কালিয়াগঞ্জ: উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে (Kaliaganj) একের পর এক বিতর্ক। কালিয়াগঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে রাজ্যের শাসক শিবিরকে। এরই মধ্যে আবার নতুন অস্বস্তি। অভিযোগ উঠেছে, টাকার অভাবে অ্য়াম্বুলেন্স ভাড়া করতে পারেননি অসহায় এক বাবা। পাঁচ মাসের সন্তানের দেহ (Child Death) ব্যাগের মধ্যেই পুড়ে বাড়িতে নিয়ে আসতে হয়েছে তাঁকে। এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রবিবার রাতেই দেখা করেছেন পরিবারের সঙ্গে। তৃণমূল শিবিরের তরফেও পরিবারের সঙ্গে দেখা করা হয়েছে। পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আর এবার গোটা ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর বক্তব্য, ওই অসহায় ব্যক্তির হাতে তো ফোন ছিল। তিনি যখন শিশুটির দেহ নিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করছিলেন, তখন নিশ্চয়ই আত্মীয়-পরিজন, পাড়া-প্রতিবেশীদেরও প্রশ্ন করেছিলেন। সেই কথা বলেই কুণালের প্রশ্ন, ‘পাড়া প্রতিবেশীরা কি অপেক্ষা করছিলেন কখন ব্রেকিং নিউজ় হবে আর সরকারকে গালাগাল দেবেন!’
তৃণমূল মুখপাত্র বলছেন, কালিয়াগঞ্জে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা অত্যন্ত খারাপ এবং এক বিচ্ছিন্ন ঘটনা। শিশু চিকিৎসায় এ রাজ্য নজিরবিহীন উন্নতি করেছে বলেও দাবি কুণালের। বললেন, ‘বাংলায় শিশু মৃত্যু কত কমেছে , তা একবারও তো বললেন না।’ শিশুর দেহ নিয়ে আসার জন্য টাকার অভাবে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছিল না বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি নিয়েও মুখ খুললেন কুণাল। তাঁর বক্তব্য, ‘অ্যাম্বুলেন্স চিকিৎসাধীন রোগীর জন্য, মৃতদেহের জন্য নয়।’
কুণাল বলেন, ‘যদি টাকার অভাবে ডেডবডি কেরিয়ার না পেয়ে থাকেন, তা দুঃখজনক। কিন্তু সরকারিভাবে না চেয়ে, বেসরকারিভাবে কে কোথায় চাইছেন, তার দায় সরকার নিতে পারে না। এই ব্যক্তি অসহায়ভাবে বাচ্চাকে নিয়ে আসছিলেন। তিনি তো তাঁর এলাকার আত্মীয়-পরিজনদের সমস্যার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমি কোথাও দেখতে পাচ্ছি না, তাঁরা ওই ব্যক্তিকে কী পরামর্শ দিলেন।’
কুণাল ঘোষের এদিনের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, ‘প্রশাসনের ব্যর্থতাকে ঢাকা দেওয়ার জন্য উনি ছয় মাসের সন্তানহারা পরিবারের পরিজনদের দিকে দোষ চাপাচ্ছেন? এদের লজ্জাও নেই। যাঁর সন্তান মারা গিয়েছে, সে দীর্ঘদিন ধরে কেরলে কাজ করেন। এখানে কাজ নেই। এখানকার মানুষ বাইরে কাজ করতে যান পরিবারকে প্রতিপালন করার জন্য।’