ইউরোপে ক্লাব বনাম উয়েফা: মেসি-রোনাল্ডোরা কি নির্বাসনের পথে?

গত বছরের অক্টোবর থেকেই সুপার লিগ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। আমেরিকার অর্থ লগ্নিকারী সংস্থা জেপি মর্গ্যানের হাত ধরে। নতুন এই লিগ আর্থিক ভাবে আরও সমৃদ্ধ করবে ইউরোপের ক্লাবগুলোকে। যার পর তড়িঘড়ি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফর্ম্যাট বদলানোর কথা ভাবতে শুরু করে উয়েফা। ৩৬ টিমকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ করার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে না।

ইউরোপে ক্লাব বনাম উয়েফা: মেসি-রোনাল্ডোরা কি নির্বাসনের পথে?
ছবি-টুইটার
Follow Us:
| Updated on: Apr 19, 2021 | 2:19 PM

লন্ডন: ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, লিওনেল মেসিদের কি কাতার বিশ্বকাপে খেলতে দেখা যাবে? ইউরোপিয়ান সুপার লিগ ঘিরে যখন তুমুল আলোচনা, তখন এই প্রশ্নটাই দেখা দিয়েছে বড় হয়ে।

এক দিকে যেমন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, আর্সেনাল, চেলসি, লিভারপুলের মতো ইপিএলের বড় ক্লাবগুলো আছে। অন্য দিকে বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ, অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ, জুভেন্তাস, ইন্টার মিলান, এসি মিলানের মতো ক্লাবও সুপার লিগের জোটে নাম লিখিয়েছে। ১২টা প্রথম সারির ইউরোপিয়ান টিমের নতুন লিগে সম্মতি রয়েছে বলেই চাপে পড়ে গিয়েছে ইউরোপ ও বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা। সপ্তাহের মাঝে হবে লিগের ম্যাচ। কিন্তু উয়েফা আর ফিফা সুপার লিগ কনসেপ্টে একেবারেই রাজি নয়। দুই সংস্থার তরফে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, যে সব ক্লাব সুপার লিগে খেলবে, তাদের ফুটবলারদের ফিফা বিশ্বকাপে নামতে দেওয়া হবে না।

গত বছরের অক্টোবর থেকেই সুপার লিগ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। আমেরিকার অর্থ লগ্নিকারী সংস্থা জেপি মর্গ্যানের হাত ধরে। নতুন এই লিগ আর্থিক ভাবে আরও সমৃদ্ধ করবে ইউরোপের ক্লাবগুলোকে। যার পর তড়িঘড়ি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফর্ম্যাট বদলানোর কথা ভাবতে শুরু করে উয়েফা। ৩৬ টিমকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ করার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে না। ১২ টি সুপার লিগের পথে হাঁটতে শুরু করে দেওয়ায় বেশ চাপে পড়ে গিযেছে উয়েফা আর ফিফা। ইউরোপ ও বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থার সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার পড়ও রফাসূত্র বেরোয়নি। ইউরোপিয়ান ফুটবলে আর্থিক ডামাডোলের যুক্তিতেই সুপার লিগ করার ভাবনা।

সুপার লিগের ফর্ম্যাট কী হবে? ২০টা টিম নিয়ে হবে লিগ। ইপিএল, লা লিগা, সিরি আর০র ১২টা প্রথম সারির ক্লাবের সঙ্গে নাম লেখা চলেছে আরও তিনটে টিম। ঘরোয়া ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন আরও পাঁচটা টিম জায়গা পাবে মূল পর্বে। ১০টা টিমকে নিয়ে দুটো গ্রুপ। ঘরে-বাইরের ভিত্তিতে খেলা। সুপার লিগের আয়োজকদের স্পষ্ট যুক্তি, এর ফলে অনেক বেশি অর্থ পাওয়া যাবে। আর্থিক স্বচ্ছলতা আনবে যা। প্যারিস সাঁজা, বায়ার্ন মিউনিখের মতো ক্লাব অবশ্য এই জোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।

রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট, যিনি আবার ইউরোপিয়ান সুপার লিগের চেয়ারম্যান, ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ বলেছেন, ‘ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। অংসখ্য মানুষ ফুটবল ভক্ত। তাদের ইচ্ছে পূরণ করাটা বড় ক্লাবগুলোর দায়িত্ব। ভবিষ্যতের কথা ভেবে, আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য এই পদক্ষেপ নিতেই হত। এতে ফুটবলেরই লাভ হবে।’

আরও পড়ুন:ধাওয়ানের ব্যাটিংয়ে কি চিন্তা বাড়ছে কোহলি-শাস্ত্রীর?

এই ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ফরাসি টিমগুলো এই লিগে নাম লেখাতে রাজি হয়নি। অন্য দিকে আবার ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল, বার্সার এই পদক্ষেপকে অনেকেই ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে ব্যাখ্যা করছেন। এই বিতর্কের মধ্যেও ইউরোপের সেরা ১২টা টিম কিন্তু নতুন লিগের দিকে পা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফিফা আর উয়েফার সঙ্গে কার্যত জেহাদই ঘোষণা করে ফেলেছে তারা। পরিস্থিতি ঠেকানোর জন্য ইউরোপিয়ান সুপার লিগের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণাও করেছে। ১২টা ক্লাবকে নির্বাসনে পাঠানো হতে পারে।