
কলকাতা: বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) শক্তি বাড়াচ্ছে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ। মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে এই নিম্নচাপেরই গভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তেমনটা হলে ঘূর্ণিঝড় মোখার জন্মের আরও এক ধাপ এগোবে আবহাওয়া। সেক্ষেত্রে বুধবারই নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখার জন্ম হওয়ার কথা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ১২ মে পর্যন্ত পূর্ব উপকূল অভিমুখে এগোবে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোখা। তারপর উত্তর-পূর্বে বাঁক নেবে ঘূর্ণিঝড়। এগোবে বাংলাদেশ-মায়ানমারের দিকে। তবে আজ ৯ মে মঙ্গলবার তাপপ্রবাহের সতর্কতা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ৮ জেলায়। বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুরে।
বৃহস্পতিবার এই ঘূর্ণিঝড় গতিপথ পরিবর্তন করবে। গতিপথ পরিবর্তন করে উত্তর বঙ্গোপসাগরে যায় কি না সে দিকেই নজর আবহাওয়াবিদদের। যদিও আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবারের পর ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ হবে বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলের দিকে। এই ঝড়ের ল্যান্ডফল কোথায় হবে অর্থাৎ ভূভাগের কোথায় আছড়ে পড়বে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই ল্যান্ডফলের উপরই নির্ভর করবে বাংলার বরাতে দুর্যোগের দুর্ভোগ কতটা। আবহবিদরা বলছেন, মায়ানমারে এই ঝড়ের ল্যান্ডফল হলে বাংলায় কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে চট্টগ্রামে ল্যান্ডফল হলে রাজ্যের উপকূলের আকাশ মেঘলা হতে পারে।
আবার বরিশালে যদি মোখার ল্যান্ডফল হয় তাহলে সুন্দরবন অঞ্চলে ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে। যদিও ১২ মে পর্যন্ত বাংলায় কোনও সতর্কতা নেই। আপাতত তিন দিন তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায়। মূলত পরিষ্কার আকাশ কলকাতায়। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ২৫ শতাংশের কম। বেলা বাড়লে লু বইবে। মঙ্গলবার সকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি। আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ২৩ থেকে ৮৪ শতাংশ।
১০ মে বুধবারও তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতে। কলকাতা-সহ উপকূল এবং পশ্চিমের সব জেলাতেই তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা। বুধবার তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে উত্তরবঙ্গের মালদা উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। ১১ মে বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা থাকছে দক্ষিণবঙ্গের ৬ জেলার জন্য। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ পশ্চিমের জেলাগুলিতে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হতেই জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস সেই দিকে ছুটছে। বাংলায় সেই শূন্যস্থান পূরণ করছে, উত্তর পশ্চিমের গরম হাওয়া। আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা সেই গরম হওয়ার দাপট থাকবে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।মোকার পরোক্ষ প্রভাবে গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া। চারদিনে আপেক্ষিক আর্দ্রতা কমেছে ২৫ শতাংশের বেশি। তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেড়েছে।