Rose Day বিভ্রাট! ফুল শুকতেই প্রেমিকার গায়ে উঠল র্যাশ, প্রেমিক মহাটেনশনে
রোজ ডে-র দিন প্রেমিকদের এমন বিপদ থেকে মুক্তি দিতে, টিভি নাইন বাংলা ডিজিটালে অ্যালার্জি নিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিলেন চিকিৎসক।

প্রেম সপ্তাহের শুরুতেই ফুল দিবস। এর কেতাবি নাম অবশ্য রোজ ডে। প্রাচীনকাল থেকেই ধরে নেওয়া হয়েছে, প্রেমবার্তা বহন করতে অন্য ফুলের তুলনায় গোলাপ ফুলই সবচেয়ে কার্যকরী। তাই সব ফুলকে এড়িয়ে প্রেমঠাকুর, এই দিবসের সমস্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছেন গোলাপের কাঁধে। এর নেপথ্যে অবশ্য কোনও বৈজ্ঞানিক নিয়ম কানুন নেই। এটা একেইবারেই প্রেমের প্রথা। প্রেম ঠাকুরের কথা মেনে, প্রেমিকদের ধারণা নরম তুল তুলে পাপড়ি আর মিষ্টি গন্ধে ভরপুর গোলাপ ফুল হাতে নিলেই, লাভস্টোরি পাবে পারফেক্ট শুরুওয়াত। আর তা যদি হয়, লাল গোলাপ, তাহলে তো কথাই নেই! একেবারে সোনায় সোহাগা। কিন্তু ধরুন, প্রেমিকার হাতে প্রেম বার্তা সহযোগে গোলাপ দেওয়া মাত্রই, মিষ্টি হাসির বদলে, জোরে একটা হ্যাঁচো জোটে! সঙ্গে প্রেমিকার গায়ে র্যাশ, দমবন্ধ অবস্থা! তাহলে? নাহ কোনও আজগুবি গল্প নয়, এমনটা হতেই পারে। বহু মানুষের রয়েছে ফ্লাওয়ার অ্যালার্জি! এটা কিন্তু একেবারেই কোনও বিরল সমস্যা নয়। ফুলের রেণু থেকেই, নানা সমস্যার সূত্রপাত। কী উপায়? রোজ ডে-র দিন প্রেমিকদের এমন বিপদ থেকে মুক্তি দিতে, টিভি নাইন বাংলা ডিজিটালে অ্যালার্জি নিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিলেন চিকিৎসক সায়ন গুপ্ত।
কী এই অ্যালার্জি? কেনই বা হয়?
যাঁরা অ্যালারজেটিক, তাঁদের কোনও নির্দিষ্ট জিনিসে নয়, তাঁদের যেকোনও জিনিসেই অ্যালার্জি হতে পারে। কারও কারও খাবারে অ্যালার্জি থাকতে পারে, কারও কারও ধূলোতে অ্য়ালার্জি হতে পারে। ঠিক তেমনই কারও কারও ফুলের রেণু থেকেই অ্য়ালার্জি হতে পারে। কোনও বিশেষ গন্ধেও অনেকের অ্যালার্জি থাকে। আসলে অ্য়ালার্জিটা হল ভগবান প্রদত্ত একটা জিনিস। কার কিসে অ্য়ালার্জি বের হচ্ছে, সেটা একেবারেই নির্ভর করছে যে, সেই মানুষটার ওই পার্টিকুলার এজেন্ট বা উপাদানের ফলে শরীরে একটা কেমিক্যাল, যার নাম হিস্টামিন তৈরি হচ্ছে এবং সেই কেমিক্যাল শরীরের কোন অরগ্যানকে এফেক্ট করছে তার উপর। যদি দেখা যায় যে, ফুসফুসে প্রভাব ফেলছে, তাহলে সর্দি, জ্বর, কাশি এসব হবে। যদি দেখা যায় যে নাকের মিউকাস (Mucus) প্রভাব ফেলছে, তাহলে প্রচণ্ড হাঁচি হবে। যদি দেখা যায় ত্বকে প্রভাব ফেলছে, তাহলে দেখা যাবে ত্বকে বড়সড় র্যাশ বের হবে। অনেক সময় হতে পারে, ফুলে হাত দেওয়ার পর, হয়তো হাত না ধুয়েই কোনও খাবার খেয়ে নিল কেউ। তাহলে তাঁর খাদ্যনালি আক্রান্ত হয়ে গেল। এক্ষেত্রে পেট ব্যথা হতে পারে, পেটখারাপ হতে পারে। এ বিষয়ে পুরোটাই নির্ভর করছে, শরীরের কোন অরগ্যানটা আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু গোলাপেই নয়, অনেকের গাঁদা ফুল, জবা ফুল থেকেও অ্য়ালার্জি হতে পারে। ফুলের গন্ধ থেকে হতে পারে, আবার ফুলের রেণুর সংস্পর্শে আসলেও হতে পারে। আসলে এসব উপাদানে কারও কারও শরীরে ইমিউনোগ্লোবিলিন ই-এর প্রোডাকশন বেড়ে যায়। যার ফলে নানা সমস্যা শুরু হয়।
এমন অ্যালার্জির চিকিৎসা কী?
যেকোনও অ্যালার্জির সবচেয়ে ভালো চিকিৎসাই হচ্ছে, যা থেকে অ্য়ালার্জি হচ্ছে, সেটা একেবারেই এড়িয়ে চলা। অর্থাৎ যদি কোনও খাবার থেকে হয়, তাহলে সেটা না খাওয়া। অন্য কোনও জিনিস, যেমন ফুল থেকে হলে, যতটা সম্ভব ফুল এড়িয়ে চলা। অনেকের যেমন, ধূলোতে অ্যালার্জি রয়েছে। আমরা ধূলো তো সেভাবে এড়াতে পারব না, তাই এক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। করোনা আবহ কিন্তু আমাদের মাস্কের উপকার বুঝিয়ে দিয়ে গেছে। আসলে অ্যালার্জির ওষুধ প্রেসক্রাইব করার সময় আমাদের অনেক প্যারামিটার যাচাই করে নিতে হয়। তাই দুমদাম ওষুধ না খেয়ে, চিকিৎসক দেখিয়ে নেওয়াই ভালো। কারণ, অ্যালার্জির ওষুধ সবার জন্য একরকম নয়।
ডেটে বেরিয়ে প্রেমিকাকে গোলাপ হাত দিতেই যদি হাঁচি, কাশি শুরু হয় কিংবা র্যাশ বেরিয়ে যায়, চটজলদি সমাধান কি আছে?
গোলাপ হাতে দিলেই অ্যালার্জি হবে, তার সম্ভাবনা খুবই কম। অ্যালার্জি সাধারণত হয়, যদি আমরা কিছু খাই বা নাকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে তাহলেই। আরেকটা হতে পারে, আজকাল তো ফুলকে সতেজ রাখতে অনেক কেমিক্যাল ব্যবহার হয়। সেই কেমিক্যাল থেকে ত্বকের সংস্পর্শে আসলে অ্যালার্জি হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রথমেই যেটা করতে হবে ঠান্ডা জল দিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে ঠান্ডা জলের থেকে ভালো আর কিছু নেই। এর পরেও যদি সমস্যা বাড়ে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।





