
খেতে ভালবাসতেন উত্তমকুমার। তেলেভাজা, লুচি, পরোটা, বিরিয়ানি, চাউমিন, কোনও কিছুই বাদ ছিল না তাঁর। চিংড়ি মাছের পাতুরি কিংবা সরষে ইলিশ পেলে তো উত্তমকে আটকানোই যেত না। তবে রবিবার হলেই, মায়ের হাতের ভেটকি মাছের কাঁটা চচ্চড়ি তাঁর লাগতই।
শোনা যায়, উত্তম নাকি রীতিমতো তালিকা তৈরি করে দিতেন, কোন দিন কী কী খাবেন। আর সেই তালিকায় মাছ, মাংসের নানা পদের ভিড় থাকত। তবে এসবের বাইরে উত্তমের এক বিশাল দুর্বলতা ছিল। রসগোল্লা। মহানায়কের ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে জানা যায়, ব্রেকফাস্ট হোক বা লাঞ্চ, কিংবা ডিনার পাত শেষে রসগোল্লা তাঁর লাগবেই। এমনকী, শোনা যায়, উত্তম রসগোল্লা এতটাই ভালবাসতেন যে, গোটা একটা দিন রসগোল্লা খেয়েই কাটিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু ১৯৬৭ সালের প্রথম হার্ট অ্য়াটাক উত্তমের খাদ্যাভাসকে পুরো পালটে দিল। মশালাদার সুস্বাদু খাবারের পরিবর্তে, মুরগির স্টু, স্যুপই হয়ে উঠল মহানায়কের রোজকার মেনু। আর রসগোল্লা? সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে উত্তমের জীবন থেকে চিকিৎসক বাদ দিলেন রসগোল্লাকে। কিন্তু উত্তম বাদ দিতে পারলেন না তাঁর প্রিয় মিষ্টি। বরং ডাক্তারকে লুকিয়ে এমন এক কায়দা করলেন, যা কিনা চমকে দেওয়ার মতো।
উত্তম ঘনিষ্ঠদের থেকে জানা যায়, রসগোল্লার উপর নুন ছড়িয়ে সেই রসগোল্লা খেতেন উত্তম। মহানায়কের ধারনা ছিল, এতে রসগোল্লা থেকে ক্ষতিটা কম হবে! সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। জানা যায়, উত্তমের এই রসগোল্লা খাওয়ার কায়দা জেনে ফেলেছিলেন তাঁর চিকিৎসক। মহানায়ককে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন এমনটি না করতে। উত্তম কিন্তু ডাক্তারের নির্দেশ বাধ্য ছেলের মতোই মেনেছিলেন।