
শরীরের পুষ্টির জোগান দিতে ড্রাই ফ্রুটস বা শুকনো ফলের কোনও বিকল্প নেই। বুদ্ধি বাড়াতে আমন্ড (বাদাম) থেকে শুরু করে রক্তস্বল্পতা দূর করতে কিসমিস—প্রত্যেকটি ফলেরই রয়েছে নিজস্ব গুণাগুণ। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে, এই ‘সুপারফুড’গুলো খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় এবং পরিমাণ রয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, ভুল সময়ে বা ভুল পদ্ধতিতে ড্রাই ফ্রুটস খেলে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন? হলিস্টিক ডায়েটিশিয়ান এবং নিউট্রিশনিস্ট ডঃ গীতিকা চোপড়ার মতে, ড্রাই ফ্রুটস হল নিউট্রিশনের ‘পাওয়ার হাউস’। তবে এর কার্যকারিতা নির্ভর করে ব্যক্তির শরীরের ধরন, খাওয়ার সময় এবং পরিমাণের ওপর। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন ড্রাই ফ্রুট কীভাবে খাওয়া উচিত:
১. ভিটামিন ই-তে ভরপুর আমন্ড বা কাঠবাদাম আমন্ডে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেসিয়াম।
সঠিক নিয়ম: রাতে জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খোসা ছাড়িয়ে খান। এতে ফাইটিক অ্যাসিড কমে যায় এবং পুষ্টি শরীরে দ্রুত শোষিত হয়।
উপকারিতা: এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।
পরিমাণ: দিনে ৪ থেকে ৬টি বাদামই যথেষ্ট।
২. কাজু বাদাম খাওয়ার সেরা সময়
কাজুতে ক্যালোরি এবং হেলদি ফ্যাট বেশি থাকে।
সঠিক নিয়ম: কাজু খাওয়ার সেরা সময় হলো সকাল বা দুপুর। কারণ এই সময় শরীর সবথেকে বেশি ক্যালোরি পোড়াতে পারে।
সতর্কতা: রাতে কাজু খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে এবং হজমের সমস্যা বা ব্লোটিং হতে পারে।
৩. মগজাস্ত্রের জন্য আখরোট
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের সেরা উৎস হলো আখরোট। এটি হার্ট এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
সঠিক নিয়ম: দুপুর ১২টার আগে এটি খাওয়া বৈজ্ঞানিকভাবে সবথেকে কার্যকর।
উপকারিতা: মানসিক চাপ কমাতে এবং হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় এটি অদ্বিতীয়।
পরিমাণ: প্রতিদিন ১ থেকে ২টি আখরোট।
৪. পেটের সমস্যায় মহৌষধ ডুমুর বা আঞ্জির
আঞ্জির বা ডুমুরে রয়েছে প্রচুর ফাইবার ও প্রাকৃতিক শর্করা।
সঠিক নিয়ম: কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগলে রাতে ১-২টি আঞ্জির জলে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে খালি পেটে খান। এতে পেট পরিষ্কার থাকে এবং হজম শক্তি বাড়ে।
৫. রক্ত বাড়াবে কিসমিস
কিসমিস হলো আয়রন এবং গ্লুকোজের ভাণ্ডার।
সঠিক নিয়ম: রাতে ৮-১০টি কিসমিস জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া যায়।
সতর্কতা: যারা ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের সমস্যায় ভুগছেন, তারা কিসমিস খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মনে রাখবেন, ড্রাই ফ্রুটস পুষ্টিকর হলেও এতে ক্যালোরি বেশি থাকে। তাই ডায়েটে যোগ করার আগে নিজের শারীরিক অবস্থা বুঝে পরিমাণ ঠিক করা জরুরি।