শনিকে ঘিরে নানান দেশের বিজ্ঞানীদের উৎসাহ সব সময়ই আছে। শনির বলয়ের রহস্যের মধ্যেই নাকি মহাবিশ্বের সৃষ্টির
বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করা হয়। তাই, শনিকে ঘিরে বিশ্বের বিভিন্ন অনুসন্ধিৎসু মন সব সময়ই তাঁদের নিজেদের মতো করে অন্বেষণ করে চলেছে। এই শনিকে ঘিরে এবার নিজেদের আরও উন্নত পদ্ধতি নিল নাসা। তারা শনিতে নয়, এবার শনির উপগ্রহে অনুসন্ধান চালানোর কথা ভাবছে। তাও আবার টাইটানে। যা শনির বৃহত্তম উপগ্রহ বলে পরিচিত।
শনির বৃহত্তম উপগ্রহ টাইটানে কোয়াডকপ্টার যান পাঠাতে চলেছে নাসা। টাইটানের বিভিন্ন অংশে ঘুরে নাসার এই যান একাধিক স্যাম্পেল সংগ্রহ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। পৃথিবী ও টাইটানের প্রিবায়োটিক রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সাদৃশ্য খুঁজে পেতে নাসার এই অভিযান। এই প্রথম সৌরজগতে ঘটা কোনও অভিযানে ড্রোনের মতো দেখতে উড়তে সক্ষম যান পাঠাচ্ছে নাসা।
নাসার এই যানের নাম ড্রাগনফ্লাই। আটটি রোটর সহ এই যানের ওড়ার পদ্ধতি অনেকটাই ড্রোনের মতো। নাসা তাদের টুইটারে এই অভিযানের কথা ঘোষণা করে। টাইটান অভিযানের একটি কাল্পনিক ভিডিয়ো প্রকাশ করে নাসা জানায়, তাদের পরবর্তী গন্তব্য শনির বৃহত্তম উপগ্রহ। নাসার রোটরক্রাফ্ট ল্যান্ডার টাইটানের বিভিন্ন অংশে এক্সপ্লোর করবে।
Fly, #Dragonfly, fly! Our next destination in the solar system is Saturn’s largest moon, Titan, where our rotorcraft-lander will explore dozens of locations across the icy world. Discover why: https://t.co/GhopCqDjx4 pic.twitter.com/55AilAZ4ar
— NASA (@NASA) June 27, 2019
নাসার ওয়েবসাইটে জানানো হয়, টাইটানের বায়ুমন্ডল পৃথিবীর তুলনায় চার গুণ বেশি ঘন। টাইটানের পৃষ্ঠের উপাদানের স্যাম্পেল সংগ্রহ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য টাইটানের বিভিন্ন অংশে রোটরের সাহায্যে উড়ে যাবে ড্রাগনফ্লাই। টাইটানে প্রায় ১৭৫ কিলোমিটার অঞ্চল ঘুরবে ড্রাগনফ্লাই। নাসার মতে, টাইটানের বর্তমান অবস্থার সঙ্গে পৃথিবীর সৃষ্টির সময়কার অবস্থার অনেক মিল আছে। এই অভিযানের মাধ্যমে টাইটানের সেই বৈশিষ্ট্যগুলিই খতিয়ে দেখতে চাইছে নাসা। এই অভিযানের মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রাণের সৃষ্টি সংক্রান্ত অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা। সূর্যের দিক থেকে সৌরজগতের ষষ্ঠ গ্রহ শনি। পৃথিবীদের একটাই চাঁদ। কিন্তু শনি গ্রহে চাঁদের সংখ্যা ৬২টি। ৬২টি উপগ্রহের মধ্যে বৃহত্তম টাইটান। সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপগ্রহ এটি। চাঁদের তুলনায় প্রায় ৫০% বড় এই উপগ্রহ।
মহাকাশবিজ্ঞানীদের মতে, টাইটান সৌরজগতের একমাত্র উপগ্রহ যেখানে এত ঘন বায়ুমন্ডল আছে। সূর্য থেকে দূরত্ব অনেকটাই বেশি হওয়ায় প্রচন্ড শীতল টাইটান। টাইটানের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় -১৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৬ সালে পৃথিবী থেকে পাঠানো হবে ড্রাগনফ্লাই। ২০৩৪ সাল নাগাদ টাইটানে পৌঁছবে যানটি। নাসার নিউ ফ্রন্টিয়ার্স প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে পাঠানো হচ্ছে এই যান। সৌরজগতের দূরবর্তী গ্রহ ও উপগ্রহে অভিযানই এই প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন- Mars: মঙ্গলের সঙ্গে ফের সংযোগ স্থাপন, ছুটি কাটিয়ে কাজে ফিরছে রোভার পারসিভের্যান্স
আরও পড়ুন- Mercury: সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকা গ্রহ ‘বুধ’ থেকে প্রথমবার শোনা গিয়েছে শব্দ!