কলকাতা: প্রবীণ-নবীনকে একসঙ্গে পা মিলিয়ে চলার বার্তা দিয়ে বছর শেষ করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী। বলেছিলেন, ‘পুরনো চাল ভাতে বাড়ে, নতুন চাল আগে বাড়ে’। অথচ বছরের শুরুতেই তৃণমূলে নতুন-পুরনোর টানাপোড়েন। ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস। আর আজই দলের প্রবীণ-নবীনদের মধ্যে প্রকাশ্য-তরজা। একদিকে সুব্রত বক্সি, অন্যদিকে কুণাল ঘোষ। দলের অন্দরেই বলা হয়, একজন প্রবীণ তৃণমূলের মুখ, অন্যজন নবীনের। প্রথমজন দলের রাজ্য সভাপতি, দ্বিতীয়জন মুখপাত্র। আর তাঁদের তরজার ‘ভরকেন্দ্র’ দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সুব্রত বক্সি বলেন, “বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে যে নির্বাচন আসছে, এই নির্বাচনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যদি লড়াই করেন, নিশ্চিতভাবে আমার ধারণা তিনি লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছিয়ে যাবেন না। যদি লড়াই করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই লড়াই করবেন।”
এদিকে বক্সির এই মন্তব্যের পরই কুণাল ঘোষের নিশানায় দলের রাজ্য সভাপতি। কুণাল ঘোষ বলেন, “অভিষেক নিজেই যথা সময়ে তাঁর বক্তব্য জানাবেন। তবে অভিষেক পিছিয়ে যাবেন না, এই পিছিয়ে শব্দটা অভিষেকের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হতে পারে না। বাক্য গঠনটা পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন।”
এদিনই সুব্রত বক্সি দাবি করেন, কেউ চাইলেও দলে ভাঙন ধরাতে পারবেন না। দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যৌথ লড়াইয়েই এগিয়ে যাবে। এ নিয়েই এদিন কুণালের খোঁচা, “কিছু কিছু দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলে অকারণ এই বিভাজনটা আমরা হতে দিচ্ছি। আমি শুনেছি পুজোর আগে একবার মমতাদিকে বলা হল, ‘দিদি আপনি নামুন সবাই বলছে আপনি হারিয়ে যাচ্ছেন’। কেন বলা হবে, কীসের জন্য বলা হবে।” কুণালের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি কখনও হারিয়ে যেতে পারেন? বাংলার মানুষের মনের মণিকোঠায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, পায়ের চোটের কারণে এবার বাড়ি থেকে ভার্চুয়ালি পুজোর উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরকমই একটি পুজোর উদ্বোধন চলাকালীন সুব্রত বক্সি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেন, “আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। কারণ বাংলার মানুষ আপনার দিকে তাকিয়ে আছে। স্বাভাবিকভাবেই বাংলা মনে করছে কোথাও কোথাও মমতাদি হারিয়ে যাচ্ছেন। আপনি আবার চলতে আরম্ভ করলে আমরা আবার বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এগিয়ে যেতে পারব।”