ঘুমের মধ্যে আচমকা পায়ের শিরায় টান? যন্ত্রণা দূর হবে এই সহজ উপায়ে

পা সোজা বা ভাঁজ—কিছুই করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে শিরা বা রগ এক জায়গায় দলা পাকিয়ে গেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘নকচারনাল লেগ ক্র্যাম্পস’ (Nocturnal Leg Cramps)। আট থেকে আশি, প্রায় সব বয়সের মানুষই কমবেশি এই সমস্যার ভুক্তভোগী।

ঘুমের মধ্যে আচমকা পায়ের শিরায় টান? যন্ত্রণা দূর হবে এই সহজ উপায়ে

|

Dec 17, 2025 | 3:28 PM

গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন আপনি। আচমকা পায়ের ডিমে বা কাফ মাসলে তীব্র যন্ত্রণায় ঘুম ভেঙে গেল। পা সোজা বা ভাঁজ—কিছুই করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে শিরা বা রগ এক জায়গায় দলা পাকিয়ে গেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘নকচারনাল লেগ ক্র্যাম্পস’ (Nocturnal Leg Cramps)। আট থেকে আশি, প্রায় সব বয়সের মানুষই কমবেশি এই সমস্যার ভুক্তভোগী।

তবে চিকিৎসকরা বলছেন, ভয়ের কিছু নেই। জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন এবং কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলেই এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

এই সমস্যার নেপথ্যে রয়েছে কোন কারণ?

বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে জলের ঘাটতি বা ডিহাইড্রেশন এর অন্যতম প্রধান কারণ। এছাড়া শরীরে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হলে পেশিতে টান ধরে। যারা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করেন কিংবা খুব বেশি ধকলের ব্যায়াম করেন, তাঁদের এই সমস্যা হওয়ার প্রবণতা বেশি। গর্ভাবস্থায় বা বয়স্কদের ক্ষেত্রেও এটি স্বাভাবিক ঘটনা।

তৎক্ষণাৎ আরাম পাওয়ার উপায় ঘুমের মধ্যে শিরায় টান ধরলে আতঙ্কিত না হয়ে নিচের নিয়মগুলো মেনে চলুন:

স্ট্রেচিং: যে পায়ে টান ধরেছে, সেই পা সোজা করে পায়ের পাতাটি নিজের দিকে টানুন। হাত দিয়ে পায়ের আঙুলগুলো ধরে নিজের শরীরের দিকে টানলে কাফ মাসল প্রসারিত হয় এবং ব্যথা কমে।

হাঁটাচলা: বিছানা থেকে নেমে সাবধানে ঘরের মধ্যে কিছুক্ষণ পায়চারি করুন। পায়ের ওপর ভর দিলে পেশি শিথিল হতে শুরু করে।

গরম সেঁক: টান ধরা জায়গায় হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে সেঁক দিন। উষ্ণতা পেশির সংকোচন কমাতে সাহায্য করে। অনেক সময় গরম জলে স্নান করলেও আরাম মেলে।

ম্যাসাজ: খুব আলতো হাতে বা সামান্য তেল দিয়ে আক্রান্ত স্থান মালিশ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং পেশি নরম হয়।

প্রতিরোধে করণীয় কেবল ব্যথার সময় নয়, এই সমস্যা যাতে ফিরে না আসে তার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি—

১. পর্যাপ্ত জলপান: সারাদিনে অন্তত ৩-৪ লিটার জল পান করুন। শরীর হাইড্রেটেড থাকলে পেশির নমনীয়তা বজায় থাকে।

২. খাদ্যাভ্যাস: খাদ্যতালিকায় পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। রোজকার ডায়েটে কলা, ডাবের জল, পালং শাক, এবং বাদাম রাখলে উপকার পাবেন।

৩. ঘুমানোর ভঙ্গি: উপুড় হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করুন। চিত হয়ে বা পাশ ফিরে ঘুমানো পেশির জন্য ভালো।

৪. হালকা ব্যায়াম: ঘুমানোর আগে কিছুক্ষণ পায়ের হালকা স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ বা সাইক্লিং করলে রাতে টান ধরার ঝুঁকি কমে।

কখন ডাক্তার দেখাবেন? সাধারণত ঘরোয়া টোটকাতেই এই সমস্যা মেটে। তবে যদি প্রায়ই এমন হয়, পা ফুলে যায় কিংবা ব্যথার তীব্রতা খুব বেশি হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এটি ডায়াবেটিস বা স্নায়ুর সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।