সইফ আলি খান—এই নামটা শুনলে মনসুর আলি খান পতৌদি, থুড়ি, ‘টাইগার’-পুত্রের দু’টো ইমেজ ঘুরপাক খায় নেটিজেনদের মাথায়। এক, অভিনেতা এবং দুই, ফ্যাশনিস্তা। প্রয়াত বলিউড পরিচালক প্রদীপ সরকারের ছবি ‘পরিণীতা’য় সইফের ‘বাঙালি লুক’ সকলের স্মৃতিতে আজও উজ্জ্বল। বাটিকের পাঞ্জাবি হোক অথবা বাঙালির গিলে করা সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা দু’টোতেই খাঁটি বাঙালিয়ানা ধড়া পড়েছিল। পরবর্তী সময়ে স্যোশাল মিডিয়ার বিভিন্ন ছবিতে সইফকে বেশিরভাগ সময় সাদা পাঞ্জাবি-পাজামাতেই দেখা গিয়েছে। সঙ্গে মানানসই কোলাপুরি চপ্পল। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। এহেন ‘বাঙালি লুক’-এর সইফ ফেভারিট নাইনটিজ় কিড থেকে শুরু করে মিলেনিয়াল এবং জেন জ়েড-দেরও।
সইফের আলি খানের সঙ্গে বাংলার একটা যোগ তো রয়েছেই। মা শর্মিলা ঠাকুরের থেকে রুচিবোধ পেয়েছেন ‘টাইগার’-সন্তান। তাই বাঙালি পোশাক তাঁর পছন্দ। কিন্তু হঠাৎ সইফের ‘বাঙালি লুক’ নিয়ে এতো কথা হচ্ছে কেন? কারণ সম্প্রতি বাংলার ফ্যাশন ডিজাইনার অভিষেক রায়কে দিয়ে সইফ নিজের কিছু পোশাক ডিজাইন করিয়েছেন। সামনেই আসছে দীপাবলি। সারা দেশ জুড়ে পালিত হয় আলোর উৎসব দিওয়ালি। সেজন্য অভিষেককে সাত থেকে আটটি পোশাক তৈরির দায়িত্ব দিয়েছেন সইফ। অভিষেক রায়ের কথায়, “আগামী দিনে আরও কিছু পোশাক বানাবেন সইফ, যে পোশাকে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া রয়েছে। দীপাবলির দিন এই বাঙালি পোশাকেই সাজেশন ছোটে নবাব।” কী ধরনের পাঞ্জাবি থাকছে ‘ছোটে নবাব’-এর জন্য়? উত্তরে কলকাতার ডিজাইনার বললেন, “পাজামা-পাঞ্জাবি থাকছে; গলার কাছে সূক্ষ্ম কাজ রয়েছে। সাদা ও উজ্জ্বল কিছু রঙের ব্যবহার রয়েছে তাতে। এছাড়াও বাঙালির অঙ্গরাক্ষা স্টাইলের পাঞ্জাবি আর ধুতিও থাকছে। পাঞ্জাবি ও ধুতির পাড়ে থাকছে কলকা।” কয়েকটি নমুনাও পাঠকদের জন্য দিয়েছেন ডিজাইনার অভিষেক। এছাড়াও বাড়িতে রোজকার জীবনে পাঞ্জাবি-পাজামা পরেন সইফ। তাই তিনি বেশ কিছু পাঞ্জাবি-পাজামার সেটও তৈরি করতে দিয়েছেন তিনি অভিষেককে।
নববর্ষ হোক বা ভাইদুজ, সবেতে ঘরোয়া পাঞ্জাবিতেই দেখা গিয়েছে সইফকে। প্রসঙ্গত, সিনেমার পাশাপাশি ‘তাণ্ডব’ ও ‘সেক্রেড গেমস’-এ সইফের অভিনয় দর্শকদের মনে ধরেছে। বাঙালি স্টাইলের পাঞ্জাবি নিজের জন্য করতে দিলেও এখনও পরিবারের অন্যদের জন্য পোশাক করতে দেননি সইফ আলি খান, জানিয়েছেন কলকাতার অভিষেক। তবে ডিজাইনার অভিষেকের আশা, আগামিদিনে পরিবারের সকলের জন্যই পোশাক তৈরির দায়িত্ব দিতে পারেন অভিনেতা।
বাঙালি পোশাক এক সময়ে মুম্বইয়ে অনেকেই পরতেন। কারণ বহু বাঙালি পরিচালক, গায়ক, অভিনেতা তখন মুম্বই কাঁপাচ্ছেন। অভিষেকের কথায়, “সইফ আলি খান তাঁর স্টাইলিষ্টের কাছ থেকে আমার খোঁজ পান। অভিনেতা এরপর নিজেই যোগাযোগ করেন আমার সঙ্গে।” তাঁর আরও সংযোজন, “ভারতীয় জলবায়ুতে পুরুষদের পোশাকে এই পাঞ্জাবি সবথেকে আরামদায়ক এবং এলিগ্যান্ট-ও। আর সুপারস্টার হয়েও সইফ এই সাধারণ পোশাক খুব সুন্দর ভাবে ক্যারি করতে পারেন।” অভিষেক জানিয়েছেন, সইফ আলি খান কেমন স্টাইল চান, সেটা জেনে প্রথমে পোশাকের স্কেচ করে দেখাই। তারপর তাঁর মন মতো ডিজাইন করি সুপারস্টারের ধুতি।”