
কলকাতা: দাড়িভিট-কাণ্ডের শুনানি শেষ কলকাতা হাইকোর্টে। রায়দান স্থগিত রাখলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়েই প্রাণ হারিয়েছিলেন ইসলামপুরের দাড়িভিট স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্র। প্রায় সাড়ে ৪ বছর আগে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাপস ও রাজেশ নামে ওই দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় তোলপাড় হয় রাজ্য-রাজনীতি। সিআইডি সেই মামলার তদন্ত করছিল। সোমবার হাইকোর্টে সেই মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি পূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছ কি না, সেই প্রশ্নও করেছেন বিচারপতি।
বিচারপতি এদিন রাজ্যকে বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ভুলে যান। এখনও কি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে? চার বছর ধরে টানা মামলা চলছে। এখনও ক্ষতিপূরণ নিয়ে আবার ইনস্ট্রাকশন দিতে হবে?’
গোটা ঘটনা ক্রমে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রেখেছে বলেএ দিন মন্তব্য করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। বিচারপতি বলেন, ‘দূর থেকে গোটা ঘটনাক্রম দেখছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।’ কমিশন সম্পর্কে বিচারপতির মন্তব্য, ‘তারা ডি এম, এস পি-কে এতটাই ভরসা করে যে তাদের থেকে রিপোর্ট চেয়েই দায়িত্ব সেরেছে। এটাই তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার জন্য যথেষ্ট।’ তিনি আরও বলেন, ‘২০২০ সালে না হয় কমিশনের সদস্য ছিল না। কিন্তু ২০১৮ থেকে দু বছর ধরে কী করেছে রাজ্য কমিশন? জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বরং লোক পাঠিয়ে পরে থেকে একটা রিপোর্ট তৈরি করেছে। তাদের সেই রিপোর্ট নিয়ে যতই বিতর্ক হোক, তবু তারা সেটা করেছে। কিন্তু আপনারা কী করেছেন?’
তদন্তকারী অফিসার যে অভিযোগকারীদের কাছে গিয়েছিলেন, সেই প্রমাণ কোথায় আছে, সেই প্রশ্নও করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, অভিযোগকারীরা যে তদন্তকারীদের সহযোগিতা করেননি, কোনও নথিতে সেটার প্রমাণ নেই। গ্রামের লোকের অসহযোগিতা আর যে পরিবারগুলি ক্ষতিগ্রস্ত তাদের অসহযোগিতা, দুটো এক নয়।
উল্লেখ্য, অঙ্ক ও বিজ্ঞানের শিক্ষকের বদলে স্কুলে উর্দু ও সংস্কৃত শিক্ষক নিয়োগ কেন করা হল, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই নিয়েই দাড়িভিট স্কুলে আন্দোলন হয় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। সেই ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়।