কলকাতা: বিকাল থেকে টান টান উত্তেজনা। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে কোনওমতেই রাজি নয় নবান্ন। অন্যদিকে নো লাইভ, নো ডিসকাশনে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। এরইমধ্যে কেন ডাক্তারদের এই দাবি মানা যাচ্ছে না সে পক্ষে কিছু যুক্তিও দিতে দেখা গেল মুখ্যসচিবকে। যুক্তি দিলেন ডিজি রাজীব কুমারও। মুখ্যসচিব বলেন, যেটা মানুষকে সরকার জানাতে চায় সেইটুকুই লাইভ স্টিমিং করা হয়। আলোচনার সবটা নয়। ডিজিকে পাশে নিয়ে মুখ্যসচিব বুঝিয়ে দেন বৈঠক মানুষকে জানাতে সরকার লাইভ করবে না। এটা সম্ভব নয়। সাফ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আলোচনার জন্য সভাঘরে উপস্থিত রয়েছেন প্রায় দেড় ঘন্টা। এটারও একটা লিমিট রয়েছে।” সব মিলিয়ে যখন কী হয় কী হয় অবস্থা তখন আসরে নামলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খানিক ঝাঁঝাল স্বরেই বললেন, “পৌনে ৫টা থেকে প্রায় ৭ টা বাজে। দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করছিলাম যে আমাদের চিকিৎসক ভাই বোনেদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। আমরাই চিঠি দিয়েছিলাম। সেই কারণেই বৈঠক ডাকা হয়েছিলাম। কিন্তু ২ ঘণ্টা পরেও দেখলাম তাঁরা আসছেন না। কোনো শর্ত নিয়ে নয়। খোলা মনে। কথা বললে সমস্যার সমাধান হয়। গত দুদিন ধরে আমরা অপেক্ষা করেছিলাম। আমাদের কাজ ক্ষমা করে দেওয়া। আমরা ক্ষমা করে দিয়েছি। আজও তাঁরা চিঠি পাঠান। সিএস জানান, ওপেন মিটিং।”
এমনকী কেন লাইভ স্ট্রিমিংয়ে অনুমতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাও বারবার বোঝাতে দেখা গেল তাঁকে। বারবার শোনা গেল সুপ্রিম কোর্টের প্রসঙ্গও। সাফ বলেন, “আমরা তিনটি ক্যামেরা রেখেছিলাম ভিডিয়ো করার জন্য। আমরা পরে শেয়ার করে দিতাম। সুপ্রিম কোর্ট লাইভ দেখাতে পারে। আমরা পারি না। এখন এই কেস কোর্টের আওতায় রয়েছে। ফলে তাঁর গণ্ডির মধ্যেই থাকতে হবে। বিচারধীন কেস এটা। সবটা টেলিকাস্ট করলে আমাদের দায়বদ্ধতা থাকবে না? আমরা এমন কিছু করতে চাইনি। একবার আমরা লাইভ সম্প্রচার করেছিলাম। ওরা ঠিকই বলছেন । কিন্তু তথন কেসটা সুপ্রিম কোর্টের আওতায় ছিল না। সিবিআই তদন্ত করছিল না।”
একইসঙ্গে আন্দোলনের জেরে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অচলাবস্থা নিয়েও এদিন সরব হন মমতা। দায়িত্বও মনে করালেন ডাক্তারদের। বললেন, “আমরা বলেছিলাম ১৫ জন আসতে। কিন্তু ৩৪ জন এসেছিলেন। কিন্তু সভাঘরে ঢুকলেন না।দু দিন ধরে আমরা দু ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলাম। আমি আর চন্দ্রিমা ছাড়া কোনও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের ডাকিনি। কিন্তু, ২৭ জন মারা গিয়েছেন। ৩২ দিন ধরে চিকিৎসা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।”