Behala TMC Viral Audio: তোলাবাজির স্ট্রাইক রেট, কেসের সংখ্যা, আর একটু সম্মান! বাপনের ‘মস্তানির মাপদণ্ড’!

Behala TMC Viral Audio: বেহালার চড়কতলায় বোমাবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে বাপনের বিরুদ্ধে।

| Edited By: | Updated on: Apr 14, 2022 | 10:20 PM

পাড়ায় পাড়ায় ছোটখাটো মারপিঠ লেগেই থাকে। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কথাও জানতেন অনেকেই। তবে মঙ্গলবার রাতে যা হয়েছে, তাতে গণ্ডগোলটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। রাতভর দুই গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ। গোলাগুলির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় এলাকার বাসিন্দাদের। পুলিশকে তোয়াক্কা না করেই চলে তাণ্ডব। আর সেই ঘটনার পর ক্রমশ বোঝা যাচ্ছে, এলাকায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকড় ঠিক কতটা গভীরে। তোলাবাজির কোন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তোলার ভাগ আর এলাকার দখলকে কেন্দ্র করেই যে মঙ্গলবার রাতে রণক্ষেত্রে চেহারা নিয়েছিল বেহালার চড়কতলা, তেমনটাই শোনা যাচ্ছে।

এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে একটি অডিয়ো। সেখানে যাঁর কন্ঠ শোনা যাচ্ছে, তিনি বাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন এলাকার তৃণমূল নেতারা। যে তৃণমূলের যুব সভাপতি পদে থাকা বাপনকে সদ্য বহিষ্কার করা হয়েছে তৃণমূল থেকে। সেই কথোপকথনেই স্পষ্ট কী ভাবে চলছে জোরজুলুম।  অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা, তবে তবে কথোপকথন শুনে বেশ বোঝা যাচ্ছে, লালটু গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীদের ওপর বেশ ক্ষুব্ধ বাপন। লালটু গোষ্ঠীর কোনও তৃণমূল কর্মী তাঁকে কেন সম্মান দিচ্ছে না, তা নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বাপন। তোলার টাকার ভাগাভাগি নিয়েই কথা হচ্ছে তাঁদের মধ্যে।

কী আছে সেই কথোপকথনে?

কন্ঠ ১ (বাপন): কালকে কি আনন্দ তোর সঙ্গে মদ খাচ্ছিল?

কন্ঠ ২ (স্থানীয় তৃণমূল নেতা): না তো!

কন্ঠ ১ (বাপন): আমাদের এদিককার কোনও ব্যাপারে ওরা ফোন করলে কিন্তু আসিস না।

কন্ঠ ২ (স্থানীয় তৃণমূল নেতা): কেন কী হয়েছে?

কন্ঠ ১ (বাপন): ও (সম্ভবত লালটু গোষ্ঠীর কোনও নেতা) একটু বেশি বড় হয়ে গেছে তো, ওর ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

কন্ঠ ২ (স্থানীয় তৃণমূল নেতা):  কেন কী হয়েছে?

কন্ঠ ১ (বাপন):  আরে *** একটা প্রোমোটারের কাছে টাকা পায়। ওর বাবা কোনওদিন আমার সঙ্গে মদ খেয়ে কথা বলে না। ও রাত্রে ফোন করে আমাকে বলছে, ‘পয়সাটা পেলাম না। তুমি ৩০ হাজার টাকা নিয়েছ, আমাকে কিছু দাও।’ তোর যদি ১০ হাজার, ৫ হাজার দরকার হয়, ভালভাবে চাইতিস। ফোন করে কেন বলছিস? তারপরে তো লালটু-চন্দনকে যা বলার আমি বলেছি।

দেখ  আমরা তো পুরনো ছেলে। এদের *** আজ আছে কাল নেই। আমরা কিন্তু আগেও ছিলাম, সিপিএমের পিরিয়ডে, এখনও আছি, অন্য দল এলেও থাকব।

কন্ঠ ২ (স্থানীয় তৃণমূল নেতা):  এমন তো কিছু না, ওদের বুঝিয়ে বললেই হয়। ঝগড়া করে কী হবে?

কন্ঠ ১ (বাপন): সবাইকে যদি বুঝিয়ে বলতে থাকি, আমাদের অস্তিত্ব কী থাকবে? তোকে যদি বলি মিন্টুকে বুঝিয়ে বল, তুই বলবি? বাচ্চা ছেলে *** *** ক্ষমতা নেই। কোনও ক্রাইম করল না, কেস করল না, আমার *** ৫০-৬০ টা কেস আছে। ওরা এখনও ১০ টায় পৌঁছয়নি। সবার ব্যাপার সবার সঙ্গে তুলনা করলে তো মুস্কিল।

কন্ঠ ২ (স্থানীয় তৃণমূল নেতা): লালটু দা কী বলল?

কন্ঠ ১ (বাপন): কাল রাতে বলেছি লালটুকে, গিয়ে ঘর-ফর সব জ্বালিয়ে দেব। কেন মদ খেয়ে ফোন করবে বলতো? ওর পাড়ার লোক, আমি সব করিয়ে দিয়েছি, কথা হয়েছে ৬০ হাজার টাকার। আমার ৩০ আমি নিয়েছি, তোদের ৩০ তোরা নিয়ে নে। দু-তিন বার মারবি এমনি টাকা দিয়ে দেবে। কর (মারধর) না, আমরা তো আছি।

কন্ঠ ২ (স্থানীয় তৃণমূল নেতা): বলে করিয়ে দিতে পারতিস তো?

কন্ঠ ১ (বাপন):  আমি ৩০ পাই, ৩০ লাখ নিয়েছি, কাজ করেছি, টাকা নিয়েছি। আর হাঁটুর বয়সীরা রাতে ফোন করে কেন কৈফিয়ত চাইছে। মানুষের সহ্যের সীমা আছে। সে দিন আমাদের ছেলেটাকে (বাপন গোষ্ঠীর নেতা) কি মার মারলাম, এখনও উঠতে পারছে না, দোকান দিতে পারছে না, বুকের পাঁজরে চিড় খেয়ে গেছে। ওদের হয়ে কেন মারব বল আমাদের ছেলেদের? তাও তো মারলাম। আমার ২৭ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেল। বাধ্য হয়ে মেরেছি। আর লালটু শাসন করতে পারছে না? ওরকম *** দুটো ছেলে, আমার কাছে হাজারটা আছে।

(আবারও স্বর চড়িয়ে) আমার অওকাত আছে, আমি টাকা তুলেছি। ১০ দিনে ১২১ নম্বর থেকে ২০ লাখ টাকা তুলেছি, তোরা ২ টাকা তোল। আমরা কি কিছু চাই বল? জুনিয়ররা একটু সম্মান দেবে, এটাই তো চাই। ওর বাবা *** আমাকে দাদা বলে কথা বলে।

(টাকার ব্যাখ্যা দিয়ে বাপন) প্রোমোটারের কাছ থেকে একটা ছেলে ফ্ল্যাট কিনেছে, তারপর  লকডাউন পড়ে গিয়েছে। উনি (প্রোমোটার) বললেন, ‘আমাকে মারলেও টাকা দিতে পারব না।’ আজ এসেছেন। বললাম টাকা টা দিয়ে দিন। উনি বললেন, ‘আমাকে ১-২ দিন সময় দিন। কালেকশনে বেরিয়েছি, টাকা পেলে যাকে যা দেওয়ার দিয়ে দেব।’

কন্ঠ ২ (স্থানীয় তৃণমূল নেতা): ব্যাপারটা কী হয়েছে দাঁড়া দেখি, নিজেদের মধ্যে করলে ঝগড়া লোকে হাসবে।

কন্ঠ ১ (বাপন):  মান অপমান বলে কিছু নেই বল, তোকে যদি তোর ছেলে বাবা বলে না মানে, তাহলে বাবা হয়ে কী লাভ? আমাদের সম্মানটা তো দিবি।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাপনকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করলেই, বাপন কিছুতেই মানতে পারলেন না বিপক্ষ গোষ্ঠীর অপেক্ষাকৃত নীচুস্তরের একজন নেতা, কেন রাতে তাঁকে মদ খেয়ে ফোন করবেন আর টাকা চাইবেন।  কথা শুনে বোঝা গেল, এমন জোরজুলুম চলতেই থাকে এলাকায়।

আরও পড়ুন: Viral audio : অডিয়ো : ‘১০ দিনে ২০ লক্ষ টাকা তুলেছি, তোরা ২ টাকা তোল’, চ্যালেঞ্জ তৃণমূল নেতার

Follow Us: