AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Mumbai Train Blast: ট্রেন উড়ল, মানুষ মরল…কিন্তু বিচারব্যবস্থায় নেই 'প্রমাণ'!

Mumbai Train Blast: ট্রেন উড়ল, মানুষ মরল…কিন্তু বিচারব্যবস্থায় নেই ‘প্রমাণ’!

TV9 Bangla Digital

| Edited By: সোমনাথ মিত্র

Updated on: Jul 24, 2025 | 9:40 PM

Share

নো ওয়ান কিলড জেসিকা। ২০০৬ সালে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবরের হেডলাইনটা নিশ্চয়ই মনে আছে? দিল্লির মডেল জেসিকা লাল-কে খুনের মামলায় ২০০৬ সালে অভিযুক্তদের নির্দোষ ঘোষণা করেছিল ট্রায়াল কোর্ট। সেই খবরের হেডলাইন। ১৯ বছর পর বম্বে হাইকোর্টের ২ বিচারপতিও নিজেদের রায়ে লিখলেন ইট সিমস দেয়ার ওয়াজ নো ব্লাস্ট। মনে হচ্ছে, কোনও বিস্ফোরণই হয়নি। ২০০৬ সালের ১১ […]

নো ওয়ান কিলড জেসিকা। ২০০৬ সালে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবরের হেডলাইনটা নিশ্চয়ই মনে আছে? দিল্লির মডেল জেসিকা লাল-কে খুনের মামলায় ২০০৬ সালে অভিযুক্তদের নির্দোষ ঘোষণা করেছিল ট্রায়াল কোর্ট। সেই খবরের হেডলাইন। ১৯ বছর পর বম্বে হাইকোর্টের ২ বিচারপতিও নিজেদের রায়ে লিখলেন ইট সিমস দেয়ার ওয়াজ নো ব্লাস্ট। মনে হচ্ছে, কোনও বিস্ফোরণই হয়নি। ২০০৬ সালের ১১ জুলাই বিস্ফোরণে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল মুম্বইয়ের লাইফলাইন, লোকাল ট্রেন। অফিস টাইমে সন্ধে সাড়ে ৬টার আগে-পরে ১১ মিনিটের মধ্যে ৭টা ট্রেনে ৭টা বিস্ফোরণ। নিহত ২০৯। আহত ৭১৪। ১৯৯৩ ও ২০০৮-এর মুম্বই হামলার পাশাপাশিই বাণিজ্যনগরীর বুকে অন্যতম বড় জঙ্গি হামলা। অথচ বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি অনিল কিলোর এবং বিচারপতি শ্যাম চন্দকের বেঞ্চকে বলতে হল, ইট সিমস দেয়ার ওয়াজ নো ব্লাস্ট। আর যেখানে বিস্ফোরণই হয়নি, সেখানে বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের শাস্তিই বা হবে কীভাবে? তাই বারো জন অভিযুক্তই বেকসুর খালাস।

২০১৫ সালে এই ১২ জনের মধ্যে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জনকে যাবজ্জীবন জেলে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সন্ত্রাসদমন আদালত। হাইকোর্টে এসে সেই রায় আমূল পাল্টে গেল কীভাবে? মনে নানারকম প্রশ্ন ভিড় করেছিল। রায়ের কপি পড়তে গিয়ে চমকে উঠলাম। নাশকতার পরই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছিল মহারাষ্ট্র পুলিশের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড। দেশের অন্যতম দক্ষ পুলিশ বাহিনী হল এই মহারাষ্ট্র এটিএস। সেই এটিএসের তদন্ত নিয়েই বম্বে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, তদন্ত হয়নি। ছেলেখেলা হয়েছে। প্রথমে পুলিশ গল্প সাজিয়েছে। পরে, সেটা প্রমাণ করতে জোড়াতালি দেওয়া এভিডেন্স শো করেছে।

কোথায়, কীভাবে তদন্তে গাফিলতি হয়েছে? বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ – প্রথমত, বিস্ফোরণে মূল অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা এবং গ্রেফতারিতে ব্যর্থ পুলিশ। সেই ব্যর্থতা ঢাকতে এমন কাউকে মূল অভিযুক্ত হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে যাকে মোটেও মূল অভিযুক্ত বলা যায় না। দ্বিতীয়ত, সাক্ষীদের বয়ান ও তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ আছে। সরকারি আইনজীবী আদালতের প্রশ্ন ও সংশয়ের জবাব দিতে পারেননি। যেভাবে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছেন, তা সাজানো বলেই মনে হয়েছে। তৃতীয়ত, অভিযুক্তরা দোষ স্বীকার করে যে জবানবন্দি দিয়েছিল, তা জোর করে আদায় করা বলে আদালতের মনে হয়েছে। কেননা, একটা ঘটনায় বিভিন্ন অভিযুক্ত আলাদা-আলাদা তথ্য দিয়েছেন। তদন্তকারী অফিসাররা সেগুলো যাচাই করে মিলিয়ে দেখার চেষ্টাও করেননি। তাঁদের এটাও মাথায় আসেনি যে এই অসঙ্গতি আদালতের সামনে ধরা পড়ে যাবে। চার নম্বর পয়েন্টটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিচারপতিরা লিখেছেন, নাশকতার ১০০ দিন পর এক প্রত্যক্ষদর্শী ট্যাক্সি ড্রাইভার দুই অভিযুক্তকে নিয়ে পুলিশের কাছে জবাববন্দি দিয়েছেন। একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার ১০০ দিন পরেও দুজন যাত্রীর মুখ এত নিখুঁতভাবে মনে রাখতে পারেন দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি। এরকম স্মৃতিশক্তি মানুষের হতে পারে না। এক পুলিশই এটা করে দেখাতে পারে। আর পাঁচ নম্বর, ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে লিখেছে বিস্ফোরক জোগাড় করা থেকে বোমা তৈরি। ট্রেনে বোমা রাখা থেকে কীভাবে বোমা নিয়ে স্টেশনে ঢুকেছিল অভিযুক্তরা? কোনও প্রশ্নেরই বিশ্বাসযোগ্য উত্তর দিতে পারেনি অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড।

আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, বিস্ফোরণের পর উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন জিনিসপত্র, আরডিএক্স স্টিক, গ্রেনেড, বিস্ফোরক ভরা প্রেশার কুকার – কোনওকিছুই নিয়ম মেনে সিল করা ও প্রিজার্ভ করা হয়নি। হাইকোর্ট এটিএসের এসব গাফিলতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার পর অভিযোগের আঙুল এখন মহারাষ্ট্র পুলিশ এবং দেবেন্দ্র ফড়নবিশ প্রশাসনের দিকে। সারা দেশের পুলিশই বম্বে হাইকোর্টের এই রায়কে আই ওপেনার হিসাবে দেখুক। প্রশিকিউশন যদি মামলা দাঁড় করাতেই না পারে, তাহলে আদালত থাকলেও সাধারণ মানুষ বিচার পাবেন না।