গ্রেগ চ্যাপেলকে নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে প্রত্যাশা ছিল ব্যাপক। শেষ অবধি তা হতাশায় পরিণত হয়। ভারতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে তাঁকে আনা নিয়ে প্রধান ভূমিকা ছিল তৎকালীন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে একটি সিরিজের আগে চ্যাপেলের পরামর্শ নিয়েছিল ভারতীয় দল। সেখানেই তাঁর কোচিং স্টাইল ও মানসিকতা পছন্দ হয় সৌরভের। পরবর্তীতে বোর্ড কর্তাদের অনুরোধ করেন গ্রেগ চ্যাপেলকে কোচ করে আনার জন্য। সৌরভের কেরিয়ারে সেটাই যেন সবচেয়ে বড় ‘ভুল’ সিদ্ধান্ত ছিল। সৌরভের নেতৃত্ব যায়, টিম থেকেও বাদ পড়েন। পারফরম্যান্সের সৌজন্যে আবার টিমে মহারাজকীয় প্রত্যাবর্তন হয় সৌরভের। গ্রেগ চ্যাপেলকে নিয়ে উঠে এল বড় তথ্য। তিনি নাকি জ্যোতিষীর কথা অনুযায়ী টিম বাছতেন! বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকায় সেই বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার। তবে পরের বিশ্বকাপের মাঝে ভারতীয় দলে নানা বদল হয়। গ্রেগ চ্যাপেল কোচ হয়ে আসেন, দ্রাবিড় অধিনায়ক হন। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে হওয়া ওয়ান ডে বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেয় ভারত। এরপরই গ্রেগ চ্যাপেলকে বিদায় করা হয়। তাঁকে নিয়ে নানা সময়ে দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা অসন্তুষ্ট ছিলেন। পরবর্তীতে অনেকে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। চ্যাপেল প্রসঙ্গে আরও একটা তথ্য প্রকাশ্যে।
হিউম্যানস অব বম্বে ইউটিউব চ্যানেলে করিশ্মা মেহতার সঙ্গে রিঅ্যালাইন অনুষ্ঠানের পঞ্চম পর্বে আলোচনায় সেলিব্রিটি জ্যোতিষী সন্দীপ কোছর। তিনিই জানালেন সে কথা। প্রায় এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের আলোচনার মাঝে উঠে এসেছে ভারতীয় ক্রিকেট প্রসঙ্গ। সেখানেই সন্দীপ কোছর বলেন, ‘সে সময় হোয়াটস অ্যাপ এসব ছিল না। প্রতিটা ক্রিকেটারেরই হরোস্কোপ আমার কাছে ছিল। অনেক সময়ই হত, কাউকে ব্যাটিং করতে পাঠালে নিজের মতোই বলতে থাকতাম, ওর সময় খারাপ চলছে, ওকে এই সময় ব্যাটিংয়ে পাঠানো ঠিক হচ্ছে না। যাবে আবারও আউট হয়ে ফিরে আসবে। অথচ যার সময় ভালো চলছে, সে টিমেও রয়েছে, কিন্তু একাদশের বাইরে! সে সময়ই মনে হয়েছিল, এই বিষয়টা গ্রেগ চ্যাপেলকে কেউ কেন বোঝাচ্ছে না? আমার মনে হয়েছিল, ওদের উচিত কোনও জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়া।’
সেলিব্রিটি জ্যোতিষী সন্দীপ কোছর আরও যোগ করেন, ‘কিছু দিন পরই এক সাংবাদিকের ফোন এল। সে আমারও পরিচিত। জানাল, গ্রেগ আমার ব্যাপারে শুনেছে এবং কথা বলতে চায়। সে সময় আমি দিল্লিতে ছিলাম। কোন সিরিজ ছিল মনে নেই। গ্রেগ চ্যাপেল ফোন করে দেখা করতে চাইল। হোটেলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। তাই আমাকে রুমেই ডেকে নিয়েছিলেন। ওর স্ত্রী লিন্ডা সম্ভবত নাম, সেও ছিলেন। এরপর থেকে গ্রেগ চ্যাপেলের সঙ্গে বন্ধুত্বটা গাঢ় হয়। কারণ, আমি যেগুলো বলতাম, ওর কাজে লাগতো। তারপর থেকেই নিয়মিত ভাবে মেসেজ করতে শুরু করে। জানতে চাইতো, কোন প্লেয়ারের সময় ভালো চলছে, কার টিমে থাকা উচিত এ সব।’
গ্রেগ চ্যাপেলকে কোচ করে আনায় ভারতীয় ক্রিকেটের কী উন্নতি হয়েছিল, তা অবশ্য দূরবীণ দিয়ে খুঁজতে হবে। তবে অনেক সিদ্ধান্তই যে ভারতীয় ক্রিকেটকে অস্বস্তিতে ফেলেছিল, বলার অপেক্ষা রাখে না। সচিন তেন্ডুলকরকে ওপেনিং থেকে চারে পাঠানো, ইরফান পাঠানকে দক্ষ সুইং বোলার থেকে অলরাউন্ডার বানানোর পরিকল্পনা, আদতে ইরফানের সুইং বোলিংটাই হারিয়ে গিয়েছিল।