কলকাতা: গরুপাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) চাঞ্চল্যকর মোড়। অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সেহেগল হোসেনকে গ্রেফতার করল সিবিআই (CBI)। এনামুল হকের কাছ থেকে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সেহেগলের বিরুদ্ধে। গরু পাচার মামলায় বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছিল সেহেগলকে। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সেখানে। সূত্রের খবর, এরপরই তাঁর বক্তব্যে অসঙ্গতি পাওয়ায় গ্রেফতার করা হয়। এদিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ নিজাম প্যালেসে হাজির হন সেহেগল। সঙ্গে ছিলেন তাঁর আইনজীবী। নিজাম প্যালেসে পৌঁছেই সোজা ১৪ তলায় দুর্নীতি দমন শাখার দফতরে চলে যান তিনি। সেই থেকে চলছিল জিজ্ঞাসাবাদ। সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সেহেগল হোসেন অনুব্রত মণ্ডলের ছায়াসঙ্গী। তাঁর এই গ্রেফতারি বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতির চাপ কিছুটা বাড়াল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সিবিআই সূত্রে খবর, এদিনের গ্রেফতারির আগে একাধিক বিষয় সিবিআই সেহেগলের কাছে জানতে চান। যার সদুত্তর দিতে পারেননি সেহেগল। তাঁর আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তিরও খোঁজ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার তাঁকে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হবে। সেহেগলের এই গ্রেফতারিতে তদন্তকারীরা যে অনুব্রত মণ্ডলের অনেকটা কাছে পৌঁছে গেল এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, অনুব্রত মণ্ডল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোথায় যেতেন, কী করতেন, কাদের সঙ্গে ওঠাবসা করতেন, সব খবরই সেহেগল হোসেনের কাছে থাকত। এমনও শোনা যায়, বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের যেমন দাপট, তেমনই ডাকসাইটে ছিলেন এই সেহেগল হোসেনও।
কেন সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করল? সূত্রের খবর, গরু পাচারকাণ্ডের যিনি মূল অভিযুক্ত, সেই এনামুল হক সিবিআইয়ের কাছে যে বয়ানে জানিয়েছেন, গরু পাচারে বীরভূমকে করিডর হিসাবে ব্যবহার করতে গেলে তাঁকে মোটা টাকা দিতে হত। আর সেই টাকা এই সেহেগল হোসেনই নিতেন বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এর সপক্ষে বেশ কিছু তথ্য প্রমাণও সিবিআইয়ের হাতে এসেছে। সম্প্রতি সেহেগলের বাড়িতেও সিবিআই গোয়েন্দারা অভিযান চালায়। সেখান থেকে প্রচুর দলিল বাজেয়াপ্ত হয়।
কিন্তু সেহেগল হোসেন সেই দলিল কীসের বিনিময়ে কিনলেন, তার হিসাব দিতে পারেননি বলে সূত্রের খবর। এরপরই বাজেয়াপ্ত দলিলগুলি স্ক্রুটিনি করা হয়। তার ভিত্তিতেই তলব করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার। এদিনও জানতে চাওয়া হয় এই বিপুল সম্পত্তি ক্রয়ের টাকা তিনি কোথা থেকে পেলেন। এরপরই বাজেয়াপ্ত দলিলগুলি স্ক্রুটিনি করা হয়। তার ভিত্তিতেই তলব করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার। এদিনও জানতে চাওয়া হয় এই বিপুল সম্পত্তি ক্রয়ের টাকা তিনি কোথা থেকে পেলেন। গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তে সম্প্রতি দুর্গাপুরে সিবিআইয়ের ক্যাম্প অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সেহেগল হোসেন। এরপরই চলতি সপ্তাহে দু’দিন মুর্শিদাবাদের ডোমকলে সেহেগলের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই।