Straight Cut: গোটা দুনিয়াকে স্বস্তি দেওয়ার মতো খবর দিল ইসরো

TV9 Bangla Digital | Edited By: Moumita Das

May 16, 2024 | 12:03 AM

২০২৬ সালের শেষেই দ্বিতীয়বার মঙ্গল অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থা। আমেরিকা ও চিনের পর পৃথিবীর বাইরে কোনও গ্রহে নামবে কোনও দেশ। লালগ্রহের অবতরণ করে নতুন ইতিহাস তৈরির অপেক্ষা।

Follow Us

প্রযুক্তির ঝক্কি। বুধবার ভোররাত থেকে দুনিয়ার বেশ কিছু দেশে স্তব্ধ থাকল ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম। আপনার এই সমস্যা হয়েছে কি না, তা অফিস যাওয়ার তাড়ায় আপনি সেটা টের পেয়েছেন কি না, জানা নেই। কিন্তু ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের পেরেন্ট সংস্থা মেটার বক্তব্য, কমবেশি সব দেশেই কয়েক কোটি গ্রাহক তাঁদের অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করতে পারেননি। চারদিন আগে শক্তিশালী সৌরঝড় আছড়ে পড়েছিল পৃথিবীর উপর। গত ৫০ বছরে সবচেয়ে তীব্র সৌরঝড়। সেই শক্তিশালী সৌরঝড়ের হাত ধরে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ দেখেছে অদ্ভুত আলোর খেলা। আমাদের মতো মানুষ তাতে খুশি হলেও বিজ্ঞানীদের একটি অংশ প্রবল উদ্বেগে ছিলেন। প্রবল সৌরঝড়ে স্যাটেলাইটগুলোর কী হাল হয়, তা বোঝার চেষ্টা করছিলেন। স্যাটেলাইট বিগড়ালেই তো কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়বে। ইন্টারনেট থমকে যাবে। সেজন্যই কি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম অচল? সবাইকে স্বস্তির খবর দিয়ে ইসরোর আশ্বাস, সৌরঝড় প্রবল হলেও কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটের কোনও ক্ষতিই হয়নি। আদিত্য এল ওয়ান ও চন্দ্রয়ান টু’র অরবিটার এনিয়ে নিখুঁত তথ্য পাঠিয়েছে। গোটা দুনিয়াকে স্বস্তি দেওয়ার মতো খবর দিল ইসরো। আরও এক ঐতিহাসিক অভিযানের খবর দেব আমরা। ২০২৬ সালের শেষেই দ্বিতীয়বার মঙ্গল অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থা। আমেরিকা ও চিনের পর পৃথিবীর বাইরে কোনও গ্রহে নামবে কোনও দেশ। লালগ্রহের অবতরণ করে নতুন ইতিহাস তৈরির অপেক্ষা।

ভোট হয়ে যাওয়ার পর জিনিসের দাম বাড়ে। এমন একটা ধারণা আমাদের কমবেশি সবার আছে। খুব ভুলও বলা যাবে না। পেট্রোল-ডিজেলের ক্ষেত্রে এটা তো আমরা দেখেইছি। আর সাধারণভাবে সরকারের এমন কোনও সিদ্ধান্ত যদি নেওয়ার থাকে। যাতে কি না কোনও জিনিসের দাম বাড়তে পারে। তাহলে ভোটের আগে না নিয়ে ভোটের পরেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমি আপনাদের যে জিনিসের দাম বাড়ার কথা বলবো। তাতে অবশ্য সরকারের সরাসরি কোনও হাত নেই। ভোট মিটে গেলেই আমাদের সবার ফোনের খরচ বাড়ছে। ব্রোকারেজ ফার্ম অ্যাক্সিস ক্যাপিটাল এই খবর দিয়েছে। তারা বলছে যে এয়ারটেল। জিও। ভোডাফোন-আইডিয়া। তিন টেলিকম সংস্থাই ARPU বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। ARPU মানে average revenue per user. গড়ে একজন গ্রাহকের কাছ থেকে কত টাকা আয় করে কোনও সংস্থা। এখন আমি-আপনি তো স্বেচ্ছায় আচমকা ফোনের পিছনে বেশি খরচ করে কোম্পানিকে ARPU বাড়াতে সাহায্য করব না। তাই টেলিকম সংস্থাকেই প্রাইস বাড়াতে হবে। অ্যাক্সিস ক্যাপিটাল বলছে তাতে আমার-আপনার ফোনের খরচ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। আমরা ফোন রিচার্জ করার সময় নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী নানারকম প্যাক কিনে থাকি। কে কোনটা কিনছেন তার ওপর নির্ভর করবে কতটা খরচ বাড়বে। কোনও টেলিকম সংস্থাই বিবৃতি দিয়ে এই রিপোর্ট খারিজ করেনি। ফলে আমরা ধরে নিতেই পারি যে ফোনের পিছনে খরচ বাড়ার জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে। আর যেটা সূত্রের খবর। টেলিকম সংস্থাগুলো গড়ে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আয় বাড়াতে চায়। সেজন্য কম টাকার প্যাকগুলো আস্তে আস্তে তুলে দেওয়া হতে পারে। বাড়তে পারে বেশি পরিষেবা-সহ বেশি টাকার প্যাক। টেলিকম ইন্ডাস্ট্রির বিশেষজ্ঞরা বলছেন মানুষ এখন হাই স্পিড ইন্টারনেট চাইছেন। সেটা তাঁদের কাছে প্রায়োরিটি। বাড়তি নেট স্পিডের জন্য বাড়তি টাকা খরচ করতে অনেকেই পিছপা নন। ফলে নেট স্পিড ঠিক থাকলে, ট্যারিফ বাড়লেও গ্রাহক অন্য কোথাও যাবেন না। তাই টেলিকম সংস্থাগুলোর কাছে দাম বাড়ানোর সুযোগ আছে।

বিশৃঙ্খলা। মিসরুল। এলোমেলো করে দে মা, লুটেপুটে খাই। এসব দেখলে দেখবেন কিছু মানুষ এখনও বলেন ব্রিটিশরা যদি থাকত। তাহলে এসব হত না। এমন ভাবনা কতটা অবাস্তব। কতটা ভুল। এর মধ্যে কতটা কলোনিয়াল হ্যাংওভার আছে। এসব জটিলতায় না গিয়ে যদি সহজ করে ভাবেন। তাহলে দেখবেন ধৈর্য্যের সীমা যখন ছাড়িয়ে যায়। তখন সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে এই ধরনের কথা বলেন। তবে এগুলো হয়ত বিচ্ছিন্ন মন্তব্য নয়। বহু মানুষই মনে মনে এমন ধারণা পোষণ করেন। মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষা অন্তত তেমনই বলছে। গণতন্ত্র। সামরিক শাসন। একনায়কতন্ত্র। এইরকম নানা ধরনের সিস্টেম চালু রয়েছে। এমন চব্বিশটা দেশ বেছে নিয়ে তারা সমীক্ষা চালায়। একনায়কতন্ত্র ও মিলিটারি রুল নিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রশ্ন করা হয়। শুনলে হয়ত অবাক হবেন চব্বিশটা দেশের মধ্যে ভারতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ অটোক্র্যাসি ও মিলিটারি রুলের পক্ষে মত দিয়েছেন। অটোক্র্যাসি বা একনায়কতন্ত্র বলতে এমন একটা সিস্টেমের কথা বলা হয়। যেখানে পার্লামেন্ট ও কোর্টের বাধা ছাড়াই একজন শক্তিশালী নেতানেত্রী দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবেন। ৬৭% ভারতীয় এমন ব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়েছেন। সবচেয়ে কম সুইডেনের ৫% মানুষ একনায়কতন্ত্রের পক্ষে তাঁদের সমর্থন জানিয়েছেন। সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতীয়রা মনে করছেন একনায়ক রাজনীতিবিদের চেয়েও একজন সেনাশাসক আরও ভালো দেশ চালাবেন। তাই ৭২% ভারতীয় সামরিক শাসনের পক্ষে মত দিয়েছেন। এখানেও সবচেয়ে কম সুইডেনের ৫% মানুষ মিলিটারি রুলের পক্ষে তাঁদের সমর্থন জানিয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের বাসিন্দাদের মনের মধ্যে এই। সব শুনে এমন যদি ভাবেন তাহলে বলি। পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষা বলছে যে যেসব দেশে মানুষের
আয় ও শিক্ষা কম। সেসব দেশেই অটোক্র্যাসি ও মিলিটারি রুলের পক্ষে পাল্লাভারি। আর উল্টোটা হলে উল্টোটা। যেমন সুইডেন। নেদারল্যান্ডস। আমেরিকা। ফ্রান্স। জার্মানির মানুষ কোনও অবস্থাতেই অটোক্র্যাসি বা মিলিটারি রুল চাইছেন না। আবার ভারত। কেনিয়া। নাইজেরিয়া। ইন্দোনেশিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ কড়া শাসন চাইছেন। আমার মনে হয় কী ক্যাপিটালিজম। কী কমিউনিজম। কোনও ইজমই শেষপর্যন্ত গরিব মানুষের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে পারেনি। আর তাই হতাশ হয়ে দেশে দেশে সাধারণ মানুষের একাংশ কখনও ক্যু সমর্থন করেছেন। কখনও বা রেসিস্ট ফার রাইট পার্টির দিকে ঝুঁকেছেন। পরে যখন ভুল ভেঙেছে। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারে যে সমীক্ষার কথা আপনারা শুনলেন সেটা লোকসভা নির্বাচনের আগে করা হয়। নরেন্দ্র মোদীকে শক্তিশালী নেতা হিসাবে গেরুয়া শিবির যেভাবে প্রজেক্ট করে। সাধারণ মানুষের মনে তার প্রভাবের সঙ্গে এই সমীক্ষার ফলাফলের কোনও ডিরেক্ট কো-রিলেশন আছে কি না তা বলা কঠিন। তবে জেল থেকে বেরিয়েই শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রীর রিটায়ারমেন্টের কথা মনে করিয়ে চাঞ্চল্য জাগিয়ে তুলেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

জুনের ৪ তারিখ লোকসভা ভোটের ফল গণনা। ওইদিন দুনিয়ার অন্য এক প্রান্তে আরও একটা ঘটনা ঘটবে। লন্ডনের নিলাম ঘরে নিলামে উঠবে বিপুল পরিমাণ লোহার ছাঁট। স্ট্রেট কাটে এই খবর দিচ্ছি কেন? দিচ্ছি তার কারণ ওই লোহার ছাঁটের পিছনে রয়েছে দারুণ ইস্টারেস্টিং একটা গল্প। সেই কারণেই ক্রিস্টির মতো নামী সংস্থা ওই ছাঁটের নিলাম করছে। ওগুলো আসলে যুদ্ধজাহাজের অবশেষ। ১৭টা সাবমেরিন আর একটা করে ফ্রিগেট, ক্রজার ও ডেস্ট্রয়ার। ১৯৮৯ সালে সেগুলো হাতে পেয়েছিল পেপসি। সেই সময় যুদ্ধজাহাজের বিচারে বলতে পারেন পেপসিই হয়ে যায় দুনিয়ার অন্যতম শক্তিশালী নৌ-বাহিনী। এর অর্ধেক ক্ষমতাও ছিল না পাক নৌসেনার। মানে ব্যাপারটা এরকম ভাবতে পারেন যে পেপসি যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নৌ-যুদ্ধে নামত। তাহলে আমাদের প্রতিবেশীর হার অবধারিত ছিল। এবার প্রশ্ন হলো মার্কিন ঠাণ্ডা পানীয় সংস্থার হাতে এসব এল কী করে? এটাই সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং। ষাটের দশক থেকে পেপসির স্বাদে মজেছিল রুশ জনতা। পেপসি কিনতে রুবলের বদলে আমেরিকায় ভদকা পাঠাত রাশিয়া। অনেকটা বিনিময় প্রথার মতো। ১৯৮৬ সালে নতুন করে পেপসি আমদানির চুক্তি যখন হল, তখন রাশিয়ায় আর্থিক সঙ্কট চেপে বসেছে। আর দেশে ভদকার উত্‍পাদনও তলানিতে। তাও ঠাণ্ডা পানীয় সরবরাহ বন্ধ রাখেনি পেপসি। ১৯৮৮ সালে পেপসির দাম বাবদ যে বিল রুশ বাণিজ্যমন্ত্রকে এল, তা দেখে রুশ কর্তৃপক্ষের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার অবস্থা। বকেয়া বাবদ সাড়ে সাত লক্ষ মার্কিন ডলার মেটাতে হত রাশিয়াকে। ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা দেশটার কোষাগার তখন খালি হয়ে আসছে। তাই টাকার বদলে পেপসির হাতে নিজেদের যুদ্ধজাহাজ তুলে দেয় মস্কো। বলা হয় আমাদের কাছে আর কিছু নেই। জাহাজগুলো দিলাম। এগুলো বিক্রি করে আপনারা টাকা তুলে নিন। টাকা পাওয়ার আশা নেই বুঝে শেষপর্যন্ত জাহাজগুলোই নিয়ে নেয় পেপসি। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও তাঁরা অধিকাংশ জাহাজই বিক্রি করতে পারেনি। কারণ এভাবে তো কোনও দেশই কর্পোরেট সংস্থার থেকে অস্ত্র কেনে না। এসব ক্ষেত্রে পেপসির অভিজ্ঞতাও ছিল না। সাত বছর পর সেসব স্ক্র্যাপ মেটাল হিসাবে বিক্রি করে দেয় তারা। ওই সময় যেটুকু বেঁচে গিয়েছিল, সেটাই এখন নিলামে উঠছে।

প্রযুক্তির ঝক্কি। বুধবার ভোররাত থেকে দুনিয়ার বেশ কিছু দেশে স্তব্ধ থাকল ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম। আপনার এই সমস্যা হয়েছে কি না, তা অফিস যাওয়ার তাড়ায় আপনি সেটা টের পেয়েছেন কি না, জানা নেই। কিন্তু ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের পেরেন্ট সংস্থা মেটার বক্তব্য, কমবেশি সব দেশেই কয়েক কোটি গ্রাহক তাঁদের অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করতে পারেননি। চারদিন আগে শক্তিশালী সৌরঝড় আছড়ে পড়েছিল পৃথিবীর উপর। গত ৫০ বছরে সবচেয়ে তীব্র সৌরঝড়। সেই শক্তিশালী সৌরঝড়ের হাত ধরে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ দেখেছে অদ্ভুত আলোর খেলা। আমাদের মতো মানুষ তাতে খুশি হলেও বিজ্ঞানীদের একটি অংশ প্রবল উদ্বেগে ছিলেন। প্রবল সৌরঝড়ে স্যাটেলাইটগুলোর কী হাল হয়, তা বোঝার চেষ্টা করছিলেন। স্যাটেলাইট বিগড়ালেই তো কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়বে। ইন্টারনেট থমকে যাবে। সেজন্যই কি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম অচল? সবাইকে স্বস্তির খবর দিয়ে ইসরোর আশ্বাস, সৌরঝড় প্রবল হলেও কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটের কোনও ক্ষতিই হয়নি। আদিত্য এল ওয়ান ও চন্দ্রয়ান টু’র অরবিটার এনিয়ে নিখুঁত তথ্য পাঠিয়েছে। গোটা দুনিয়াকে স্বস্তি দেওয়ার মতো খবর দিল ইসরো। আরও এক ঐতিহাসিক অভিযানের খবর দেব আমরা। ২০২৬ সালের শেষেই দ্বিতীয়বার মঙ্গল অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থা। আমেরিকা ও চিনের পর পৃথিবীর বাইরে কোনও গ্রহে নামবে কোনও দেশ। লালগ্রহের অবতরণ করে নতুন ইতিহাস তৈরির অপেক্ষা।

ভোট হয়ে যাওয়ার পর জিনিসের দাম বাড়ে। এমন একটা ধারণা আমাদের কমবেশি সবার আছে। খুব ভুলও বলা যাবে না। পেট্রোল-ডিজেলের ক্ষেত্রে এটা তো আমরা দেখেইছি। আর সাধারণভাবে সরকারের এমন কোনও সিদ্ধান্ত যদি নেওয়ার থাকে। যাতে কি না কোনও জিনিসের দাম বাড়তে পারে। তাহলে ভোটের আগে না নিয়ে ভোটের পরেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমি আপনাদের যে জিনিসের দাম বাড়ার কথা বলবো। তাতে অবশ্য সরকারের সরাসরি কোনও হাত নেই। ভোট মিটে গেলেই আমাদের সবার ফোনের খরচ বাড়ছে। ব্রোকারেজ ফার্ম অ্যাক্সিস ক্যাপিটাল এই খবর দিয়েছে। তারা বলছে যে এয়ারটেল। জিও। ভোডাফোন-আইডিয়া। তিন টেলিকম সংস্থাই ARPU বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। ARPU মানে average revenue per user. গড়ে একজন গ্রাহকের কাছ থেকে কত টাকা আয় করে কোনও সংস্থা। এখন আমি-আপনি তো স্বেচ্ছায় আচমকা ফোনের পিছনে বেশি খরচ করে কোম্পানিকে ARPU বাড়াতে সাহায্য করব না। তাই টেলিকম সংস্থাকেই প্রাইস বাড়াতে হবে। অ্যাক্সিস ক্যাপিটাল বলছে তাতে আমার-আপনার ফোনের খরচ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। আমরা ফোন রিচার্জ করার সময় নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী নানারকম প্যাক কিনে থাকি। কে কোনটা কিনছেন তার ওপর নির্ভর করবে কতটা খরচ বাড়বে। কোনও টেলিকম সংস্থাই বিবৃতি দিয়ে এই রিপোর্ট খারিজ করেনি। ফলে আমরা ধরে নিতেই পারি যে ফোনের পিছনে খরচ বাড়ার জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে। আর যেটা সূত্রের খবর। টেলিকম সংস্থাগুলো গড়ে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আয় বাড়াতে চায়। সেজন্য কম টাকার প্যাকগুলো আস্তে আস্তে তুলে দেওয়া হতে পারে। বাড়তে পারে বেশি পরিষেবা-সহ বেশি টাকার প্যাক। টেলিকম ইন্ডাস্ট্রির বিশেষজ্ঞরা বলছেন মানুষ এখন হাই স্পিড ইন্টারনেট চাইছেন। সেটা তাঁদের কাছে প্রায়োরিটি। বাড়তি নেট স্পিডের জন্য বাড়তি টাকা খরচ করতে অনেকেই পিছপা নন। ফলে নেট স্পিড ঠিক থাকলে, ট্যারিফ বাড়লেও গ্রাহক অন্য কোথাও যাবেন না। তাই টেলিকম সংস্থাগুলোর কাছে দাম বাড়ানোর সুযোগ আছে।

বিশৃঙ্খলা। মিসরুল। এলোমেলো করে দে মা, লুটেপুটে খাই। এসব দেখলে দেখবেন কিছু মানুষ এখনও বলেন ব্রিটিশরা যদি থাকত। তাহলে এসব হত না। এমন ভাবনা কতটা অবাস্তব। কতটা ভুল। এর মধ্যে কতটা কলোনিয়াল হ্যাংওভার আছে। এসব জটিলতায় না গিয়ে যদি সহজ করে ভাবেন। তাহলে দেখবেন ধৈর্য্যের সীমা যখন ছাড়িয়ে যায়। তখন সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে এই ধরনের কথা বলেন। তবে এগুলো হয়ত বিচ্ছিন্ন মন্তব্য নয়। বহু মানুষই মনে মনে এমন ধারণা পোষণ করেন। মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষা অন্তত তেমনই বলছে। গণতন্ত্র। সামরিক শাসন। একনায়কতন্ত্র। এইরকম নানা ধরনের সিস্টেম চালু রয়েছে। এমন চব্বিশটা দেশ বেছে নিয়ে তারা সমীক্ষা চালায়। একনায়কতন্ত্র ও মিলিটারি রুল নিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রশ্ন করা হয়। শুনলে হয়ত অবাক হবেন চব্বিশটা দেশের মধ্যে ভারতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ অটোক্র্যাসি ও মিলিটারি রুলের পক্ষে মত দিয়েছেন। অটোক্র্যাসি বা একনায়কতন্ত্র বলতে এমন একটা সিস্টেমের কথা বলা হয়। যেখানে পার্লামেন্ট ও কোর্টের বাধা ছাড়াই একজন শক্তিশালী নেতানেত্রী দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবেন। ৬৭% ভারতীয় এমন ব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়েছেন। সবচেয়ে কম সুইডেনের ৫% মানুষ একনায়কতন্ত্রের পক্ষে তাঁদের সমর্থন জানিয়েছেন। সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতীয়রা মনে করছেন একনায়ক রাজনীতিবিদের চেয়েও একজন সেনাশাসক আরও ভালো দেশ চালাবেন। তাই ৭২% ভারতীয় সামরিক শাসনের পক্ষে মত দিয়েছেন। এখানেও সবচেয়ে কম সুইডেনের ৫% মানুষ মিলিটারি রুলের পক্ষে তাঁদের সমর্থন জানিয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের বাসিন্দাদের মনের মধ্যে এই। সব শুনে এমন যদি ভাবেন তাহলে বলি। পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষা বলছে যে যেসব দেশে মানুষের
আয় ও শিক্ষা কম। সেসব দেশেই অটোক্র্যাসি ও মিলিটারি রুলের পক্ষে পাল্লাভারি। আর উল্টোটা হলে উল্টোটা। যেমন সুইডেন। নেদারল্যান্ডস। আমেরিকা। ফ্রান্স। জার্মানির মানুষ কোনও অবস্থাতেই অটোক্র্যাসি বা মিলিটারি রুল চাইছেন না। আবার ভারত। কেনিয়া। নাইজেরিয়া। ইন্দোনেশিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ কড়া শাসন চাইছেন। আমার মনে হয় কী ক্যাপিটালিজম। কী কমিউনিজম। কোনও ইজমই শেষপর্যন্ত গরিব মানুষের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে পারেনি। আর তাই হতাশ হয়ে দেশে দেশে সাধারণ মানুষের একাংশ কখনও ক্যু সমর্থন করেছেন। কখনও বা রেসিস্ট ফার রাইট পার্টির দিকে ঝুঁকেছেন। পরে যখন ভুল ভেঙেছে। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারে যে সমীক্ষার কথা আপনারা শুনলেন সেটা লোকসভা নির্বাচনের আগে করা হয়। নরেন্দ্র মোদীকে শক্তিশালী নেতা হিসাবে গেরুয়া শিবির যেভাবে প্রজেক্ট করে। সাধারণ মানুষের মনে তার প্রভাবের সঙ্গে এই সমীক্ষার ফলাফলের কোনও ডিরেক্ট কো-রিলেশন আছে কি না তা বলা কঠিন। তবে জেল থেকে বেরিয়েই শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রীর রিটায়ারমেন্টের কথা মনে করিয়ে চাঞ্চল্য জাগিয়ে তুলেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

জুনের ৪ তারিখ লোকসভা ভোটের ফল গণনা। ওইদিন দুনিয়ার অন্য এক প্রান্তে আরও একটা ঘটনা ঘটবে। লন্ডনের নিলাম ঘরে নিলামে উঠবে বিপুল পরিমাণ লোহার ছাঁট। স্ট্রেট কাটে এই খবর দিচ্ছি কেন? দিচ্ছি তার কারণ ওই লোহার ছাঁটের পিছনে রয়েছে দারুণ ইস্টারেস্টিং একটা গল্প। সেই কারণেই ক্রিস্টির মতো নামী সংস্থা ওই ছাঁটের নিলাম করছে। ওগুলো আসলে যুদ্ধজাহাজের অবশেষ। ১৭টা সাবমেরিন আর একটা করে ফ্রিগেট, ক্রজার ও ডেস্ট্রয়ার। ১৯৮৯ সালে সেগুলো হাতে পেয়েছিল পেপসি। সেই সময় যুদ্ধজাহাজের বিচারে বলতে পারেন পেপসিই হয়ে যায় দুনিয়ার অন্যতম শক্তিশালী নৌ-বাহিনী। এর অর্ধেক ক্ষমতাও ছিল না পাক নৌসেনার। মানে ব্যাপারটা এরকম ভাবতে পারেন যে পেপসি যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নৌ-যুদ্ধে নামত। তাহলে আমাদের প্রতিবেশীর হার অবধারিত ছিল। এবার প্রশ্ন হলো মার্কিন ঠাণ্ডা পানীয় সংস্থার হাতে এসব এল কী করে? এটাই সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং। ষাটের দশক থেকে পেপসির স্বাদে মজেছিল রুশ জনতা। পেপসি কিনতে রুবলের বদলে আমেরিকায় ভদকা পাঠাত রাশিয়া। অনেকটা বিনিময় প্রথার মতো। ১৯৮৬ সালে নতুন করে পেপসি আমদানির চুক্তি যখন হল, তখন রাশিয়ায় আর্থিক সঙ্কট চেপে বসেছে। আর দেশে ভদকার উত্‍পাদনও তলানিতে। তাও ঠাণ্ডা পানীয় সরবরাহ বন্ধ রাখেনি পেপসি। ১৯৮৮ সালে পেপসির দাম বাবদ যে বিল রুশ বাণিজ্যমন্ত্রকে এল, তা দেখে রুশ কর্তৃপক্ষের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার অবস্থা। বকেয়া বাবদ সাড়ে সাত লক্ষ মার্কিন ডলার মেটাতে হত রাশিয়াকে। ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা দেশটার কোষাগার তখন খালি হয়ে আসছে। তাই টাকার বদলে পেপসির হাতে নিজেদের যুদ্ধজাহাজ তুলে দেয় মস্কো। বলা হয় আমাদের কাছে আর কিছু নেই। জাহাজগুলো দিলাম। এগুলো বিক্রি করে আপনারা টাকা তুলে নিন। টাকা পাওয়ার আশা নেই বুঝে শেষপর্যন্ত জাহাজগুলোই নিয়ে নেয় পেপসি। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও তাঁরা অধিকাংশ জাহাজই বিক্রি করতে পারেনি। কারণ এভাবে তো কোনও দেশই কর্পোরেট সংস্থার থেকে অস্ত্র কেনে না। এসব ক্ষেত্রে পেপসির অভিজ্ঞতাও ছিল না। সাত বছর পর সেসব স্ক্র্যাপ মেটাল হিসাবে বিক্রি করে দেয় তারা। ওই সময় যেটুকু বেঁচে গিয়েছিল, সেটাই এখন নিলামে উঠছে।

Next Video