Brahma temple in Pushkar: সারা বিশ্বের একমাত্র ব্রহ্মার মন্দির, যেখানে ভক্তরা নিজের ভাগ্য নিজেই লেখেন!
পুষ্করকে বলা হয় মন্দিরের শহর। এই স্থানের হিন্দু মন্দিরগুলি মুঘল শাসকদের দ্বারা ধ্বংস করা হয়েছিল। কিন্তু ব্রহ্মাজির মন্দির আজও একই রয়ে গেছে।
হিন্দু শাস্ত্রমতে বলা হয় আমাদের সৃষ্টি কর্তা প্রজাপতি ব্রহ্মা। তিনিই এই জগৎ সৃষ্টি করেছেন। তাঁর নির্দেশ মতোই আমাদের জীবন চলে। তিনিই বিধাতা। তিনিই সব কিছু। ব্রহ্মা ছাড়াও হিন্দুদের আরও ৩৩ কোটি দেবতা আছে বলে পূরাণ অনুযায়ী জানা যায়। তাঁরাও স্বমহিমায় নিজ নিজ ক্ষমতায় বিখ্যাত। সারা পৃথিবীতে যেখানে যত হিন্দু রয়েছে, সেখানেই গড়ে উঠেছে হিন্দু দেবতাদের মন্দির। সারা পৃথিবী জুড়ে প্রত্যেক হিন্দু দেবতার একের অধিক মন্দির রয়েছে। কিন্তু যিনি আমাদের সৃষ্টি কর্তা, যিনি আমাদের বিধাতা, সারা দেশে সেই ব্রহ্মার কতগুলি মন্দির আছে জানেন?
ভগবান মহাদেবকে সর্বশ্রেষ্ঠ ঈশ্বর বলে মানা হলেও পূরাণ অনুযায়ী আমাদের সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মাই। যেখানে সারা দেশে মহাদেবের ভক্ত এবং তাঁর জন্য স্থাপিত মন্দিরের সংখ্যাও অগণিত। কিন্তু সেখানে সৃষ্টি কর্তা ব্রহ্মার ভক্তের সংখ্যাটা ঠিক কত জানা নেই। কিন্তু তাঁর জন্য স্থাপিত মন্দিরের সংখ্যাটা মাত্র একটি। হ্যাঁ, চমক মনে হলেও এটাই বাস্তব। সারা দেশে বিধাতার একটি মাত্র মন্দির রয়েছে। রাজস্থানের পুষ্করে এই মন্দিরটি অবস্থিত।
শিব পুরান মতে, একদিন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা ও পালনকর্তা বিষ্ণু দেবাদিদেব শিবের আদি ও অন্ত খুঁজতে বের হলেন। ব্রহ্মা দেবাদিদেব শিবের আদি(মস্তকের চূড়া) উপরের দিক খুঁজতে বের হলেন(আকাশের দিকে)। বিষ্ণু দেবাদিদেব শিবের অন্ত পাতালের দিকে খুঁজতে বের হলেন। ব্রহ্মা তখন একটি রাজহাঁসের রূপ ধারন করে আকাশের দিকে উড়তে লাগলেন। অন্যদিকে বিষ্ণু একটি বরাহের রূপ ধারন করে পৃথিবীর আরও গভীরে যেতে লাগলেন। এমন করে হাজার হাজার বছর চললেন। তবু তারা আদি ও অন্ত খুঁজে পেলেন না। তারা ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। বিষ্ণু ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিলেন। অন্যদিকে ব্রহ্মা একটি কেতকী ফুল বাতাসে ভেসে ভেসে নিছের দিকে পড়ছে দেখতে পেলেন। তিনি ফুলটিকে থামালেন ও সে কোথা হতে আসছে তা জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে কেতকী ফুল বলল যে সে শিবের মস্তকে ভক্তের দেওয়া ফুল। সে সেখান হতে পড়ছে। তখন ব্রহ্মা আর না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি কেতকী ফুলকে শিখরে পৌঁছার প্রমান হিসেবে ব্যাবহারের সিদ্ধান্ত নিলেন।
এর পর ব্রহ্মা ও বিষ্ণু পৃথিবীতে ফিরে এলেন। সাত্ত্বিক বিষ্ণু সত্যি কথা বললেন। কিন্তু রাজসিক ব্রহ্মা ছলনার আশ্রয় নিলেন। মহেশ্বর শিব তার ছলনা ধরে ফেললেন। তখন ব্রহ্মাকে মহেশ্বর শিব কোন মন্দির হবে না বলে অভিসাপ দিলেন। আর কেতকী ফুলকে ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য শিব নিজ পুজায় তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন।
পুষ্করকে বলা হয় মন্দিরের শহর। এই স্থানের হিন্দু মন্দিরগুলি মুঘল শাসকদের দ্বারা ধ্বংস করা হয়েছিল। কিন্তু ব্রহ্মাজির মন্দির আজও একই রয়ে গেছে। কথিত আছে যে পুষ্কর হ্রদ ব্রহ্মার একক পদ্ম পাতা দিয়ে তৈরি। এ কারণে হিন্দুদের কাছে এই হ্রদের স্বীকৃতি আরও বেড়ে যায়। মন্দিরের একটি মার্বেল মেঝেতে সুন্দরভাবে খোদাই করা রৌপ্য কচ্ছপ রয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে ব্রহ্মাজির একটি চারমুখী মূর্তি রয়েছে, সঙ্গী অবশ্যই স্ত্রী গায়ত্রী।
আরও পড়ুন: Spiritual: স্বপ্নে কি বারবার পেঁচা দেখতে পান? এমনটা হলে আপনার সঙ্গে কী ঘটতে পারে, জানুন…