উদ্বোধনী সংস্করণেই সাড়া ফেলেছে বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগ। এখানে কিন্তু শুধুই পুরুষদের টুর্নামেন্ট নয়। ছেলে-মেয়ে দুই টুর্নামেন্টই চলছে সমান্তরালে। একের পর এক মুগ্ধকর পারফরম্যান্স দেখা যাচ্ছে। বাংলার পরিচিত মুখের ক্রিকেটাররা যেমন নজর কাড়ছেন, তেমনই উঠে আসছে নতুন প্রতিভাও। পারফরম্যান্স এবং ব্যতিক্রমী চরিত্রও দেখা যাচ্ছে। তেমনই একজন অরিক্তা মান্না। প্রথমেই যেটা ধাক্কা দেবে, ওর বয়স মাত্র ১১ বছর! এখানেই শেষ নয়। অরিক্তা মান্না কিন্তু দু-হাতেই বোলিং করতে পারেন। মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলার সব্যসাচী বোলার।
বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগে কলকাতা টাইগার্স টিমে খেলছেন অরিক্তা। টিমের ক্য়াপ্টেন মিতা পাল। যিনি বাংলা ক্রিকেটেই শুধু নয়, সর্বভারতীয় স্তরেও অতি পরিচিত মুখ। টিমের হেড কোচ চরণজিৎ সিংও বাংলা ক্রিকেটে অতি পরিচিত নাম। সকলের মাঝে আলাদা করে নজর কাড়ছেন অরিক্তা। হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় বাড়ি। ছোট্ট থেকেই প্লাস্টিক ব্যাট নিয়ে ক্রিকেট খেলায় মেতে থাকত। মেয়ের খেলার এই তাগিদ দেখে বাবা সৌভিক মান্না আর দেরি করেননি। ভর্তি করে দেন জগাছা থানা অ্য়াসোসিয়েশন কোচিং ক্যাম্পে। কোচ সব্যসাচী দাসই হাতে ধরে খেলা শিখিয়েছেন অরিক্তাকে।
বাবা সৌভিক মান্না দাঁতের চিকিৎসক। মা মোনালিসা। মায়ের নামের মতোই বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টিতে একের পর এক পারফরম্যান্সে মুগ্ধ করছে অরিক্তা। ডান হাতে অফস্পিন, বাঁ হাতি স্পিন। হঠাৎ কেন এমন মনে হল? অরিক্তার কথায়, ‘আমার স্যর (সব্যসাচী) বাংলারই একজন ক্রিকেটারকে দু-হাতে বল করতে দেখেছিলেন। আমি শুরুতে অফস্পিনারই ছিলাম। এরপর দু-হাতে প্র্যাক্টিস শুরু করি।’
ডান না বাঁ হাত! কোনটায় বেশি স্বচ্ছন্দ? অরিক্তার কথায়, ‘আমার দুটিই ভালো লাগে। সাধারণত বাইরে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাটাররা সমস্যায় পড়ে। বাঁ হাতি ব্যাটার থাকলে তাই ডান হাতে অফস্পিনে জোর দিই, আর ডান হাতি ব্যাটারের জন্য বাঁ হাতে স্পিন।’ বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টিতে এখনও অবধি চার ম্যাচ খেলেছে কলকাতা টাইগার্স। সবকটিতে সুযোগ পেয়েছে অরিক্তা। ক্লাব টুর্নামেন্ট থেকেই প্রো লিগে সুযোগ পেয়েছে। এখনও অবধি চার ম্যাচে নিয়েছে ৫ উইকেট। ইকোনমি প্রায় ৫। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যা খুবই ভালো বোলিং। পাঁচ উইকেটের মধ্যে ১টি উইকেট অফস্পিনে। বাকি সবই বাঁ হাতি স্পিনে।
পছন্দের ক্রিকেটার? ব্যাটিংটা খুব বেশি ভালো লাগে না অরিক্তার। তার পছন্দ বোলিং। ক্রিকেটে বোলিংটাই বেশি চ্যালেঞ্জিং মনে হয়। আর পছন্দের ক্রিকেটার বলতেই উঠে এল মেয়েদের ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা ইংল্যান্ডের বাঁ হাতি স্পিনার সোফি এক্লেস্টনের কথা। সালকিয়ার রত্নাকর নর্থ পয়েন্ট স্কুলের ক্লাস সিক্সের ছাত্রী অরিক্তা কোচের নামের মতো ‘সব্যসাচী’ বোলিংয়ে মুগ্ধ করছেন।