
বয়স বাড়লে গুরুত্ব কমে? কিছুক্ষেত্রে একেবারেই নয়। তাঁদের ক্ষেত্রে বয়স শুধুই সংখ্যা মাত্র। নিজেদের পারফরম্যান্সে প্রতিনিয়ত তা প্রমাণ করে দেন। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো তেমনই একজন। বছরের পর বছর ফুটবল বিশ্বকে শাসন করেছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে বিতর্কেও জড়িয়েছেন। কখনও ক্লাবের সঙ্গে, কখনও আবার কোচের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে ঝামেলার জেরেই কাতার বিশ্বকাপের পরই চাকরি খুঁইয়েছিলেন পর্তুগালের কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস। পর্তুগালের কোচ হিসেবে নিযুক্ত করা হয় রবার্তো মার্টিনেজকে। দায়িত্ব নিয়ে তিনি প্রথমেই যে কাজটি করেন তা হল, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মান ভাঙানো।
বেলজিয়ামের কোচ হিসেবে নজর কাড়া রবার্তো মার্টিনেজ জানতেন, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মতো প্লেয়ারের বয়স বাড়লেও স্কিল কখনও শেষ হয়ে যায় না। এ বারের ইউরোতে এখনও অবধি একটি মাত্র ম্যাচ খেলেছে পর্তুগাল। জয় দিয়েই অভিযান শুরু করেছে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো গোল করতে না পারলেও পুরো সময় মাঠে থেকে সতীর্থদের খেলানো, একজন লিডারের মতোই কাজ করেছেন। বেশ কিছু সুযোগ তৈরি হলেও খাতা খোলেনি। কে জানে, পরের ম্যাচেই হয়তো সেই দৃশ্য দেখা যাবে!
মাঠের রোনাল্ডো যতটা আগ্রাসী, বাইরে ততটাই নরম। ফ্যামিলি ম্যান। পিতৃস্নেহে ভরিয়ে দেন সন্তানদের। আর এই বিষয়টাই যেন তাঁকে অন্যান্য কোনও খুদেকে দেখলেও মনে করায়, তিনি একজন পিতা। মাঠের বলবয়-গার্ল হোক কিংবা কোনও খুদে ফ্যান, হাসি মুখের রোনাল্ডোর আচরণে সেই খুদের আজীবনের জন্য় বিশেষ স্মৃতি উপহার দেন। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের একটি ঘটনাই ধরা যাক।
টিম বাসে উঠে পড়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এক খুদে তখনও মায়ের সঙ্গে অপেক্ষায়। রোনাল্ডোর সঙ্গে একটু দেখা করার সুযোগ। রোনাল্ডোর নাম লেখা জার্সিই পরা। নিরাপত্তাকর্মীরা অনুমতি দিচ্ছিলেন না। সেই খুদে তখনও দাঁড়িয়ে। মা তাকে যতই নিয়ে যেতে চান, সরতে রাজি নয় সেই খুদে ফ্যান। দাঁড়িয়ে রইল অপেক্ষায়। যদি রোনাল্ডোর কাছে কোনওরকমে খবর পৌঁছয়। আর সেটাই হল।
টিমেরই একজনের সৌজন্যে রোনাল্ডোর নজরে পড়ে। দ্রুত টিম বাস থেকে নেমে আসেন রোনাল্ডো। সেই খুদেকে জড়িয়ে ধরেন। তার জার্সিতে অটোগ্রাফ দেন। তাকে বুকে আগলে রাখেন বেশ কিছুক্ষণ। মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। কতক্ষণ আর হবে! খুব বেশি হলে ৪৫ সেকেন্ড। এতেই যেন সারাজীবনের জন্য দুর্দান্ত একটা মুহূর্ক, অনাবিল আনন্দ উপহার পেল সেই খুদে। এ যেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পক্ষেই সম্ভব।
রইল সেই ভিডিয়ো