কলকাতা: আগুনের লেলিহান শিখা দখল নিয়েছে গোটা শরীরের। ঝুলছে চামড়া। এই অবস্থাতেই দরজায় একের পর এক লাথি। শোরগোল শুনে ছুটে এলেন প্রতিবেশীরা। ততক্ষণে প্রায় সব শেষ। জ্বলন্ত অবস্থাতেই দরজার সামনেই লুটিয়ে পড়েছেন মহিলা। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসারত অবস্থাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। যদিও তার আগে তাঁর মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নিয়ে ফেলেছে পুলিশ। তাতেই উঠে এল চমকপ্রদ তথ্য়। সোমবার রাতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে বেহালার হরিদেবপুর ব্যানার্জি পাড়ায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই এলাকার এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ওই মহিলার। বিগত কয়েকদিন ধরে নানা বিষয়ে তাঁদের সম্পর্কে নানা টানাপোড়েন দেখা যাচ্ছিল বলে খবর। ওই ব্যক্তি মহিলার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এরইমধ্যে সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সটান প্রেমিকের বাড়ি চলে যান ওই মহিলা। বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন। দরজা না খুললে পাড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বছর পয়তাল্লিশের ওই মহিলা।
ঘটনা দেখে স্থানীয়রাই ১০০ ডায়াল করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ইতিমধ্যে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ৪৩৬, ৩০৬, ১১৬ আইপিসি অ্যাক্টে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত সুবীরের কোনও খোঁজ পায়নি পুলিশ।
অভিযুক্ত ব্যক্তির এক প্রতিবেশী বলেন, “কাল রাত সাড়ে আটটা নাগাদ হঠাৎ দেখি একটা বিকট আওয়াজ হচ্ছে। কাছে এসে দেখি একটা মহিলা দাউদাউ করে জ্বলছে। গায়ের চামড়া পুরো ঝুলে গিয়েছে। প্রচুর ধোঁয়া ঢাকা পড়ে গিয়েছে এলাকা। ওই অবস্থাতেই ওই মহিলা একটা বাড়ির দরজায় জোর ধাক্কা দিতে থাকে। তখন ঘরের ভিতর থেকে কেউ বলতে থাকে খুলবে না খুলবে না। তখন ওই জ্বলন্ত মহিলা বাড়ির নীচে বসে ছিল অনেকক্ষণ। আমার মনে হয় উনি নিজেই আগুন লাগিয়েছেন। তারপর তো ঘটনার কথা শুনে পুলিশ এল।”