Heart Transplant: শিশুর শরীরে মৃতের হৃৎপিণ্ড! অপারেশন সফল
শিশুর দেহে বুড়ো হার্ট, অপারেশন টেবিলে ইতিহাস। হ্যাঁ, অপারেশন টেবিলে ইতিহাসই তৈরি হল বটে। এমনই এক ঘটনা যা খুব তাড়াতাড়ি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রচলিত সব ধ্যান-ধারণা পালটে দিতে সক্ষম। এক মৃত প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হৃদপিন্ডকে বাঁচিয়ে তুলে এক খুদের শরীরে প্রতিস্থাপন করলেন একদল চিকিত্সক। বাঁচিয়ে তোলা সেই হার্ট খুদের শরীরে ঠিকঠাক কাজ করছে এবং সেই খুদেও দিব্যি […]
শিশুর দেহে বুড়ো হার্ট, অপারেশন টেবিলে ইতিহাস। হ্যাঁ, অপারেশন টেবিলে ইতিহাসই তৈরি হল বটে। এমনই এক ঘটনা যা খুব তাড়াতাড়ি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রচলিত সব ধ্যান-ধারণা পালটে দিতে সক্ষম। এক মৃত প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হৃদপিন্ডকে বাঁচিয়ে তুলে এক খুদের শরীরে প্রতিস্থাপন করলেন একদল চিকিত্সক। বাঁচিয়ে তোলা সেই হার্ট খুদের শরীরে ঠিকঠাক কাজ করছে এবং সেই খুদেও দিব্যি সুস্থ রয়েছে। চিকিত্সা গবেষণার ইতিহাসে এটি এক অন্যতম যুগান্তকারী ঘটনা। চিকিত্সকরা মনে করছেন, নতুন জীবন পাওয়া হার্টটি আস্তে আস্তে শিশুর শরীরের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। তাই শিশুটির সেরে ওঠা নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা নেই।
কিন্তু মাস ছয়েক আগেও কিন্তু পরিস্থিতি এরকম ছিল না। গত ফেব্রুয়ারিতে হার্টে গুরুতর সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় তিন মাসের এক সদ্যোজাত। শিশুটির হার্টে একাধিক সমস্যা ছিল। অপারেশন করে শিশুটিকে সুস্থ করা সম্ভব ছিল না। তাই আমেরিকার ডিউক ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের চিকিত্সকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কোনও শিশুর হার্ট প্রতিস্থাপন করে ৩ মাসের ওই খুদেকে সুস্থ করার চেষ্টা হবে। কিন্ত সেরকম কোনও হার্ট জোগাড় করা যায়নি। অন্যদিকে শিশুটির অবস্থাও খারাপ হচ্ছিল। সেই সময় চিকিত্সা সিদ্ধান্ত নেন, আর অপেক্ষা করা যাবে না। মৃত মানুষের শরীর থেকে হার্ট সংগ্রহ করে সদ্যোজাতের শরীরে প্রতিস্থাপন করতে হবে। চিকিত্সকরা স্বভাবতই জানতেন না, তিন মাসের শিশুর শরীর ওই হার্ট নিতে পারবে কীনা! কিন্তু তাঁদের সামনে আর কোনও বিকল্প ছিল না। তাঁরা যে পদ্ধতি প্রয়োগ করেন, তার পোশাকি নাম রিসাসিটেশন অফ হিউম্যান অর্গ্যান। অপারেশন থিয়েটারের টেবিলে বিশেষ পদ্ধতিতে মৃত হার্টকে পুনরুজ্জীবিত করে শিশুর শরীরে বসানো হয়। চিকিত্সক দলের সদস্য, ডঃ অ্যারন উইলিয়াম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, বাঁচিয়ে তোলা হার্টটিকে এমন একটা শরীরে বসানো হয়, যাদের মধ্যে বয়সের ব্যবধান অনেকটাই। তাই প্রথম ১৪ টা দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওই চিকিত্সক বলছেন, ‘চার সপ্তাহ পর আমরা বুঝে যাই, আমাদের টিম ইতিহাস তৈরি করেছে। চিকিত্সা জগতে কখনও যা হয়নি, সেটা করে দেখিয়েছে।’
ভবিষ্যতে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে ডিউক ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের এই সাফল্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ? বিজ্ঞানীদের দাবি, গোটা দুনিয়ায় বিশেষত হার্ট প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হল। এত পদ্ধতি প্রয়োগ করে ভবিষ্যতে বহু শিশুর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে। কীভাবে? শহরের এক নামী কার্ডিওলজিস্ট বিষয়টা বুঝিয়ে বললেন। সাধারণত মস্তিষ্কের কাজ বন্ধ হলে ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। যে সব অঙ্গ তখনও জীবিত থাকে সেসব সংগ্রহ করে সংরক্ষণ ও প্রতিস্থাপন করা হয়। ডিউক মেডিক্যাল সেন্টারে যে হার্ট প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সেটিরও মৃত্যু হয়েছিল। তাঁকে বাঁচিয়ে তুলে অনেক কম বয়সী এক শরীরে বসানো হয়েছে। এই ঘটনা বুঝিয়ে দিল, সুস্থ হার্টের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার প্রয়োজন নেই। ‘মৃত হার্ট’ও অসাধ্যসাধন করতে পারে।

