RG Kar Doctor Murder Issue: স্লোগানে কাঁপছে রাজপথ, সরকারের চোখে মুখে বাংলাদেশ আতঙ্ক?
স্লোগানে স্লোগানে ভেঙে যাচ্ছে রাতের নিস্তব্ধতা। রাজপথ দখল করেছেন যারা, তাদের পরিচয় নেই। তাদের পায়ের আওয়াজে কেঁপে উঠছিল শাসকের সিংহাসন। তাঁদের দাবি জাস্টিস। কিন্তু শাসকের চোখে প্রতিবাদের সংজ্ঞাটা ঠিক কী? কীভাবে বারবার জনগণের আন্দোলনে কুঁকড়ে গেছে শাসক? বিশ্বের ইতিহাস থেকে রাজ্যের আন্দোলন- কতটা রক্তাক্ত এই লম্বা ইতিহাস?
একটা মেয়ে স্বপ্নের উড়ান দিয়েছিল। একটা দুঃস্বপ্নের রাত। তছনছ করে দিল সবকিছু। ফুটবল বাঙালির প্রতিবাদের স্টেটমেন্ট। তিলোত্তমার জন্য বিচার চেয়ে আওয়াজ তুললেন দুই প্রধানের সমর্থকরা। ১৬৩ ধারার অজুহাতে নামল র্যাফ। চলল লাঠি। তবুও প্রতিবাদ দমন করা গেল না। আন্দোলনের আগুন কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ময়দান ঘুরে অফিসপাড়ার আনাচে কানাচে। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ। ছোট থেকে বড়ো। রাজ্য থেকে দেশ। মিছিলে হাঁটছেন। তাদের মধ্যে বিরোধী ষড়যন্ত্র দেখতে পেলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান? গণ অভ্যুত্থানের ভয় পাচ্ছে সরকার?
৯ তারিখ তিলোত্তমার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা। তারপর থেকেই প্রশাসনের ভূমিকায় হাজারো প্রশ্ন। একটা মৃত্যু ঘিরে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়ছে। একটা ফুলকি, এমনই একটা মৃত্যু পাল্টে দিয়েছে বিশ্বের ইতিহাসও। ১২ নভেম্বর, ১৯৭৭। নিরাপত্তা এবং পুলিশের বয়ানের প্রতিবাদে সেদিন রাত দখল করেছিল মেয়েরা। ইতিহাসের প্রথম রিক্লেইম দা নাইট। নারীমুক্তির সংগ্রামের একটা ঐতিহাসিক মাইলস্টোন। এক হকারের আত্মহত্যা জন্ম দিল বসন্তের। আরব স্প্রিং। তিউনিসিয়ার শাসক বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ল আরব দুনিয়ায়। প্রতিবাদের আগুনে ঝলসে গেল বাংলাদেশের শাসকের মসনদও। সাধারণ মানুষই প্রতিরোধের দুর্গ গড়ে ভেঙে দিয়েছে শাসকের গদি।
আরজি করে পড়ুয়া-ডাক্তারদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান। তাতেও রনংদেহী পুলিশ। প্রতিবারের মত শাসকের অস্ত্র হল প্রশাসন। কণ্ঠরোধই কী শাসকের বেঁচে থাকার উপায়? এর আগেও নিজের ইমেইল থেকে একটা কার্টুন ফরওয়ার্ড করার পরিণতি কী হতে পারে তা বুঝেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক। ২০১২ থেকে ২০২৪। কিছুই কী পাল্টালো না? শাসকের ভয় ! যদি প্রতিবাদ হয়! নারী নির্যাতন ও তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এরাজ্যে নতুন নয়। নতুন নয় শাসকের প্রতিশোধও। মিছিলের হাজার হাজার মশাল, মোমবাতির আলোয় কাটবে অন্ধকার? নাকি ধামাচাপা পড়ে যাবে সব অপরাধ? কী রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট? এবার কি বন্ধ হবে কণ্ঠরোধ?
শাসকদল ও পথে নেমেছে। সেই মিছিলেও শাসকপন্থীর জমায়েত। প্রশাসন আজ বিচার চাইছেন কার কাছে? সুপ্রিম কোর্ট তো নির্দেশ দিল। কিন্তু, প্রশাসনের কানে ঢুকলো কী? তিলোত্তমার উপর কেন নৃশংস অত্যাচার? কেন খুন? আচমকাই নাকি সবটাই ষড়যন্ত্র? কেউ হাঁটছেন, কেউ গাইছেন, কেউ আবার প্রতিবাদে ফেটে পড়ছেন। তিলোত্তমার বিচার চাই। বলছে মানুষ। বিচ্ছিন্ন মিছিলগুলো এখনও অবধি একজায়গায় মিলিত হয়নি। কিন্তু যদি মিলে যায়? যদি ভাঙে ধৈর্যের বাঁধ? যদি হটাৎ আসে স্লোগানের সুনামি? সামাল দিতে পারবে রাষ্ট্র?