Asian Games 2023, Titas Sadhu: ছেলেবেলায় ক্রিকেট খেলতেই চাইনি, বলে দিলেন সোনার মেয়ে তিতাস!
Asian Games 2023, Titas Sadhu: এশিয়ান গেমসে সোনা জিতলেও সেই টিমেরই যে অংশ হতে পারবেন, মনেই হয়নি। তিতাসের কথায়, 'এশিয়ান গেমস সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না আমার। টিম যে দিন ঘোষণা হয়, দেখি আমার নাম রয়েছে। টিমে আমার নাম দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। সিনিয়র টিমে খেলার স্বপ্ন অনেক দিন ধরেই ছিল। সেটা যে এত তাড়াতাড়ি পূরণ হয়ে যাবে, ভাবিইনি।'
কলকাতা: তিনি কি আসলে বড় ম্যাচের প্লেয়ার? তাঁর সদ্য শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে যেই নজর বোলাবেন, তাই মনে হবে। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ থেকে উঠে আসা। মেয়েদের ওই টুর্নামেন্টের ফাইনালে দুরন্ত পারফর্ম করেছিলেন। ম্যাচের সেরার পুরস্কারও তুলে নেন। জানুয়ারি মাসের সেই পারফরম্যান্স যে আচমকা আসেনি, তা আর একবার প্রমাণ করে দিয়েছেন বাংলার পেসার তিতাস সাধু (Titas Sadhu)। এশিয়ান গেমসে (Asian Games 2023) মেয়েদের ক্রিকেটে সোনা জিতেছে ভারত। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচে অবিশ্বাস্য পারফর্ম করেছেন চুঁচুড়ার ১৯ বছরের মেয়ে। এক মাথা ঝাঁকড়া চুলের তরুণী যেন স্বপ্নের স্পেল করেছিলেন। ম্যাচ জিতে উঠে কী বললেন তিনি? TV9Bangla Sportsএ বিস্তারিত।
চুঁচুড়া থেকে উঠে এসে বিশ্ব দরবারে আলাদা জায়গা করে নিচ্ছেন তিতাস। যেন ঝুলন গোস্বামীর রেখে যাওয়া জুতোয় পা গলিয়ে ফেলেছেন। দু’দিকে সুইং করাতে পারেন বল। স্কিড করাতে পারেন নতুন বল। তাঁর এই গুণগুলোই ঠিকঠাক পড়তে পারেনি শ্রীলঙ্কার ব্য়াটাররা। প্রথম ওভারে এসেই নিয়েছিলেন ২ উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে ফের আরও এক উইকেট। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট। ম্য়াচ জেতানো পারফরম্যান্স তিতাসে। চুঁচুড়ার এই মেয়েই যে ছেলেবেলায় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন না, তা জানাই ছিল না। কী বলছেন তিনি?
এশিয়ান গেমসের ক্রিকেটে এই প্রথম টিম পাঠিয়েছে ভারত। হরমনপ্রীত সিংয়ের ভারত সোনা জিতে ইতিহাস তৈরি করে ফেলেছে। আর তিতাস বলছেন, ‘ছেলেবেলায় ক্রিকেট খেলতেই চাইনি। যে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসি, সেটাও শুরু হয়েছিল দেরিতে। ওই অ্যাকাডেমির হয়ে যে টিম খেলত, সেখানে নিয়মিত হাজির থাকতাম। ওদের নানা ভাবে সাহায্য করতাম। তখনও ক্রিকেট খেলার কথা মাথায় আসেনি। পরে আমিও একটু-আধটু ক্রিকেট খেলতে শুরু করি। তখনও ক্রিকেট সে ভাবে এনজয় করতাম না। তবে মজা লাগত। কিন্তু আমি যখন পারফর্ম করতে শুরু করি, তখন আগ্রহটা বেড়ে যায়। অনূর্ধ্ব ১৯ টিমের সিলেকশন ছিল, আমি টিমে সুযোদ পাইনি। ওই ঘটনায় ভেঙে পড়েছিলাম। তখন মনে হয়েছিল, আমি যদি ক্রিকেটার হতে চাই, তা হলে আমাকে খেলতে হবে। ক্রিকেটের প্রতি ইমোশনাল হয়ে পড়া সেই সময় থেকেই।’
এশিয়ান গেমসে সোনা জিতলেও সেই টিমেরই যে অংশ হতে পারবেন, মনেই হয়নি। তিতাসের কথায়, ‘এশিয়ান গেমস সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না আমার। টিম যে দিন ঘোষণা হয়, দেখি আমার নাম রয়েছে। টিমে আমার নাম দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। সিনিয়র টিমে খেলার স্বপ্ন অনেক দিন ধরেই ছিল। সেটা যে এত তাড়াতাড়ি পূরণ হয়ে যাবে, ভাবিইনি।’
দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে আইপিএল খেলেছেন। মেয়েদের আইপিএল যে তাঁর দেখার চোখ বদলে দিয়েছে, তা জানাতে ভুলছেন না। তিতাস বলছেন, ‘মেয়েদের আইপিএলে অনেক দেশে মেয়েরা খেলে। যে কারণে ক্রিকেট খেলাটা সহজ হয় না। স্ট্র্যাটেজি অন্য রকম করতে হয়। ক্রিকেট সম্পর্কে ধারনাও অন্য রকম রাখতে হয়। বিদেশিদের সামনে থেকে দেখার পর ক্রিকটা খেলার ভাবনাটা বদলে যায় অনেকখানি। নিজের খেলায় অনেক কিছু যোগ করেছি।’
বাবা রণদীপ সাধু তাঁর জীবনের বড় অংশ। ছেলেবেলা থেকে বাবাকে পাশে পেয়েছেন। তিতাস বলে দিচ্ছেন, ‘আমরা ক্রিকেটাররা খেলি ঠিকই, কিন্তু সে ভাবে ট্রেনিং করতে ভালোবাসি না। তখন কাউকে লাগে, যে আমাদের তাতিয়ে দেবে, এগিয়ে নিয়ে যাবে। ১২-১৩ বছরে এটা সবচেয়ে বেশি দরকার। তখন নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সুবিধা হয়। আমার বাবা সেই কাজটা করেছিল। বাবার সঙ্গে নিয়মিত ম্য়াচ নিয়ে কথাও হয়। কেমন বল করলাম, কী ভুল করলাম। সবটা বাবাকে জানাই।’