
আসানসোল: সুপ্রিম ‘খোঁচায়’ রাজ্যজুড়ে চাকরি গিয়েছে ২৫৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীর। তারপর থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা। যোগ্য কারা? অযোগ্যই বা কে? প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন চাকরিহারা। দাবি তুলেছেন পদমর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার।
একদিকে যখন তাপ চড়ছে চাকরিহারাদের আন্দোলনের। সেই সময়ই অন্যদিকে ‘নিস্তেজ’ হয়ে পড়ছে রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলি। পড়ুয়া আছে, রয়েছে প্রধান শিক্ষকও। কিন্তু নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী। ফলত, সব দায়িত্বই এখন পড়েছে প্রধান শিক্ষকের কাঁধে। এমনকি, স্কুলের ঘণ্টা বাজানো থেকে মিড ডে মিলের বাজার করা শিক্ষা কর্মীর ভাগের কাজটা করতে হচ্ছে প্রধান শিক্ষককে।
ঘটনা আসানসোলের বারাবনি ব্লকের দোমোহানি কেলেজোড়া হাইস্কুলের। সেখানে পড়ুয়ার মোট সংখ্যা ১৭০০। শিক্ষক ছিলেন ২২ জন। কিন্তু সুপ্রিম-রায়ে আপাতত চাকরি গিয়ে তা নেমে এসেছে ১৮তে। যার জেরে ভালই প্রভাব পড়েছে পড়াশোনায়। কিন্তু তার চেয়েও বেশি প্রভাব পড়েছে শিক্ষা কর্মীদের চলে যাওয়ায়।
সেই স্কুলে শিক্ষা কর্মীর সংখ্যা ছিল ৪। যার মধ্যে সুপ্রিম রায়ে স্কুলে আসা ‘বন্ধ হয়েছে’ ২ জনের। বাকিদের একজন আবার দিন কয়েক আগে অবসর গ্রহণ করেছেন। অন্যজন, কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত। সুতরাং, শিক্ষাকর্মী ছাড়াই চলছে স্কুল। কিন্তু যাদের হাতে গোটা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব, তাদের অনুপস্থিতিতে সেই বকেয়া কাজগুলি করছে কে? জানা গিয়েছে, সকাল বেলা স্কুলের তালা খোলা থেকে দিনশেষে জানলা দরজা বন্ধ করে আবার তালা ঝোলানো পর্যন্ত সব দায়িত্ব খোদ প্রধান শিক্ষক মৃনালজোত্যি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাঁধে।
এখন আবার পরীক্ষার মরসুম। এই আবহেই নেই শিক্ষা কর্মীরা। ফলত, ক্লাসে ক্লাসে খাতা পত্র পৌঁছানোর কাজ করতে হচ্ছে প্রধান শিক্ষককেই। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরা সাহায্য করছেন ঠিকই। কিন্তু তারপরেও বেশ কিছু কাজ পরে থাকে, যা গ্রুপ ডি কর্মীরা করেন। কিন্তু তারা এখন না থাকায়, সেই কাজ আমাকেই করতে হচ্ছে। জানি না শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে কতটা সুরাহা হবে। তবে সেই সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ভোগ করছি আমরাই।’
এরপর স্কুলে শিক্ষক বাতিলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দু’জন বিজ্ঞান এবং দু’জন কলা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। এই চারজন শিক্ষকই দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক ছিলেন। এর ফলে আগামী দিনে দ্বাদশ শ্রেণীর এই বিভাগ গুলো কীভাবে পড়ানো হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’