
কলকাতা: পুজোর মাস পড়ে গেলেও, দুর্যোগের ফাঁড়া কাটছে না বাংলার আকাশ থেকে। বাংলা- ওড়িশা উপকূলে ফের নিম্নচাপের আশঙ্কা। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হবে। হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণ বৃষ্টি হবে দুই বঙ্গেই। বিপদের আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে মৎসজীবীদের।
আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে ফের নিম্নচাপের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। উত্তর ওড়িশা উপকূলে ও উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় রয়েছে। এটি দক্ষিণ দিকে ঝুঁকে রয়েছে। আগামীকাল, ২ সেপ্টেম্বর এই ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হবে।
আজ উত্তর ও দক্ষিণ-দুই বঙ্গেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার দক্ষিণবঙ্গে আকাশ মূলত আংশিক মেঘলা থাকবে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্তভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ, সোমবার সকাল থেকে আর্দ্রতা জনিত অস্বস্তি থাকবে কলকাতা জুড়ে। বেলা যত বাড়বে, তত অস্বস্তিও বাড়বে। আকাশ মূলত আংশিক মেঘলা থাকবে। তবে বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। কয়েক পশলা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়া সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকবে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে।
আজ কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৮.২ ডিগ্রি । গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৫ ডিগ্রি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৬৩ থেকে ৯৪ শতাংশ।
আগামিকাল, মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলায়। পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি এবং হাওড়া জেলাতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলাতেও।
দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় আর্দ্রতা জনিত অস্বস্তিও বাড়বে। উপকূল ও ওড়িশা সংলগ্ন জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো বাতাস বইতে পারে।
মঙ্গলবার বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়বে। ভারী বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলাতে। পশ্চিম মেদিনীপুর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা পুরুলিয়া বাঁকুড়া পূর্ব বর্ধমান হুগলি এবং হাওড়া জেলাতে বাড়ি বৃষ্টির আশঙ্কা। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকবে কলকাতা হাওড়া হুগলি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা নদিয়া পূর্ব বর্ধমান পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলাতে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস হইবে।
বুধবারেও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। সব জেলাতেই বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির বেশি সম্ভাবনা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো বাতাস বইবে বলেই পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি চলবে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূম জেলাতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে উপকূল ও ওড়িশা সংলগ্ন জেলাগুলিতে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইবে।
তবে শুক্রবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে।
উত্তরবঙ্গেও আজ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আজ মালদা, দুই দিনাজপুরে বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। বুধবার থেকে বৃষ্টি কমবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে।
আজ থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। তবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে। বৃষ্টি না হলে, আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি, এবং তার সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস বইবে মালদা এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতে।
মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলাতে বিক্ষিপ্তভাবে দু এক জায়গায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি জেলাতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো বাতাস বইবে।
বুধবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। উপরের পাঁচ জেলার দু-এক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত একই পরিস্থিতি থাকবে। তবে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় আর্দ্রতা জনিত অস্বস্তি হতে পারে।