Nuclear Treaty Dismantle: ভদকা আর হুইস্কির টোস্ট আজ ইতিহাস! পরমাণু চুক্তি ভেঙে বেরোল রাশিয়া
১৯৮৭ সালের ৮ ডিসেম্বর হোয়াইট হাউসে পাশাপাশি বসে একটা চুক্তিতে সই করছেন তত্কালিন রুশ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট মিখায়েল গর্বাচেভ এবং রোনাল্ড রেগন। ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্স ট্রিটি, বা IRNFT. ছোট ও মাঝারি পাল্লার নিউক্লিয়ার মিসাইল সহ অস্ত্রসম্ভার ধ্বংস করতে এই চুক্তি করেছিল দুনিয়ার দুই মহাশক্তিধর। চুক্তি সইয়ের ঠিক আগে ঘটেছিল একটা মজার ঘটনাও। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের […]
১৯৮৭ সালের ৮ ডিসেম্বর হোয়াইট হাউসে পাশাপাশি বসে একটা চুক্তিতে সই করছেন তত্কালিন রুশ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট মিখায়েল গর্বাচেভ এবং রোনাল্ড রেগন। ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্স ট্রিটি, বা IRNFT. ছোট ও মাঝারি পাল্লার নিউক্লিয়ার মিসাইল সহ অস্ত্রসম্ভার ধ্বংস করতে এই চুক্তি করেছিল দুনিয়ার দুই মহাশক্তিধর। চুক্তি সইয়ের ঠিক আগে ঘটেছিল একটা মজার ঘটনাও। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের ফটো সেশনে কোন দেশের পানীয় নিয়ে টোস্ট করা হবে? তা নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একমত হতে পারেনি দুই দেশ। শেষে রুশ প্রেসিডেন্ট ভদকা হাতে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট হুইস্কি হাতে টোস্ট করেন। ভোদকা রাশিয়ার আর হুইস্কি মার্কিন সংস্কৃতির প্রতীক।
৩৮ বছর পর সেই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে গেল রাশিয়া। রুশ বিদেশমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানাল, দুনিয়ার পরিস্থিতি যে ভাবে বদলাচ্ছে এবং রাশিয়ার উপর হুমকি আসছে, তাতে ১৯৮৭ সালের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির আর কোনও গুরুত্ব নেই বলেই স্পষ্ট হচ্ছে। রাশিয়া, তাই এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। এরপরই এক্স হ্যান্ডেলে প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের ঘোষণা,’পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি বলে আর কিছু নেই। এটাই বাস্তব। এবং গোটা পৃথিবীকে এটা মেনে নিতে হবে।’
গত কয়েকদিনে রুশ-মার্কিন সম্পর্ক যেভাবে তলানিতে ঠেকেছে, তাতে রাশিয়ার এই সিদ্ধান্ত হয়ত প্রত্যাশিতই ছিল। তবে এটাও ঠিক যে বহুদিন ধরেই ১৯৮৭ সালের এই চুক্তি ছেঁড়া কাগজে পরিণত হয়েছিল। এবং এই দেশের প্রেসিডেন্টরাই দায়িত্ব নিয়ে তা করেছেন। এই চুক্তিতে ঠিক হয়েছিল, দুই দেশ তাদের ভাঁড়ারে থাকা স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার নিউক্লিয়ার মিসাইল ধ্বংস করবে। ৫০০ কিলোমিটার থেকে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার সমস্ত মিসাইল নষ্ট করার পর নতুন করে এই পাল্লার কোনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না। করলেও সেটা কখনই নির্দিষ্ট সংখ্যার বাইরে নয়। চুক্তির পরে পরমাণু অস্ত্রবাহী মিসাইল ধ্বংস হয়নি, এমনটা নয়। দুই দেশ মিলে ২ হাজার ৬৯২টি অস্ত্র হয় সমুদ্রে ফেলে দেয়, নয়তো জনবিরল জায়গায় পুঁতে দিয়েছিল। ২০১৭ সাল পর্যন্ত এনিয়ে দু-দেশ একে অন্যের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগও করেনি। ২০১৭ সালে আসরে নামেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া চুক্তি ভেঙে 9M729 মিসাইল তৈরি করেছে অভিযোগ তুলে চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তারপর থেকে দুই দেশই বেশ কয়েকটি স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার নিউক্লিয়ার মিসাইল তৈরি করেছে বলে অভিযোগ। এবার খোলাখুলি নিউক্লিয়ার মিসাইল তৈরির পথই খুলে গেল।

