
শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পারদ নামতে শুরু করেছে, আর তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বায়ুদূষণ। এই পরিস্থিতি শরীরকে দ্রুত অসুস্থ করে তুলতে পারে। আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়ে সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর বা পেশির ব্যথার মতো সমস্যা ঘরে ঘরে দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি তুলনামূলক কম হওয়ায় তাঁরাই সব থেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকদের মতে, এই মরসুমে সুস্থ থাকতে সঠিক খাদ্যাভ্যাসই হল একমাত্র রক্ষাকবচ।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন? আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডঃ জি.এস. তোমর জানিয়েছেন, শীতে সংক্রমণের পাশাপাশি দূষণের কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। আমাদের হাতের কাছে থাকা ৫টি বিশেষ খাবার শীতের কড়া ঠান্ডাতেও আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
১. আমলকীর ম্যাজিক: অনেকেই মনে করেন আমলকী ঠান্ডা, তাই খেলে কাশি হবে। কিন্তু বাস্তবে আমলকী ভিটামিন সি-এর খনি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। শীতের সকালে আমলকীর রস, আচার বা চাটনি ডায়েটে রাখলে তা টনিকের মতো কাজ করবে।
২. তুলসীর গুণ: তুলসী পাতা শরীরকে ভেতর থেকে গরম রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে হালকা গরম জলের সঙ্গে কয়েকটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে বা তুলসী পাতা দিয়ে চা বানিয়ে খেলে সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৩. হলুদ ও গোলমরিচ দুধ: ঠাকুমা-দিদিমাদের আমল থেকেই রাতে শোওয়ার আগে হলুদ-দুধ খাওয়ার রেওয়াজ চলে আসছে। এক গ্লাস গরম দুধে কাঁচা হলুদ এবং এক চিমটি গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুঙ্গে থাকে। যারা দুধ খেতে পারেন না, তাঁরা জলে হলুদ ফুটিয়ে ‘হলুদ চা’ হিসেবেও এটি পান করতে পারেন।
৪. গিলোয় বা গুলঞ্চ: আয়ুর্বেদে গুলঞ্চকে বলা হয় মহৌষধ। বিশেষ করে জ্বর সারাতে এবং ইমিউনিটি বাড়াতে এর জুড়ি মেলা ভার। গুলঞ্চ লতা জলে ফুটিয়ে সেটা খেলে শরীরে রোগজীবাণু বাসা বাঁধতে পারে না।
৫. প্রতিদিন সকালে কাঠবাদাম: শরীর গরম রাখতে এবং মস্তিষ্ক সচল রাখতে রোজ সকালে ৩-৪টি ভেজানো কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি কেবল ইমিউনিটি বাড়ায় না, শীতকালীন শুষ্ক ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতেও সাহায্য করে।
কী কী এড়িয়ে চলবেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে সুস্থ থাকতে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় (বেশি চা-কফি), অতিরিক্ত চিনি এবং জঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকা জরুরি। এই খাবারগুলো শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়।