে আচমকাই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র কয়েকশো পুলিশ ও এলাকার কয়েকজন যুবককে নিয়ে মাঠটি দখল করতে আসেন। একটি এনজিও-র নাম করে ভুয়ো কাগজ দেখিয়ে মাঠটি জবরদস্তি দখল করেন। এমনকি অভিযোগ, সেই রাতে এলাকার জলের সমস্যা ছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইট-বালি-সিমেন্ট জোগাড় করেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। জলের অভাব থাকায় ‘মিনারেল ওয়াটারের’ কয়েকশো জার নিয়ে এসে বালি-সিমেন্ট মেখে পাঁচিল দিয়েছিলেন কালীঘাটের কাকু।
বর্তমানে রায় পরিবারের কর্তা গৌতম রায় ও সুবীর রায়। ঘটনার পর রায় পরিবার জমির মালিকানা চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। কিন্তু এর আগে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে যখন এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনে দাবি করেছিলেন, এই জমি তাঁর। সে কাগজও তাঁর কাছে রয়েছে। সেই জমির দলিলও দেখান সুজয় কৃষ্ণ। বর্তমানে জমিটি নোংরা, জঞ্জালে ভর্তি। পরিত্যক্ত অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। সামনে লাগানো রয়েছে একটি বোর্ড। কিন্তু এই জমির মালিকানা ছাড়তে নারাজ রায় পরিবার। আইনি লড়াই তাঁরা চালাবেন বলে জানিয়েছেন।