জলপাইগুড়ি: বাংলার রাজনীতিতে তিনি আনকোরা। এলাকায় অধ্যাপক তথা শিক্ষাবিদ হিসেবে পরিচিতি থাকলেও ২০২৩ সালের উপ নির্বাচনের আগে ধূপগুড়ির বাইরে সেভাবে কেউ তাঁর নামও শোনেননি। শুধু তিনি নন, তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যকেই রাজনীতির বলয়ে দেখা যায়নি সেভাবে। চারপাশে যখন পোড় খাওয়া রাজনীতিকদের ভিড়, তার মধ্যে জলপাইগুড়ির প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায় যেন এক ব্যতিক্রম।
উপ নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার পর রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন ধূপগুড়ি গার্লস কলেজের অধ্যাপক ‘নির্মল স্যার।’ কিন্তু মাত্র এক বছরে ভরসা এতটাই বেড়েছে ঘাসফুল শিবিরের যে ধূপগুড়ি ছাড়িয়ে জলপাইগুড়ি (লোকসভা)-র ময়দানেও তাঁকেই বেছে নিয়েছে মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। একসময়ের রাজবংশী আন্দোলনের মুখ সেই নির্মল চন্দ্রের সম্পত্তি কত জানেন?
পাঁচ বছরে বেড়েছে আয়
পেশায় অধ্যাপক নির্মল চন্দ্রের আয় গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ধাপে ধাপে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ১৫ লক্ষ ৩৮ হাজার ৭৩৬ টাকা। ২০১৯-২০-তে সেই আয় বেড়ে হয় ১৯ লক্ষ ১২ হাজার ১৮০ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে আবারও বাড়ে প্রার্থীর আয়। ওই বছর তিনি আয় করেন ২২ লক্ষ ১৯ হাজার ৬৮৫ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তাঁর আয় ছিল ২৬ লক্ষ ৬৯ হাজার ৭০০ টাকা। আর গত বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে নির্মল চন্দ্রের আয় বেড়ে হয় ২৭ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭৪০ টাকা।
স্ত্রী প্রীতিকণার আয় কত?
নির্মল চন্দ্রের স্ত্রী পেশায় হাইস্কুলের শিক্ষিকা। ফলে বছরে বছরে আয় বেড়েছে তাঁরও। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে স্ত্রী প্রীতিকণা মল্লিকের আয় ছিল ৬ লক্ষ ৫৬ হাজার ১০০ টাকা। পরের বছর সেই অঙ্কটা বেড়ে হয় ৭ লক্ষ ৫৭ হাজার ২২০ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে সেই আয় বেড়ে হয় ৯ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা। ২০২১-২২ সালে তাঁর আয় আবার কিছুটা কম। অঙ্কটা হল ৯ লক্ষ ২৪ হাজার ৬৮০ টাকা। আর নির্মল চন্দ্রের হলফনামা অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষে তাঁর স্ত্রীর আয় ছিল ৯ লক্ষ ৬২ হাজার ৬৭০ টাকা।
ঠিক কত সম্পত্তির মালিক নির্মল চন্দ্র রায়?
হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে তাঁর হাতে রয়েছে নগদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আর তাঁর স্ত্রী’র হাতে রয়েছে ৪৫ হাজার ১৬০ টাকা।
কোথায়, কত টাকা সঞ্চিত আছে তৃণমূল প্রার্থীর, সেই হিসেবও রয়েছে হলফনামায়। একাধিক রাষ্ট্রায়সত্ত্ব ও বেসরকারি ব্যাঙ্কে টাকা জমা রেখেছেন তিনি। স্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবেও সঞ্চয় করেছেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এছাড়া নির্মল চন্দ্র ও প্রীতিকণা উভয়েরই দুটি করে বিমা করা আছে।
গ্যারাজে কটি গাড়ি?
সম্পত্তিতে থাকা তিনটি গাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন প্রার্থী। ২০১০ সালে তিনি একটি মারুতি সুজুকি গাড়ি কিনেছিলেন, যার দাম ছিল ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। পরে ২০২২ সালে ১২ লক্ষ ১১ হাজার ৩০১ টাকা দিয়ে একটি মাহিন্দ্রা এক্সইউভি (XUV) গাড়ি কেনেন তিনি। এছাড়াও তাঁর গ্যারাজে রয়েছে দু’টাকার একটি যান। ৬৮ হাজার ৬৬০ টাকা খরচ করে ২০২২ সালে একটি হিরো সুপার স্প্লেনডার বাইক কিনেছিলেন তিনি।
এসব ছাড়াও গয়না ও আসবাবপত্রের হিসেবও দিয়েছেন নির্মলচন্দ্র। তাঁর কাছে রয়েছে ৯০ হাজার টাকার সোনার গয়না ও তাঁর স্ত্রীর কাছে রয়েছে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার গয়না। আসবাবের মূল্য সব মিলিয়ে ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩০৩ টাকা। নির্মল চন্দ্রের নামে থাকা অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ- ৫২ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৬০ টাকা।