ব্যাটিং লাইন আপে বৈচিত্র খুঁজছিলেন রোহিত শর্মা। বিকল্পও মিলেছে। ম্যাচের আগের দিনই অধিনায়ক রোহিত জানিয়েছিলেন, যশস্বী খেলবেন এবং ওপেনও করবেন। এটকু টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। টিমে জায়গা ধরে রাখতে পারফর্ম করতে হবে যশস্বীকেই। আর ম্যাচের প্রথম দিন ছাপ ফেললেন, বলাই যায়। তেমনই নজর ছিল ঈশান কিষাণের দিকেও। এই ম্যাচে তাঁর অভিষেক হবেই তা আগে নিশ্চিত করেননি রোহিত। ঋষভের অনুপস্থিতিতে ছাপ ফেলতে ব্যর্থ শ্রীকার ভরত। সেটা কিপিং হোক কিংবা ব্যাটিং। দ্বিতীয় কারণের জন্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজে অভিষেকের সম্ভাবনা ছিল ঈশানের। ডমিনিকায় সেই স্বপ্ন পূরণ। দিনের খেলা শেষের কী পরিস্থিতি, কেমন পারফর্ম করলেন দুই অভিষেককারী! বিস্তারিত TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
প্রথমে আসা যাক ঈশান প্রসঙ্গে। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ঈশানের কাছে প্রথম সুযোগ কিপিংয়ের। পেসারদের বিরুদ্ধে যেমনই হোক, সবচেয়ে কঠিন রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাডেজার মতো দুই দক্ষ, অভিজ্ঞ স্পিনারের বলে কিপিং। সেই কাজটা কেমন করেন, বাড়তি ফোকাস ছিল। প্রথম দিনই কার্যত ফুল মার্কস পেলেন ঈশান কিষাণ। প্রথম ইনিংসে দুটো ক্যাচ নিলেন ঈশান। প্রথমটি শার্দূলের বোলিংয়ে। সামনে নীচু হয়ে আসা অনবদ্য ক্যাচ। তবে আলাদা করে বলতে হবে দ্বিতীয় ক্যাচটির কথা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিপার জোসুয়া ডি সিলভার ক্যাচ। জাডেজার বলে বড় এজ লাগে। স্বাভাবিক ভাবেই কঠিন ক্যাচ। ঈশান হতাশ করেননি। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন নজরে থাকবে তাঁর ব্যাটিং।
প্রথম দিনের শেষে আরও একটা বিষয়ে ঈশানকে নম্বর দেওয়া যায়। ঋষভ পন্থ কিপিং, ব্যাটিংয়ে ভরসা দেওয়ার পাশাপাশি সারাক্ষণ সতীর্থদের জাগিয়ে রাখার কাজটা করেন। ঈশানও সেই কাজটিই করে যাচ্ছিলেন। পাশাপাশি ব্যাটারের প্রসঙ্গে সারাক্ষণ ইনপুট দেওয়ার কাজটাও। ব্যাটার ব্যাকফুটে বেশি খেলছে নাকি ফ্রন্টফুটে, অশ্বিন-জাডেজাকে তথ্য দিয়ে গেলেন। পেসারদের বোলিংয়ের সময় স্লিপ কর্ডনে যশস্বী, রাহানে থাকায় ঈশানের সঙ্গে তারাও বাকিদের তাতানোর কাজ করে গেলেন।
এ বার যশস্বী প্রসঙ্গ। লাল-বলের ক্রিকেটে তাঁর পরিসংখ্যান নজরকাড়া। ১৬টি প্রথম শ্রেনির ম্যাচে ৯টি সেঞ্চুরি। তবে যশস্বীকে জাতীয় দলের দরজা খুলে দিয়েছে আইপিএলের ১৬তম সংস্করণ। সেঞ্চুরি করেছেন। আইপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির (১৩ বলে) নজির গড়েছেন। শট খেলার মানসিকতা তেমনই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করারও। টেস্ট ক্রিকেটের আঙিনায় বল ছাড়াটাও গুরুত্বপূর্ণ। অফস্টাম্প কোথায়, সেই আন্দাজ থাকা জরুরি। যশস্বী প্রথম দিন সেই কাজটা ভালোই করলেন। টেস্ট ক্রিকেটে রানের খাতা খুলতে অপেক্ষা করতে হল ১৬তম ডেলিভারির জন্য। তাতে অবশ্য ধৈর্য হারাননি। ১৬তম ডেলিভারিটি শর্ট এবং অফস্টাম্পের অনেকটা বাইরে। গতিও তেমন নেই। কাট শটে বাউন্ডারি মেরে খাতা খুললেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৫০ রানের জবাবে প্রথম দিনই বিনা উইকেটে ৮০ রান তুলে নিয়েছে ভারত। রোহিত শর্মা ৩০ রানে ক্রিজে। যশস্বী প্রথম রানের জন্য অপেক্ষা করলেও এরপর হাত খুলেছেন। অফড্রাইভ, পুল শট মেরেছেন। দিনের খেলা শেষের আগের মুহূর্তে ৩৫ থেকে ৩৯এ পৌঁছলেন রিভার্স সুইপে বাউন্ডারি মেরে। রোহিত শর্মার মুখেও হাসি। দিনের শেষে ৪০ রানে ক্রিজে যশস্বী। এর মধ্যে ৬টি বাউন্ডারি। শট খেলা কিংবা বল ছাড়ার সময় কোনও সন্দেহ থাকলে, সিনিয়র পার্টনারের সঙ্গে কথা বলেছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে দ্বিতীয় দিন যশস্বীর হাফসেঞ্চুরি যেন সময়ের অপেক্ষা। প্রথম দিন যেমন খেললেন, তাতে অভিষেক ইনিংয়ে সেঞ্চুরি এলেও অবাক হওয়ার নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৩ ওভার বোলিং করেছে। পাঁচ বোলার ব্য়বহার করেও উইকেটের দেখা মেলেনি।