কলকাতা: তিন রাজ্যে উঠেছে গেরুয়া ঝড়। আর সেই ফলাফলের দিনই রাজ্য সরকারকে ‘রং’ নিয়ে বার্তা দিল মোদী সরকার। নীল-সাদা রং না বদলালে মিলবে না জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বরাদ্দ। রাজ্যকে আরও একবার এ কথা মনে করিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বরাদ্দ আটকানোর বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল রাজ্য। এই খাতে পাওনা ৭৮৮ কোটি টাকা চেয়ে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব। হাসপাতালের জেনারেটর চালানোর তেলও প্রায় জুটবে না, এমনই অবস্থা। সেই কারণেই দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন। রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর দাবি শুধু খারিজ করা হয়েছে, তাই নয়। প্রেস বিবৃতি জারি করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রের স্পষ্ট বার্তা, বরাদ্দ পাওয়ার জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের যে চুক্তি ছিল, তা মেনে কাজ করেনি বাংলা। মানা হয়নি ডিপার্টমেন্ট অব এক্সপেন্ডিচারের দেওয়া গাইডলাইনও। বারবার শর্তের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার পরও নিরুত্তাপ থেকেছে পশ্চিমবঙ্গ। তাই টাকা যে দেওয়া হবে না, সেটা আরও একবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আসলে বাংলায় সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের রং নীল-সাদা। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের চুক্তি অনুযায়ী এই সব বিল্ডিং-এর রং হওয়ার কথা ছিল, হলুদ। শুধু তাই নয়, বাংলায় এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নাম সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কেন্দ্রের শর্ত অনুসারে নাম হওয়ার কথা ছিল আয়ুষ্মান ভারত-হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এ বিষয়ে সাফাই দিয়েছিলেন চিঠিতে। তিনি দাবি করেছিলেন, ২০১১ সাল থেকে তৈরি হওয়া প্রায় ১১ হাজার হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার লক্ষাধিক মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছে। সেই সময় থেকেই সেগুলি নীল-সাদা। এখন ১১ হাজার ভবনের রং করতে গেলে বিপুল টাকা খরচ হবে। রং ভিত্তিক ব্র্যান্ডিংয়ের শর্ত তাই বাদ দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। তবে সেই চিঠিতে চিঁড়ে ভেজেনি।
উল্লেখ্য, ব্র্যান্ডিংয়ের গাইডলাইন জারি হয়েছিল ২০১৮ সালে। বাংলা সহ সব রাজ্যেই তাতে মউ স্বাক্ষর করে। ২০২৩ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে গাইডলাইন সুনিশ্চিত করার সময়সীমা ছিল। সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও বাংলা কেন্দ্রের নির্দেশিকা না মানায় ১১ এপ্রিলের পর ৩ নভেম্বর ফের চিঠি দেয় কেন্দ্র। তাতেও কোনও লাভ হয়নি। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সেন্ট্রাল কাউন্সিলের বৈঠকেও গরহাজির ছিল বাংলা। ২০২২ সালের মে মাসে গুজরাটে যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে কোনও প্রতিনিধি পাঠায়নি একমাত্র পশ্চিমবঙ্গই।