
মকর সংক্রান্তিতে বাঙালির ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজো করার এক অন্যতম রীতি রয়েছে। এদিন নতুন ফসল ঘরে প্রবেশের আনন্দে লক্ষ্মীর চাল পাল্টানো, আউরি-বাউরির মতো জনপ্রিয় প্রথাগুলি নিষ্ঠাভরে পালন করা হয়। সেই সঙ্গে লক্ষ্মীকে ভোগ নিবেদন করা,নৈবেদ্য সাজানো থেকে শুরু করে পুজোর সব সামগ্রী দিয়ে আয়োজন করা কম ঝক্কির কাজ নয়। পৌষ সংক্রান্তিতে লক্ষ্মী পুজোর যে রীতি রয়েছে, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর ভোগ নিবেদন ও পুজো পদ্ধতিরও রয়েছে অন্য নিয়ম। পুজোর সঙ্গে সঙ্গেও রয়েছে নানা রীতি-নীতি। মনে করা হয়, পুজোয় দেওয়া ভোগ পরবর্তীকালে প্রসাদ হিসেবে সকলের মধ্যে বিলি করা হলে তা মঙ্গলদায়ক কাজ করা হয়। রয়েছে বিশেষ তাত্পর্যও। বাড়িতে গোপাল ঠাকুর থাকলে সকাল-সন্ধ্যে ভোগ নিবেদন করা উচিত। সেই ভোগ আবার পরিবারের মধ্যে বিলি করা হলে শ্রীকৃষ্ণ আখেরে সন্তুষ্টই হন। তাই গোপালকে দেওয়া প্রসাদ বিলি করা হয় প্রত্যেকের মধ্যে। তবে প্রসাদ বিলি করবেন কখন? পুজো দেওয়ার পর ভোগ কখন খাবেন? কীভাবে খাওয়া উচিত , তা নিয়েও রয়েছে দ্বন্দ্ব।
পুজোর সময় প্রসাদ বা ভোগ নিবেদন করবেন কীভাবে, সেই ভোগ কতক্ষণ পর খাওয়া যেতে পারে, তা জেনে নিন এখানে…
কখন ঠাকুরকে দেওয়া খাবার খাওয়া উচিত?
বিশ্বাস অনুসারে, পূজা করার পরে, ভগবানকে দেওয়া ভোগ বা নৈবেদ্য প্রায় ২ থেকে ৪ মিনিটের জন্য ঠাকুরঘরে বা মন্দিরে ঠাকুরের সামনে রেখে দেওয়া উচিত।
মন্দিরে একটি পর্দা দিয়ে নৈবেদ্য ঢেকে দিন। ৫ মিনিট পর এই ভোগ বের করে প্রসাদ হিসেবে সকলের মাঝে বিতরণ করুন।
ভোগ নিবেদনের সময় মনে রাখবেন, ভোগ কখনওই সরাসরি মাটিতে রাখা উচিত নয়। ভোগ সর্বদা কোনও না কোনও পাতা বা কোনও পাত্রে ভগবানের সামনে নিবেদন করা উচিত।
যখনই ভোগ নিবেদন করবেন, মনে রাখবেন যে ভোগের সঙ্গে মন্দিরে জলও রাখা উচিত। এইভাবে মন্ত্র উচ্চারণ করে ভগবানকে অন্ন নিবেদন করা শুভ।
ভগবানকে দেওয়া নৈবেদ্যতে লঙ্কা বা লবণ যোগ করা হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঈশ্বরকে মিষ্টি নিবেদন করা হয়, শুধুমাত্র মিষ্টি নৈবেদ্যই শুভ বলে মনে করা হয়।
মাথায় রাখবেন, ঠাকুরের সামনে পুজোর পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা নৈবেদ্য রাখা উচিত নয়।পুজো করা পর, ঠাকুরের সামনে রাখা নৈবেদ্য কিছুক্ষণ পরে সরিয়ে ফেলতে হবে। দেব-দেবীর সামনে নৈবেদ্য বেশিক্ষণ রাখা ভালো বলে মনে করা হয় না।
শুধুমাত্র তাজা খাবার সবসময় ঠাকুর পুজোর জন্য সামনে রাখা হয়। অনেক দেবদেবীর নৈবেদ্য হিসেবে বাসি খাবার নিবেদন করা রীতি রয়েছে, তাও প্রসাদ হিসেবে সবসময় তাজা ভোগ নিবেদন করা শুভ।