BC Roy Hospital: একদিনে জ্বর-শ্বাসকষ্টে ৭ শিশু শেষ, অথচ ‘নিয়ম মেনে’ বিসি রায়ে রবিবার বন্ধই রইল ফিভার ক্লিনিক
Adenoviruses: বিভিন্ন জেলা থেকে এই হাসপাতালের রেফার করা হচ্ছে বাচ্চাদের। সেখানে এই ফিভার ক্লিনিক বন্ধ থাকায় খুব স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগের মধ্যে শিশুর পরিবার।
কলকাতা: হাসপাতালের বাইরে মাইক লাগানো রয়েছে। তাতে থেকে থেকেই ঘোষণা, অমুকের বাড়ির লোক নিকু ওয়ার্ডে দেখা করুন। ডাক এলেই শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে বাড়ির লোকজনের। এই বুঝি বলবে, বাচ্চাটা আর নেই। সূত্রের খবর, রবিবার ভোর থেকে সন্ধ্যা ৭টা অবধি পাওয়া খবরে ৭ জন শিশু মারা (Child Death) গিয়েছে বিসি রায় হাসপাতালে। আরও কত ছোট্ট প্রাণ যে লড়াই করছে, তার হিসাব নেই। উপসর্গ সকলেরই কম বেশি এক। হাই ফিভার, শ্বাস নিতে পারছে না ছোট্ট বুকের খাঁচাটা। এরইমধ্যে রবিবার অবাক করা ছবি দেখা গেল এই হাসপাতালে। জ্বর নিয়ে মা-বাবার কোলে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষারত শিশুরা। তারই মধ্যে বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিক। ফিভার ক্লিনিক বহির্বিভাগের মতো। ছুটির দিনে বন্ধ থাকে। রবিবার বা ছুটির দিনে অসুস্থতা নিয়ে কেউ এলে এমার্জেন্সিতে দেখাতে হয়, এটাই দস্তুর। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন শিশুর আত্মীয়দের। এমন পরিস্থিতি যেখানে, সেখানে নিয়মের বদল কি আনা যেত না? কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শিশুদের পরিবারের লোকেরা। কেউ দুঃসংবাদে, কেউ আবার বিপদের আশঙ্কায়। ক্রমেই বিসি রায়ের চিত্রটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।
বিভিন্ন জেলা থেকে এই হাসপাতালের রেফার করা হচ্ছে বাচ্চাদের। সেখানে এই ফিভার ক্লিনিক বন্ধ থাকায় খুব স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগের মধ্যে শিশুর পরিবার। আড়াই বছরের শিশুকে জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন মা, বাবা। প্রথমে পিকুতে রাখা হয়েছিল। পাঁচদিন পর সুস্থ হয়ে গিয়েছে, বলেছিলেন ডাক্তাররাই। আশ্বাস দিয়েছিলেন, মা বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। ২৫ দিনের মাথায় সেই শিশুরই মৃত্যুর খবর শোনাল হাসপাতাল।
রবিবার সকাল থেকে রোগী নিয়ে দলে দলে বাড়ির লোকজন এসেছেন বিসি রায় হাসপাতালে। ফিভার ক্লিনিকের সামনে বসে রয়েছেন সারাদিন। এদিকে আজ যে রবিবার। তাই তা বন্ধই থেকে গিয়েছে। এর আগে ব্লাড ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে এই ছবি। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ব্লাড ব্যাঙ্ক খোলা থাকার নিয়ম। এদিকে সন্ধ্যার পর এক আটদিনের সদ্যোজাতর সময়ে রক্ত না পেয়ে মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সেই খবর প্রকাশিত হয়েছিল টিভি নাইন বাংলায়। এরপরই ২৪ ঘণ্টার জন্য ব্লাড ব্যাঙ্ক পরিষেবা চালু করা হল বিসি রায় শিশু হাসপাতালে।