Mercury: সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকা গ্রহ ‘বুধ’ থেকে প্রথমবার শোনা গিয়েছে শব্দ!
BepiColombo স্পেসক্র্যাফটে বুধ বা মার্কারি গ্রহ থেকে এই শব্দ ধরা পড়েছে।
সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ হল বুধ। আর তারই পাশ দিয়ে অগ্রসর হয়েছিল BepiColombo স্পেসক্র্যাফট। এই মহাকাশযানের উড়ান আর পাঁচটা সাধারণ স্পেসক্র্যাফটের মতো একটা গ্রহের পাশ দিয়ে চলে যাওয়ার মতো ছিল না। বরং চলতি মাসের শুরুর দিকে ১ অক্টোবর যখন বুধ গ্রহের পাশ দিয়ে BepiColombo স্পেসক্র্যাফট ধাবমান হয়েছিল, তখন প্রথমবারের জন্য বুধ গ্রহের চারপাসজের চৌম্বকীয় এবং পার্টিকল পরিবেশ উপলব্ধি করেছিল। জানা গিয়েছে, বুধ গ্রহের ১৯৯ কিলোমিটারের মধ্যে দিয়ে যখন BepiColombo স্পেসক্র্যাফট অগ্রসর হয়েছিল সেই সময়ে গভীর মাধ্যাকর্ষণ টানও অনুভব করেছিল ওই মহাকাশযান।
সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকা গ্রহ বুধকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্যই পাঠানো হয়েছে এই BepiColombo স্পেসক্র্যাফট। বর্তমানে ইঞ্জিনিয়াররা বুধ গ্রহের চারপাশ থেকে সংগৃহীত ম্যাগনেটিক এবং অ্যাক্সিলেরোমিটার ডেটাকে শব্দে রূপান্তরিত করে প্রকাশ করেছেন। এর মাধ্যমেই প্রথমবার সূর্যের নিকটতম গ্রহ বুধের প্রথম শব্দ শোনা গিয়েছে। এই শব্দ শুনে মনে হয়েছে যেন সূর্যের কাছে থাকা একটি গ্রহে সৌর হাওয়া বোমা মারার মতো আওয়াজ করছে। এর পাশাপাশি ওই মহাকাশযানের মাধ্যমে বুধ গ্রহ সংলগ্ন এলাকায় দিন-রাতের পারদের ফারাকও বোঝা গিয়েছে। স্পেসক্র্যাফট যখন গ্রহের রাত থেকে দিনের দিকে অগ্রসর হয়েছে তখন তাপমাত্রার পরিবর্তন বোঝা গিয়েছে। এছাড়াও একটি সায়েন্স ইন্সট্রুমেন্ট তার ‘পার্কিং’ অবস্থানের চারপাশে ঘোরার সময়ের শব্দও শোনা গিয়েছে।
বুধ গ্রহ থেকে আগত প্রথম শব্দ
BepiColombo স্পেসক্র্যাফট বুধ বা মার্কারি গ্রহ থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করেছিল তা শব্দে রূপান্তরিত করেছেন ইঞ্জিনিয়াররা। সোলার উইন্ড বা সৌর বায়ু এবং বুধ গ্রহের সংলগ্ন এলাকায় থাকা চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের তীব্রতার পরিবর্তনের মাধ্যমে এটা করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে সেই মুহূর্তও ধরা পড়েছে যখন BepiColombo স্পেসক্র্যাফট magnetosheath এলাকা দিয়ে অগ্রসর হয়েছে। এই magnetosheath হল আসলে বুধ গ্রহ সংলগ্ন সোলার উইন্ড এবং ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের মধ্যবর্তী হাইলি টারবুলেন্ট বাউন্ডারি রিজিয়ন। অন্যদিকে বুধ গ্রহের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় BepiColombo স্পেসক্র্যাফট চরম মাধ্যাকর্ষণীয় টান অনুভব করেছিল। এই গ্রাভিটেশনাল পুলের তীব্রতাও ধরা পড়েছে ওই মহাকাশযানে।
BepiColombo মিশন আসলে কী
২০১৮ সালে শুরু হয়েছিল এই BepiColombo মিশন। সাত বছরের জন্য মার্কারি-মিশনে গিয়েছিল এই স্পেসক্র্যাফট। যাত্রা সম্পন্ন করার জন্য, এই মহাকাশযানটির মোট নয়টি ‘গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ সহায়তার’ প্রয়োজন ছিল, যা এই স্পেসক্র্যাফটকে সৌরজগতের সবচেয়ে অভ্যন্তরে থাকা গ্রহের পথে তার গতিপথ তৈরিতে সাহায্য করবে।
প্রথম প্ল্যানেটারি গ্র্যাভিটি অ্যাসিস্ট পাওয়া গিয়েছিল পৃথিবী থেকে, এবছর এপ্রিল মাসে। দ্বিতীয় সাহায্য এসেছিল ২০২০ শুক্র গ্রহ থেকে। আর তৃতীয় প্ল্যানেটারি গ্র্যাভিটি অ্যাসিস্টও পাওয়া গিয়েছিল এই শুক্র গ্রহ থেকেই। জানা গিয়েছে মার্কারি বা বুধের অরবিটে এই BepiColombo স্পেসক্র্যাফট পৌঁছনোর পর তা দু’ভাগে ভাগ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন- Lucy: গ্রহাণু পর্যবেক্ষণকারী মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করেছে নাসা, সৌরজগতের বাইরে Lucy থাকবে ১২ বছর