কলকাতা: ইনিংসে জয় সম্ভব? বুক ঠুঁকে বলা না গেলেও প্রত্যাশা করাই যায়। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়াকে কখনও হারাতে পারেনি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। ড্র অবধি সেরা সাফল্য। ঘরের মাঠে ১৯৮৪ সালের পর ফের অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট খেলার সুযোগ এসেছে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে প্রথম দিন ছিল বোলারদের দাপট। তারকা সমৃদ্ধ অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিং লাইন আপকে মাত্র ২১৯ রানেই অলআউট করেছিল ভারত। প্রথম দিনের শেষ সেশনে ১ উইকেট হারিয়েই ৯৮ রান তুলে নিয়েছিলেন স্মৃতিরা। দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারত অনেকটাই এগিয়ে। আর এতে বাংলার অবদানও কম নয়। যা পরিস্থিতি, তাতে অস্ট্রেলিয়াার বিরুদ্ধে প্রথম বার টেস্ট জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছে ভারতীয় শিবির। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গত টেস্টে অভিষেক হয়েছিল জেমাইমা রডরিগজ ও শুভা সতীশের। দুই ব্যাটারই অভিষেক ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। আঙুলের চোটে অজিদের বিরুদ্ধে টেস্ট থেকে ছিটকে যান শুভা সতীশ। স্কোয়াডে হরলীন দেওলের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারও ছিলেন। টিম ম্যানেজমেন্ট ভরসা রেখেছিলেন রিচা ঘোষের ওপর। দু-বছর আগে এই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই টেস্ট অভিষেক হতে পারত রিচার। এ বার হল। প্রথম সুযোগেই বাজিমাত।
রিচার প্রধান ভূমিকা কিপিং। যদিও এই টেস্টে তাঁকে খেলানো হচ্ছে ব্যাটার হিসেবে। তিন নম্বরে নামার কথা ছিল। প্রথম দিনের শেষ বেলায় উইকেট পড়ায় রিচাকে নামানোর ঝুঁকি নেয়নি টিম। এ দিন স্নেহ রানা আউট হতেই চার ক্রিজে প্রবেশ রিচা ঘোষের। স্মৃতি মান্ধানার সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। যদিও স্মৃতি ফেরেন ৭৪ রানে। জেমাইমা রডরিগজের সঙ্গে বিধ্বংসী জুটি রিচার। পাওয়ার হিটিংয়ের জন্যই পরিচিত বাংলার এই কিপার-ব্যাটার। টেস্ট ক্রিকেটে ধৈর্যরও প্রয়োজন পড়ে। সেটাই দেখালেন। যেমন ডিফেন্স করছিলেন, তেমনই মারার বল পেলে তাঁকে আটকানো যায়নি। ১০৪ বলে ৫২ রানে ফেরেন রিচা। হাফসেঞ্চুরিতে ৭টি বাউন্ডারি।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি এল জেমাইমা এবং দীপ্তি শর্মার ব্যাটেও। জেমাইমা ৭৩ রানে ফেরেন। অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর ও যস্তিকা ভাটিয়া ভারসা দিতে পারেননি। আট নম্বরে নেমে ভারতের ভিত আরও মজবুত করেন দীপ্তি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। অজিদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের শেষে ৭০ রানে অপরাজিত। দীপ্তির ব্যাটে টেস্ট সেঞ্চুরির অপেক্ষা। যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন পূজা বস্ত্রকার। বল হাতে ৪ উইকেট। দিনের শেষে ৩৩ রানে অপরাজিত পূজা।
পরিবারে সামনে টেস্ট অভিষেক। হাফসেঞ্চুরির ইনিংস। রিচার জীবনে ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে রিচা বলছেন, ‘টেস্ট অভিষেক হচ্ছে, জানতে পারার পর খুবই ভালো লেগেছিল। ক্যাপ দেওয়ার সময় স্মৃতি বুঝিয়েছিল- আমার মধ্যে কী উন্নতি হয়েছে, কী বিষয়ে উন্নতি করতে হবে, অভিষেক নিয়ে ভেবো না, অন্য ম্যাচের মতোই খেল। এতদিন যেটুকু প্র্যাক্টিস করেছিলাম, সে ভাবেই খেলাই লক্ষ্য ছিল। মারার বল পেলে মারবোই। ডিফেন্স-অ্যাটাক বলে কিছু ভাবিনি। সেশন ধরে খেলছিলাম।’
দ্বিতীয় দিনের শেষে ৭ উইকেটে ৩৬৭ রান তুলে নিয়েছে ভারতীয় দল। সব মিলিয়ে ১৫৭ রানে এগিয়ে। ক্রিজে এখনও দীপ্তি-পূজা জুটি। আরও একশো রান যোগ করতে পারলে, এই টেস্টে ইনিংসে জয়ও সম্ভব ভারতের। সেই প্রত্যাশাই ভারতীয় শিবিরে।