মহাকাশ অভিযানে একের পর এক নজির তৈরি করছে ভারত। ১৯৮৪ সালে প্রথম ভারতীয় নাগরিক হিসাবে রাকেশ শর্মা মহাকাশে গিয়েছিলেন। তার ঠিক চার দশক পরে সামনের বছর আবার মহাকাশে যাচ্ছেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। তিনি গগনযানের ৪ অভিযাত্রীর মধ্যে একজন। তবে, গগনযান রওনা হওয়ার আগেই একবার মহাকাশ থেকে ঘুরে আসা হয়ে যাবে তাঁর। অ্যাক্সিওম স্পেস নামে টেক্সাসের একটা বেসরকারি সংস্থা বিশ্বের প্রথম প্রাইভেট স্পেস স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। এর জন্য, সামনের বছর তারা ইলন মাস্কের স্পেস এক্সের রকেটে চড়িয়ে কয়েকজন অভিযাত্রীকে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে নিয়ে যাবে। নিজেদের স্পেস স্টেশন লঞ্চ করার আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বলা যেতে পারে। অ্যাক্সিওম এর জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই ইসরোর সঙ্গে কাজ করছে। এইবারে তারা ভারতের একজনকেও তাদের অভিযাত্রী দলে মনোনীত করল। ইসরোর এক্সলেন্সের জন্যই গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা এই সুযোগ পেলেন। তাঁর অভিজ্ঞতা আবার মিশন গগনযানেও ইসরোকে সাহায্য করবে।
এদিকে, নিজস্ব স্পেস স্টেশনের দিকেও ভারত এককদম এগোল। কেন্দ্রীয় সরকার অফিসিয়ালি এই প্রজেক্টে সিলমোহর দিয়েছে। ইসরোর স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের ডিরেক্টর নীলেশ দেশাই সংবাদমাধ্যমকে একথা জানিয়েছেন। ভারতের নিজস্ব স্পেস স্টেশনের নাম ঠিক হয়েছে, ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন(বিএএস)। এই স্টেশনে থাকবে পাঁচটা মডিউল। সেগুলোকে মহাকাশেই জোড়া দেওয়া হবে। ২০২৮ সালে প্রথম মডিউল রওনা হবে। ২০৩৫ সালের মধ্যে ভারতের স্পেস স্টেশন রেডি হয়ে যাবে। তারপর ২০৪০ সালে ওই মহাকাশ স্টেশন ছুঁয়েই প্রথম কোনও ভারতীয় চাঁদের মাটিতে পা রাখবেন।
আবার ভারতের রিটার্ন মুন মিশন চন্দ্রযান ফোর নিয়েও নানা তথ্য সামনে আসছে। চন্দ্রযান ফোরে যে রোভার থাকবে, তার ওজন হবে সাড়ে তিনশো কেজি। চন্দ্রযান থ্রিয়ের রোভারের ওজনের চেয়ে ১২গুণ বেশি। এই মিশনে জাপান ভারতের সঙ্গে থাকবে। চন্দ্রযান থ্রিয়ের তুলনায় চন্দ্রযান ফোর চাঁদের দক্ষিণ মেরুবিন্দুর আরও কাছাকাছি নামবে। সেসবের খুঁটিনাটি, রকেটের পে-লোড বাড়ানো, চাঁদ থেকে স্যাম্পল নিয়ে ফেরার ব্যবস্থা। কাজ অনেক। ইসরো এখন এসব নিয়ে ব্যস্ত। একইসঙ্গে ইসরো কর্তা নীলেশ দেশাই জানিয়েছেন, ভারতের প্রথম ভেনাস মিশন, শুক্রযান – ১-এও সরকার গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে দিয়েছে। ২০২৮-এ শুক্রযানের রওনা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শুক্রের আবহাওয়া একসময়ে একদম পৃথিবীর মতো ছিল। হঠার করে কেন তা বদলে গেল? যদি না বদলাত তাহলে কি পৃথিবীর মত শুক্রতেও প্রাণের সঞ্চার হতে পারত? এসবের খোঁজ নিতেই ভারতের শুক্র অভিযান।