
ক্যালেন্ডারের পাতায় শীতের আমেজ। উত্তুরে হাওয়ায় ত্বকের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি যা ভোগায়, তা হলো ফাটা ঠোঁটের সমস্যা। বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়েও লাভ হয় না, বরং সমস্যা বাড়ে। বাজারচলতি নামী-দামি ব্র্যান্ডের লিপ বাম বা চ্যাপস্টিকে সাময়িক আরাম মিললেও, দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে ঠোঁটের স্বাভাবিক রং কালচে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তবে আর চিন্তা নেই। রান্নাঘরের সাধারণ কিছু উপাদান দিয়েই এবার বানিয়ে নেওয়া যাবে সম্পূর্ণ কেমিক্যাল-ফ্রি লিপ বাম। এতে ঠোঁট থাকবে নরম, আর ফিরবে গোলাপি আভা। রইল ঘরোয়া লিপ বাম তৈরির সহজ ৩টি পদ্ধতি।
১. বিটরুট লিপ বাম (গোলাপি আভার জন্য) যাঁরা ঠোঁটে হালকা গোলাপি টিন্ট পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এটি সেরা।
উপকরণ: ১টি মাঝারি বিট, ১ চামচ নারকেল তেল বা ভ্যাসলিন, ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল।
পদ্ধতি: বিট কুড়িয়ে নিয়ে চিপে রস বের করে নিন। এবার একটি পাত্রে ভ্যাসলিন বা নারকেল তেল সামান্য গরম করে গলিয়ে নিন। এর মধ্যে বিটের রস ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভালো করে মেশান। ছোট কৌটোয় ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। জমে গেলেই তৈরি আপনার টিন্টেড লিপ বাম।
২. লেবু ও মধুর লিপ বাম (ট্যান দূর করতে) শীতে রোদে বসে ঠোঁটে কালচে ছোপ পড়লে এটি দারুণ কাজ দেয়।
উপকরণ: ১ চামচ পাতিলেবুর রস, ১ চামচ মধু, ১ চামচ ভ্যাসলিন।
পদ্ধতি: একটি বাটিতে ভ্যাসলিন নিয়ে ডবল বয়লার পদ্ধতিতে (গরম জলের ওপর বাটি বসিয়ে) গলিয়ে নিন। এবার গ্যাস বন্ধ করে তাতে মধু ও লেবুর রস মেশান। মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে জমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এটি রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে ভালো ফল মিলবে।
৩. নারকেল তেল ও গোলাপের লিপ বাম (আর্দ্রতার জন্য) যাঁদের ঠোঁট অতিরিক্ত ফাটে, তাঁদের জন্য এই বামটি ‘ম্যাজিক’-এর মতো কাজ করে।
উপকরণ: ২ চামচ জমে যাওয়া নারকেল তেল, কয়েকটি গোলাপের পাপড়ি, সামান্য আমন্ড অয়েল।
পদ্ধতি: গোলাপের পাপড়ি বেটে বা থেঁতো করে নিন। নারকেল তেলের সঙ্গে এই পাপড়ি ও আমন্ড অয়েল মিশিয়ে হালকা গরম করুন যাতে পাপড়ির নির্যাস তেলে মিশে যায়। এরপর ছেঁকে নিয়ে ছোট কন্টেনারে ঢেলে ঠান্ডা হতে দিন।
বিশেষ টিপস:
বাড়িতে তৈরি এই লিপ বামগুলিতে কোনো প্রিজারভেটিভ থাকে না। তাই এগুলি সাধারণ তাপমাত্রায় না রেখে ফ্রিজে রাখাই ভালো। এক একটি ব্যাচ ১৫-২০ দিন পর্যন্ত অনায়াসে ব্যবহার করা যায়।
চিকিৎসকদের মতে, জিভ দিয়ে ঠোঁট চাটলে লালায় থাকা এনজাইম ঠোঁটকে আরও শুষ্ক করে দেয়। তাই এই বদভ্যাস ত্যাগ করে নিয়মিত এই প্রাকৃতিক বাম ব্যবহার করলেই শীতেও আপনার হাসি থাকবে অমলিন।