
কলকাতা: এ যেন চমকে দেওয়ার সকাল। গত বছর এশিয়ান গেমসে এমনই এক সকাল উপহার দিয়েছিলেন দুই মুখোপাধ্যায়— ঐহিকা ও সুতীর্থা। তারই ঝলক আবার দেখা গেল বিশ্ব টিম টেবল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে চিনকে অল্পের জন্য হারাতে পারল না ভারতের মেয়েরা। কিন্তু বিশ্বের এক নম্বর টিটি প্লেয়ারকে হারিয়ে চমকে দিয়েছেন নৈহাটির ঐহিকা (Ayhika Mukherjee)। এক নম্বর প্লেয়ার সান ইংশাকে চার গেমের ম্যাচে ৩-১ হারিয়ে চমকে দেন বাঙালি তরুণী। গত কয়েক বছর ধরেই সার্কিটে ধারাবাহিক ভাবে সাফল্য পাচ্ছেন। এ বারও তারই ঝলক দেখালেন। শুধু ঐহিকাই নন, সৃজা আকুলাও একই মঞ্চে দারুণ পারফর্ম করলেন। ভারতের হয়ে তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে বিশ্বের দু’নম্বর প্লেয়ার ওয়াং ইদিকে ৩-০ হারিয়ে দেন। এই জোড়া ধাক্কায় চিনের মহিলা টিটি টিম বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে তারা আবার ফিরেও আসে। শেষ পর্যন্ত গ্রুপ পর্যায়ের প্রথম ম্যাচ জিতে নেয় তারা। তার পরও ঐহিকা-সৃজার এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ভারতীয় টিটি মহল।
সান ইংশার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ ছিল ঐহিকারই। শুরুর গেমটা ১২-১০ জিতে শুরু করেছিলেন বাঙালি টিটি প্লেয়ার। কিন্তু পরের গেমে দুরন্ত ভাবে ফিরে আসেন চিনা প্লেয়ার। ১১-২ জেতে নেন। বিশ্বের এক নম্বর টিটি প্লেয়ারকে এর পর আর নড়তে দেননি। ঐহিকার যে স্ট্র্যাটেজির ধরতেই পারছিলেন না সান। আগ্রাসী ছকে নেমেছিলেন ভারতের মেয়ে। তৃতীয় ও চতুর্থ গেন ১৩-১১ এবং ১১-৬ জিতে নেন ঐহিকা। নৈহাটির বাঙালি মেয়ের এই পারফরম্যান্স দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছেন সকলে। দ্বিতীয় ম্যাচটা আবার মনিকা বাত্রা হেরে যান ওয়াং মানুর কাছে। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে ভারত আবার ২-১ এগিয়ে যায়। সৃজার সৌজন্যে। তিনি ওয়াং ইদিকে স্ট্রেট গেমে উড়িয়ে দেন। ১১-৭, ৯-১১, ১৩-১১ জেতেন তিনটে গেম। পরের ম্যাচে আবার হারেন মনিকা। এ বার সান নিজেকে ফিরে পান টেবলে। ২-২ অবস্থায় ছিল তখন ভারত-চিনের লড়াই। শেষ ম্যাচ জিতলে ভারত ৩-২ জিতে শুরু করত বিশ্ব টিম মিট। তা হল না। ঐহিকাই ওয়াং মানুর কাছে স্ট্রেট গেমে হেরে যান।
ভারত জয়ের স্বপ্ন দেখানোর পরও জিততে না পারার আক্ষেপ থাকছে। তবে দুই তরুণীর এই সাফল্যকেও গুরুত্ব দিতে হবে। চিন টেবল টেনিসে অন্যতম শক্তি। বুসানে সেই ফেভারিট চিনের বিরুদ্ধেই পারফর্ম করা কতটা কঠিন, ভালো মতোই জানতেন ঐহিকা-সৃজা। তা মাথায় রেখেও চাপ নেননি দু’জন। কোমরের চোটের জন্য গত বছর জানুয়ারি মাসে কেরিয়ার প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছিল ঐহিকার। সেখান থেকে ফিরে এসে একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে চলেছেন তিনি। এই ধারাবাহিকতাই ধরে রাখতে চান নৈহাটির মেয়ে।